Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

আউশের বাম্পার ফলন : কৃষকের ঘরে আনন্দ

| প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম) থেকে শেখ সালাউদ্দিন : চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে সোনালি ধান আউশের বিভিন্ন জাতের ধান কাটা ও মাড়াইয়ের উৎসবে মেতেছেন উপজেলার ২৩ হাজারেরও বেশি কৃষি পরিবার। চলতি বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে অবশেষে আউশের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে কৃষক পরিবার। ফলে উৎপাদন ভাল হওয়াতে একদিকে যেমন কৃষক পরিবারও খুশি, অন্যদিকে উপজেলা কৃষি অফিস ও বিভিন্ন ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারাও আউশ ধান উৎপাদনে বেশ মুগ্ধ হয়েছেন। এদিকে সীতাকুন্ড ২নং বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াইল এলাকার কৃষক মোঃ মান্নান জানান, প্রতিবছর ধানের মৌসুমগুলোতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করে আসছেন। তারই ধারাবাহীকতায় এ বছরেও প্রায় দেড় একর জমিতে আউশের বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ করেছেন। তিনি বলেন এতে বিভিন্ন বাবদ খরচ পরেছে প্রায় ৩৮ হাজার এবং ধান বিক্রি করেছেন প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তার জমিগুলো একটু উচুঁ স্থানে থাকাতে চলতি মৌসুমে একটানা বৃষ্টিতে ধানের তেমন ক্ষতি হয়নি। ফলে উচ্চ ফলনশীল নেরিকাসহ আউশের বিভিন্ন জাতের ধানের উৎপাদন হয়েছে গেল বছর থেকে অনেকগুণ বেশি। এ বøকে দায়ীত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পিপাস কান্তি চৌধুরী জানান, চলতি বছর আউশের ফলন অনেক ভাল হয়েছে। এখানে ৩শ’৬০হেক্টর জমিতে প্রায় ১২শ’কৃষক পরিবার আউশের বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ করেছেন। এ অঞ্চলের সাগরের সাথে সংযুক্ত খালগুলো মাটিতে অনেকটা ভরাট হয়ে গেছে। ফলে বিভিন্ন খাল দিয়ে পানি নিস্কাশন হচ্ছেনা। সে কারনে মুলত বর্ষার সময় কৃষকদের জমিগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিহয়। এতেকরে আউশ মৌসুমে একটানা বৃষ্টিতে সাগরের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকার নিচু জায়গায় পানি জমে আউশ ক্ষেতের ক্ষতি হয়ে থাকে। অন্যদিকে বাড়বকুন্ড ইউনিয়নের মধ্যম মাহমুদাবাদ গ্রামের মোস্তফা বাড়ির কৃষক মোঃ আফসার বলেন, চলতি মৌসুমের আষাঢ় মাসের শেষে জমিতে বৃষ্টির পানি জমার সাথে সাথে ১ একর জমিতে হাইব্রীড ধান চাষ করেন তিনি। এতে শ্রমিক ও অন্যান্য চাষে তার খরচ পড়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। প্রতিমন ধান ৮৮০ টাকা হিসেবে ৪০ হাজার টাকার ধান বিক্রি করা হয়। তবে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রীড ধান হওয়ায় একটানা বৃষ্টিতেও ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। সীতাকুন্ড পৌরসভা এলাকায় দায়ীত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শাহ্ আলম বলেন পৌরসভাস্থ এলাকার পন্থিছিলা, শেখপাড়া, নলুয়া পাড়া, মধ্যম মহাদেবপুর, ইকো পার্কসহ বিভিন্ন পৌরসভা এলাকায় আউশের বিভিন্ন জাতের চাষ হয়েছে। ধানের উৎপাদন আশানুরুপ হওয়াতে এ অঞ্চলের কৃষকরাও অনেক খুসি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার সুশান্ত সাহা বলেন, চলতি বছরে আউশের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬ হাজার ৮শ’ হেক্টর। আর অর্জিত হয়েছে ৭ হাজার ২শ’৫০ হেক্টর। যা গত বছরের তোলনায় ৫শ’ হেক্টর বেশি। যার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও আউশ উৎপাদনে কোনো প্রভাব পড়েনি এবং রোগ বালাই দেখা যায়নি। মৌসুমে আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি বছরে অতি বৃষ্টিতে সাড়ে ৪শ’ হেক্টর জমির আউশ ধানের ক্ষতি হলেও ধানের উৎপাদন বেশি হওয়ায় তা পুষিয়ে গেছে। এ বছর ২৩ হাজার ১শ’কৃষক পরিবার আউশের বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ করেছেন। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল উপশী চাষ হয়েছে ৪ হাজার ২শ’ ৫০ হেক্টর, আর হাইব্রীড চাষ হয়েছে ৩ হাজার হেক্টরে। উপশী ধানের প্রতি হেক্টরে চাল উৎপাদন হবে ২.৮মেট্রিক টন ও হাইব্রীড ৪.১ মেট্রিক টন। তাই সোনালি ধান আউশ অনেক উৎসাহে তারা ঘরে তুলবেন এমন প্রত্যাশা প্রান্তিক কৃষক পরিবারের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ