Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা ডিসিসিআই

| প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। গতকাল রোববার ডিসিসিআইর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আশঙ্কার কথা জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুনরায় বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা হলে উৎপাদনমুখী শিল্প, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, স্টিল রি-রোলিং, টেক্সটাইল খাতে প্রায় ৮ থেকে ১০ শতাংশ উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। যদি আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয় তাহলে প্রতিযোগী মূল্যে শিল্প উৎপাদন সক্ষমতা ব্যাহত হবে। এ ছাড়া বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পসমূহ, রপ্তানি সক্ষমতা, শিল্প বহুমুখীকরণ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা পরিচালনায় ব্যয় বৃদ্ধি পাবে, যা দেশের ক্রমবিকাশমান এসএমই খাতের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে। বিদ্যুতের পুনরায় মূল্য বৃদ্ধি স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং সর্বোপরি মূল্যস্ফীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
এতে আরো জানানো হয়, আবারও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করতে ছয়টি বিতরণ কোম্পানির প্রস্তাবের ওপর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে গণশুনানি শুরু করতে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আধুনিক জীবনব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ শিল্প, কৃষি এবং সেবা খাতের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি।
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিসমূহের প্রস্তাবিত পুনরায় বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগ খুচরা পর্যায়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে ৯ টাকা ১৬ পয়সা থেকে ১০ টাকা, বাণিজ্যিক ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে ১১ টাকা ৯৮ পয়সা থেকে ১২ টাকা ৯৮ পয়সা, বৃহৎ শিল্পকারখানার ক্ষেত্রে ৯ টাকা ৫২ পয়সা থেকে ১০ টাকা ৩২ পয়সা এবং গৃহস্থালিতে ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৫ টাকা ৬৩ পয়সা থেকে ৬ টাকা ১০ পয়সা হারে বৃদ্ধি পাবে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার দাবির বিপরীতে বর্তমানে শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে প্রায় ১৮০ শতাংশ বেশি, যা প্রস্তাবিত মূল্য বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের মূল্য অপরিবর্তিত রেখে বিতরণ পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেও পিডিবির ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যেতে পারে এবং মূল্য সমতার এ সামঞ্জস্য নীতি গণমুখী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করবে বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
বেসরকারি খাতের ফার্নেস অয়েল অথবা হেভি ফুয়েল অয়েল ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীগণ বিপিসির প্রদানকৃত দরের তুলনায় প্রায় ৯০ শতাংশ কম মূল্যে বিদেশ থেকে ফার্নেস অয়েল অথাবা হেভি ফুয়েল অয়েল আমদানি করতে পারে। স্বল্প উৎপাদন ব্যয় নিশ্চিত করতে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের আরো অধিক হারে ফার্নেস অয়েল আমদানি করতে উদ্বুদ্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহŸান জানায় ডিসিসিআই।
পাশাপাশি এ মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি না করে বরং সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের পরিচালন ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত, সিস্টেম লস আরো হ্রাস করতে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ কার্যক্রমে বেসরকারি খাতকে অধিক পরিমাণে অন্তর্ভূক্তকরণের জন্য সরকারের প্রতি আহŸান যায় সংগঠনটি।
এ ছাড়া সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে বিদ্যুতের ট্যারিফ বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাহার এবং সকল সরকারি ও বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের সাথে নিয়ে একটি জ্বালানি মনিটরিং কমিটি গঠনসহ দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণের আহŸান জানায় সংগঠনটি। যাতে ভবিষ্যতে সবার জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে গুণগত মানসম্মত নির্ভরযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করা যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ