Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বাজার বিপদ কাটার লক্ষণ নেই স্বল্প আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস

| প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বিশেষ সংবাদদাতা : চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব জিনিসের মূল্য এতটাই বৃদ্ধি যে সীমিত ও স্বল্প আয়ের মানুষের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ব্যবধানটা ক্রমেই বাড়ছে। এতে বাড়ছে বাজার বিপদ। অথচ দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার লাগাম টানার ব্যবস্থা একেবারেই ঢিলেঢালা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বড়জোর ২/৩দিন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সব জেলা প্রশাসন নিজ নিজ এলাকার মজুদদার ও রাইস মিলগুলোতে অভিযানের অভিযানের প্রস্ততি নেয়। খাদ্য অধিদপ্তর থেকে তালিকাও সংগ্রহ করে কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলায় নামকাওয়াস্তে অভিযান চলে। কিন্তু চালের পাইকারী, আড়তদার ও মজুদদারদের গায়ে আঁচড় লাগেনি।
যশোর, খুলনা, মাগুরা, সাতক্ষীরা, চুযাডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাজারে গতকাল খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে চালের মূল্য দিন দিন বাড়ছেই। এ অঞ্চলের একজন বাজার কর্মকর্তা জানান, গত এক পক্ষকালের ব্যবধানে এই অঞ্চলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধিহার রীতিমতো অস্বাভাবিক। চাল, আটার মূল্য কমানো যাচ্ছে না খোলা বাজারে আতপ চাল বিক্রি করেও। দেশের মোট চাহিদার ৬৫ভাগ সবজি উৎপাদন রেকর্ড সৃষ্টির এলাকা যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণহীন। সবজির বাজারেও সিন্ডিকেট ব্যবসা জোরদার হয়েছে। ভোক্তারা বেশী মূল্যে সবজি ক্রয় করছেন। অথচ সবজি চাষিরা অতিরিক্ত মূল্য পাচ্ছেন না।
খাদ্য অধিদপ্তর, বাজার কর্মকর্তা ও মনিটরিং সেল সুত্র জানায়, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য সরকারের নির্দেশনা আছে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে কার্যকর হয় কম। মাঝেমধ্যেই জেলা বাজার কমিটির বৈঠক হয়। দাবী করা হচ্ছে মাঠেও নামেন কর্মকর্তারা। কিন্তু বাস্তবে মাঠপর্যায়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে ঢিলেঢালা অবস্থা দেখে কোনভাবেই আশ্বস্ত হতে পারছেন না ভোক্তসাাধারণ। একেক বাজারে একেক মূল্য হাকছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। মূল্যবৃদ্ধির জন্য তারা দোষারোপ করছেন পাইকারী ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের। পাইকারী ব্যবসায়ীরা বলেন, দাম বেশী আদায় করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীরা একে অপরের দোষারোপ করে মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে। শহরাঞ্চলে যেনতেন, গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজারে দ্রব্যমূল্যের ব্যাপারে খোঁজ নেয়ারও কেউ নেই। শহরাঞ্চলের চেয়ে গ্রামাঞ্চলের হাট-বাজার ও মুদি দোকানে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য আরো বেশী। মাছের মূল্যের ক্ষেত্রে বিক্রেতাদের মর্জির ওপর নির্ভর করতে হয়। সকালে এক দাম আর বিকালে আরেক। কিভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব তার ফর্মূলাও খুঁজে বের করা তাগিদ নেই।
বাজার পর্যবেক্ষণে জানা যায়, চালের দর আপাতত কমার কোন লক্ষণ নেই। মাঠপর্যায়ের একজন বাজার কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের সুযোগ বাজার কর্মকর্তাদের নেই। এদিকে, গতকাল চালের দাম কমানোসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রচার আন্দোলনের অংশ হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে স্মারকলিপি প্রদান ও সভা সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পাটি যশোর জেলা শাখা । শহরের ভোলাট্যাংক রোডস্থ পার্টির কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে অবিলম্বে রেশনিং ব্যবস্থা চালু, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোও, সরকারি ভাবে চাল আমদানী, বেসরকারি আমদানীকারকদের উপর কঠোর তদারকি, মজুদদার, অসৎ ব্যবসায়ী ও মিলারদের চাল সরবরাহ ব্যবস্থা কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করন ও খোলা বাজারে পূর্ব মূল্যে সিদ্ধচাল সরবরাহ নিশ্চিত করা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ