Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিদ্যুৎ ঘাটতিতে ২১ জেলা

| প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : শরতের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে দেশের পশ্চিম জোনের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ ঘাটতির পাশাপাশি সঞ্চালন ও বিতরন ব্যবস্থার সংকটের কোন সুরাহা হচ্ছে না। চরম দূর্ভোগ আর বিড়ম্বনার শিকার এ অঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৩কোটি মানুষ। বিদ্যুৎ সংকটের বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন দক্ষিনাঞ্চলের পুজা উদযাপন কমিটিগুলো। গত তিনদিন ধরে সকাল থেকে মধ্যরাত পেরিয়েও বিদ্যুৎ ঘাটতি অব্যাহত থাকছে। জাতীয় গ্রীড থেকে অব্যাহত রেশনিংসহ স্থানীয়ভাবে সঞ্চালন, বিতরন ও সরবরাহ ব্যাবস্থায় ত্রæটি অব্যাহত রয়েছে। ফলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগ সহ ফরিদপুর অঞ্চলের ২১ জেলায় প্রতিদিনই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের পাশাপাশি ঘাটতিও অব্যাহত রয়েছে। সান্ধ্য-পীক আওয়ারে প্রায় ১২শ মেগাওয়াট এবং ডে-পীক আওয়ারে ৯শ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরিতে গত কয়েকদিন ধরে এ অঞ্চলে যথাক্রমে ৭শ মেগাওয়াট ও সাড়ে ৬শ মেগাওয়াটের মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। কোন কোনদিন ৩৫Ñ৪০ভাগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ ঘাটতি সৃষ্টি হচ্ছে । শহরের চেয়ে পল্লী বিদ্যুতের এলাকাধীন গ্রামঞ্চলে পরিস্থিতি আরো খারাপ।
অব্যাহত এ বিদ্যুৎ সংকটে বরিশাল, খুলনা, ফরিদপুর, যশোর ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ এ অঞ্চলের সবগুলো জেলা সদর এবং উপজেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকৎসা সংকটও সৃষ্টি হচ্ছে। বড় বড় হাসপাতালগুলোতেও জরুরী অস্ত্রপচারের মত অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা পরিসেবা ব্যহত হচ্ছে। নগর-মহানগরগুলোতে জরুরী পানি সরবরাহ বিপর্যস্ত। গত কয়েকদিন ধরে বরিশালসহ দক্ষিনাঞ্চলের কয়েকটি এলাকায় মৃদু তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকার মধ্যে অব্যাহত এ বিদ্যুৎ ঘাটতি সাধারন মানুষকে আরো দূর্ভোগে ফেলছে।
জাতীয় গ্রীড থেকে পূর্বÑপশ্চিম আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে হিস্যা মাফিক সরবরাহ ঘাটতির কারনেই পশ্চিম জোনের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ সংকট অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। মাস কয়েক আগে পূর্বজোনে জাতীয় গ্রীড সঞ্চালন লাইনের কয়েকটি টাওয়ার বিধ্বস্ত হবার পর থেকে বিকল্প ব্যবস্থায় পশ্চিম জোনে বিদ্যুৎ পৌছে দেয়া হলেও চাহিদা মাফিক সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না সঞ্চালন ব্যবস্থার দূর্বলতার কারনে। আগামী মাসের মধ্যে নতুন টাওয়ার স্থাপনসহ সঞ্চালন লাইন নির্মান ও চালুর ফলে পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হবে বলে পাওয়ার গ্রীড কোম্পানী-পিজিসিবি’র একাধিক সূত্রে বলা হয়েছে। তবে বরিশালÑমাদারীপুরÑফরিদপুরÑভেড়ামারা এবং বরিশাল-বাগেরহাটÑখুলনা ১৩২ কেভী সঞ্চালন লাইনের ত্রæটি সহ দক্ষিনাঞ্চলের স্থানীয় পর্যায়ে বিতরন ব্যবস্থার লাগাতার ত্রæটির কারনে বিদ্যুৎ নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে সংকট আরো বাড়ছে।
গত কয়েকদিন ধরে বরিশালসহ দক্ষিনাঞ্চলে সান্ধ্য পীক আওয়ারে ৭০-৯০মেগাওয়াটের মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। অথচ এ সময় চাহিদা থাকছে ১২৫Ñ১৩৫ মেগাওয়াট। শনিবার সান্ধ্য পীক আওয়ারে সরবরাহ ছিল মাত্র ৭০ মেগাওয়াট। ফলে রাতভরই লোডশেডিং অব্যাহত ছিল। গতকাল সারাদিনই পশ্চিম জোনের ২১ জেলায় বিদ্যুৎ ঘাটতিতে জনজীবনে চরম দূর্ভোগ অব্যাহত ছিল। ফলে ৪৫ থেকে ৫০ মেগাওয়াট ঘাটতি মোকাবেলায় প্রতিটি এলাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এর সাথে রয়েছে বিতরন ব্যবস্থায় ত্রæটি। খোদ বরিশাল মহানগরীতেই এখনো ৩০ বছরের পুরনো বিতরন লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। জরাজীর্ন বিতরন ব্যবস্থাসহ নিয়মিত রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এ বিভাগীয় শহরে বিদ্যুৎ বিতরন ব্যবস্থা এখন সর্বকালের নাজুক পর্যায়ে। দূর্ভোগ বাড়ছে নগরবাসীর। শিল্প ও ব্যবসাÑবানিজ্যের অবস্থাও নাজুক।
এদিকে মঙ্গলবার থেকে দূর্গা পুজা শুরু হচ্ছে। হিন্দু স¤প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এ ধর্মীয় উৎসবের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন জেলা-উপজেলার পুজা উদযাপন পািরষদ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ