Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আটকা পড়েছে চাল

প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১০:৩৮ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

শিবগঞ্জ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে গত জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক লাখ মে. টন চাল আমদানি হয়েছে বলে সোনামসজিদ স্থলবন্দরের সহকারী কমিশনার সাইদুল ইসলাম ও পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেড কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য থেকে জানা গেছে। এদিকে আমদানীকৃত চাল জেলার বাহিরে কম যাচ্ছে বলে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে আমদানীকৃত চাল চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালের বাজারে কম বিক্রয় হয়। ফলে সোনামসজিদ দিয়ে আমদানীকৃত চালে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালের বাজারে দামের ক্ষেত্রে কোনো হেরফের হয়না। জানা যায়, আমদানীকৃত চালগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাহিরে চলে যায়। কিন্তু বর্তমানে জেলার বাহির থেকে চাল কেনার জন্য কোনো ক্রেতা না আসায় সোনামসজিদ স্থল বন্দরে বাহিরে প্রাইভেট খাদ্য গুদাম গুলোতে প্রচুর পরিমাণে আমদানীকৃত চাল আটকা পড়েছে। এদিকে পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার বেলাল হোসেন ও বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সোনামসজিদে দায়িত্বরত ইন্সপেক্টর আলীমউজ্জামান জানান, গত সোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত পানামা ইয়াডের ভিতরে প্রায় ২৫০টি চাল ভর্তি ভারতীয় ট্রাক আটকা পড়ে রয়েছে। তারা উভয় ব্যবসায়ীদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানে চালের মূল্য কেজি প্রতি ২/৫ টাকা কমে যাওয়ায় বাহির থেকে চাল কেনার জন্য ব্যবসায়ীরা আসছেনা। ফলে সোনামসজিদ স্থল বন্দরে বাহিরে প্রাইভেট খাদ্য গুদাম গুলোতে প্রচুর পরিমাণে আমদানীকৃত চাল আটকা পড়েছে। এদিকে প্রতিদিন ভারত থেকে ৭০-৭৫ টি করে চাল ভর্তি ট্রাক আসছে। সারা দেশে চালের বাজারে অস্থিরতার পর সরকারের সাথে চালকল মালিকদের বৈঠকে কেজিতে দুই টাকা করে চালের কমানোর সিদ্ধান্ত হলেও এখনও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালের বাজারে তা কার্যকর হয়নি। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন- চালকল মালিক ও মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলেই চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে। যদিও মিল মালিক ও ব্যবসায়ী নেতাদের দাবি- ধীরে ধীরে চালের দাম কমে আসবে। সেই সঙ্গে সরকারের চালের মজুদ বাড়াতে ও বেশি পরিমাণ চাল রপ্তানি করতে পারলেই চালের বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসবে বলে তারা জানান। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রশাসন বলছে- চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে মজুদের অভিযোগ পেলেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, খাদ্য উদ্বৃত্ত অঞ্চল ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ। অথচ পর্যাপ্ত সরবরাহ ও উৎপাদন হলেও দাম বেড়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালের বাজারে। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সব ধরনের প্রতি কেজি চালেই দাম ৮-১০ টাকা বাড়লেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপের কারনে গত কয়েকদিন থেকে কেজি প্রতি ২/৩ টাকা করে কমেছে। একাধিক চাল বিক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, গত সপ্তাহের দরে অর্থাৎ ৫২-৫৮ দরে মোটা জাতীয় চাল বিক্রি হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার মো. রিয়াজুর রহমান রাজ জানান, জেলায় চলতি ইরি-বোরো চাল ক্রয়ের জন্য তালিকাভুক্ত ১৯২ জন চাল মিল মালিকের সাথে চুক্তি হয়। তারা ১৬ হাজার মে. টন চাল সরবরাহ করবেন। কিন্তু মাত্র ২৯ জন চাল মিল মালিক ১৪০৬ মে. টন চাল সরবরাহ করেন। চাল সরবরাহ দিতে ব্যর্থ ১৬৩ জন মিল মালিকের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অংশ হিসেবে আগামী ২ বছর তারা সরকারে কাছে আর চাল বিক্রি করতে পারবেন না। তবে চালের বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে জেলা বিভিন্ন এলাকায় ডিলারের মাধ্যমে খোলাবাজারে চাল বিক্রি শুরু হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. এরশাদ হোসেন খান জানান, চালের বাজার ও মজুদকারীদের ব্যাপারে প্রশাসন খুব সতর্ক রয়েছে। ইতিমধ্যে বাজার মনিটরিং কমিটির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলার বিভিন্ন অটোরাইস মিল ও গোডাউনের চালের ষ্টক পরিদর্শন শেষ করেছেন কমিটির সংশ্লিষ্টরা। প্রতিবেদন পেলেই নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মিল মালিক ও আতব ধান-চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউল করিম বাবু জানান, তারা ধান কেনায় বাজারে ১০০-১৫০ টাকা করে ধানের দর কমে এসেছে। তিনি আরো জানান, এখন চালের দর আস্তে আস্তে কমে আসবে। সোনামসজিদ স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার সাইদুল ইসলাম জানান, সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে গত জুলাই থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় এক লাখ মে. টন চাল আমদানি হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ