Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাল ক্রয়ে ঝিনাইদহের নিম্নবিত্তদের নাভিশ্বাস

| প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা হিসেবে পরিচিত ঝিনাইদহে চালের অস্থির বাজারে খেটে খাওয়া দিনমজুর ও মধ্যবিত্তদের নাভিশ্বাস উঠেছে। ঝিনাইদহে খুচরা বাজারে মোটা চাল ৫০ টাকা ও চিকন চাল ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ধান ও চালের কোন সংকট না থাকলেও ক্রমাগত দাম বৃদ্ধির কারণে হাফিয়ে উঠেছেন নি¤œ আয়ের মানুষ। এ অবস্থায় ঝিনাইদহের চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ২/১ দিনের মধ্যে চালের বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে। তাদের ভাষ্য ভারত থেকে চাল আসবে না এমন গুজবে হঠাৎ করেই চাল ও ধানের বাজার চড়া হয়ে গেছে। ফলে চালের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। ঝিনাইদহের চাল ব্যবসায়ী তপন কুমার অভিযোগ করেন, মিডিয়ার কারণে চালের বাজার অস্থির হয়েছে। আমরা যেদিন টিভিতে ভারত থেকে চাল আসছে না বলে খবর শুনতে পারে, সেদিন থেকেই চাল ও ধানের বাজার চড়া হয়ে যায়। আরেক চাল ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এলসির মাধ্যমে ভারত থেকে যে চাল আমদানী হচ্ছে, সেগুলো নজরদারী বাড়াতে হবে। কারণ তারা জিরো মার্জিনে চাল আমদানী করে কেজিতে ৫/৭ টাকা দাম নিচ্ছে। তারা পাইকারী বাজারে যদি সহনশীল দামে চাল বিক্রি করতো তবে কেজি প্রতি আরো ৩/৪ টাকা করে চালের দাম কমতে পারতো। তিনিও চালের বাজার চড়া হওয়ার নেপথ্যে এক শ্রেনীর মিডিয়াকে দায়ী করেন। মোয়াজ্জম হোসেন বলেন, আমরা প্রতিদিন জেলার বাইরে ট্রাক ট্রাক চাল বিক্রি করছি। বাজারে ধান বা চালের কোন সংকট নেই। তবে মনিটরিংয়ের অভাব রয়েছে। মেছুয়া বাজারের চাল ব্যবসায়ী জসিম উদ্দীন জানান, বাজারে ধানের কিছুটা সঙ্কট রয়েছে। গ্রামের কিছু বড় কৃষক ও ব্যবসায়ী ধান মজুদ করে কৃত্তিম সঙ্কট সৃষ্টি করছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, আগামী ২/১ দিনের মধ্যে হয়তো চালের বাজার নরম হতে পারে।শৈলকুপার ভাটই বাজার এলাকার প্রথম শ্রেনীর ঠিকাদার গোলাপ মেম্বর অভিযোগ করেন, সরকার সমর্থিক কিছু চাল ব্যবসায়ীর কারসাজিতে ঝিনাইদহে চালের বাজার অস্থির হয়েছে। এদিকে গত রোববার ঝিনাইদহের চাল বাজার পরিদর্শন করে জানা গেছে, মিল থেকে মিনিকেট চাল ৫৩ টাকা কেজি কিনে পাইকারী বাজারে ৫৬ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এরপর খুচরা বাজারে সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। একই ভাবে মধ্যম চিকন চাল ৫২ টাকা থেকে ৫৮ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আর বাশমতি চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ টাকা। তবে ঝিনাইদহের বাজার থেকে মোটা চাল উধাও হয়ে গেছে। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত আবাদ মৌসুমে মোটা ধানের আবাদ হয়নি, তাই বাজারে মোটা চাল নেই। এদিকে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শংকর কুমার মজুমদার জানান, ঝিনাইদহ জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭২৬ মেট্রিক টন ধান উদ্বৃত্ত থাকে। এখানে তো চালের সংকট হওয়ার কথা নয়। তিনি বলেন, ঝিনাইদহ জেলায় প্রতি বছর ৭ লাখ ৬১ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। আর জেলার চাহিদা হচ্ছে ৩ লাখ ৭১ হাজার ৬২২ মেট্রিক টন। বাকীটা উদ্বৃত্ত থাকে। চলতি আমন মৌসুমে ৯৯ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এতে প্রায় ২ লাখ ৫৯ হাজার ১৪১ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে শংকর কুমার মজুমদার জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ