Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঈশ^রগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চরম ভোগান্তিতে রোগীরা

| প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনজেকশন ও স্যালাইন দিতে নার্সদের অসহযোগিতা
ঈশ^রগঞ্জ (ময়মনসিংহ) থেকে আতাউর রহমান : ময়মনসিংহের ঈশ^রগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনটি ওয়ার্ডে থাকা ৩৩ টি বৈদ্যুতিক ফ্যান থাকলেও নষ্ট হয়ে রয়েছে ১৫টি ফ্যান। এতে তীব্র গরমে ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন রোগীরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের জন্য সরবরাহ করা খাবারের মান নিম্মমানের বলে অভিযোগ করেছেন রোগীরা। রোগীদের ইনজেকশন ও স্যালাইন দেওয়ার জন্য নার্সদের কাছে গেলে তারা অসহযোগিতা করেন। এছাড়াও বৈদ্যুতিক লো-ভোল্টেজের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মোটর চালাতে না পারায় গত শনিবার রাত ১২টা থেকে বন্ধ রয়েছে পানি সরবরাহ।
জানা যায়, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মহিলা ওয়ার্ড, প্রসূতি ও শিশু ওয়ার্ড ও পুরুষ ওয়ার্ড নামে তিনটি ওয়ার্ড রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা ওয়ার্ডে ১৪টি ফ্যানের মধ্যে একটি আংশিক নষ্টসহ ৭টি ফ্যান নষ্ট রয়েছে। প্রসূতি ও শিশু ওয়ার্ডে ১২টি ফ্যানের মধ্যে নষ্ট ৪টি ফ্যান। পুরুষ ওয়ার্ডে ৭ টি ফ্যানের মধ্যে নষ্ট ৪টি ফ্যান। গত কয়েক দিনের তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছেন। মাথার উপরে বৈদ্যুতিক ফ্যান থাকলেও সেগুলো নষ্ট থাকায় তীব্র গরমে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে রোগীদের।
খবর পেয়ে শনিবার রাত ৯ টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, মাথার উপরে ফ্যান থাকলেও রোগীরা হাত পাখা দিয়ে বাতাস করছেন। ফ্যান গুলো নষ্ট থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন রোগীরা। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া পার্শবর্তী কেন্দুয়া উপজেলার পাহারপুর গ্রামের বৃদ্ধা হেনা আক্তার। পাশে বসে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করছিলেন তার মেয়ে সাহেরা খাতুন। সাহেরা খাতুন জানান, অসুস্থ্য মাকে হাসপাতালে সুস্থ্য করতে এনেছেন। কিন্তু গরমে তার মায়ের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
ঈশ^রগঞ্জের মাইজবাগ ইউনিয়নের পীতাম্বর পাড়া গ্রামের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ১০ মাস বয়সী শিশু সাউদাকে নিয়ে ভর্তি রয়েছেন মা লিজা আক্তার। গরমে হাতপাখা দিয়ে বাসাত করেও শিশুর কান্না থামাতে পারছিলেন মা। এই গরমে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে মেয়েকে নিয়ে। পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, বিছানা গুলোতে রোগীরা থাকলেও তাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ চাদর বিছিয়ে দেয়নি। পরে সাংবাদিকদের দেখে তাড়াতাড়ি চাদর বিছিয়ে দেওয়া হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে শ^াসকষ্টে আক্রান্ত আবদুল মন্নাছকে নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন স্ত্রী সাহেরা খাতুন। তিনি জানান শনিবার রাতে তাদের ভাত, ডাল ও মাছের তরকারি দেওয়া হয়। ডাল ও তরকারি খাওয়ার যোগ্য ছিল না। মারফত আলী নামের আরেক রোগী বলেন, হাসপাতাল থেকে যে খাবার দেয় তা গলা দিয়ে যায় না। তাই তিনি খাবার ফিরিয়ে দিয়েছেন।’ রোগীরা অভিযোগ করেন তাদের নিম্ম মানের খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
এদিকে ভর্তি থাকা রোগী ও স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন , রোগীদের ইনজেকশন ও স্যালাইন দেওয়ার জন্য নার্সদের কাছে গেলে তারা অসহযোগিতা করেন। শনিবার রাত ৯ টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবস্থানের সময় দেখা যায়, ওয়ার্ড থেকে রোগীদের নার্সের কক্ষে ডেকে পাঠানো হয় ইনজেকশন দেওয়ার জন্য। ওই সময় শিশু রোগীদের নিয়ে অভিভাবকরা লাইন ধরেন নার্সের কক্ষের সামনে। অথচ ওয়ার্ডে গিয়ে সেবা দেওয়ার কথা। ওই সময় কর্তব্যরত নার্স জানায়, রোগীদের সুবিধার জন্য তাদের কক্ষে আসতে বলা হয়। এদিকে বৈদ্যুতিক লো-ভল্টেজের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মোটর চালাতে না পারায় শনিবার রাত ১২ টা থেকে বন্ধ রয়েছে পানি সরবরাহ। এতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন রোগীরা। ঈশ^রগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সদ্য যোগদানকৃত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, নষ্ট ফ্যান গুলো মেরামত করা হবে। নার্সরা রোগীদের বেডে গিয়ে সেবা দেওয়ার কথা। এর ব্যতিক্রম হলে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করা হবে। খাবারের মান উন্নত করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন, লো ভোল্টেজের কারণে পানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় তা উত্তোরণের চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ