Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পীরগাছায় বন্যা ও নদী ভাঙনে ব্যাপক ক্ষতি

| প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এনজিওর কিস্তির চাপে দিশেহারা বন্যাদুর্গতরা
পীরগাছা (রংপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : রংপুরের পীরগাছায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হলেও একটি এনজিও’র এরিয়া ম্যানেজার জানে না বন্যা হয়েছে। ফলে নিয়মিত কিস্তির টাকা আদায় করে আসছে এনজিও কর্মীরা। এবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে পীরগাছা উপজেলা কৃষি, মৎস ও প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ অধিদপ্ত তাদের নিজ নিজ দপ্তরের ক্ষতির তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠান। তাদের পাঠানো তথ্যে জানা যায়, বন্যায় কৃষি খাতে ২০ হাজার কৃষকের ৪৫ কোটি ২৬ লাখ ৩০ হাজার, মৎস খাতে এক কোটি ১৬ হাজার ও প্রাণী সম্পদ খাতে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতির পরিমান উল্লেখ্য করা হয়। এসব ক্ষতি পুষিয়ে উঠেতে সাধারণ মানুষদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেকে যখন মাথা গোঁজার ঠাই খুঁজছে সেই সময়ে এনজিওগুলোর ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে ঋণ গ্রহীতারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ঈদের আগে ছুটির অযুহাত দেখিয়ে আগাম কিস্তি আদায় করা হয়। ফলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার লোকজন চরম বিপাকে পড়ে। এদিকে বন্যাদূর্গত এলাকায় সরকারী ও বেসরকারী ভাবে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। ঈদের আগে শেষ অফিসের অযুহাতে বন্যাদূর্গত এলাকাগুলোতে গিয়ে এক প্রকারের জোর জুলুম করে কিস্তি টাকা আদায় করা হয়। বন্যাদূর্গতরা যখন ত্রাণের আশায় বৃত্তবাণদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে তখন এনজিও কর্মীরা কিস্তির জন্য তাদেরকে চাপ দিচ্ছেন।
জানা যায়, উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংক, আশা, এস.এস.এস, এস.কে.এস, এশিয়ান ব্যাংক ও ব্র্যাকসহ প্রায় ১০/১২টি এনজিও ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করে আসছেন।। এসব এনজিও থেকে প্রায় ২০ হাজার হতদরিদ্র পরিবার ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহণ করেন। পীরগাছা উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নকে বন্যা কবলিত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ধারকজ্ব করে যখন মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছে ঠিক সে সময়ে বৃদ্ধি করা হয়েছে ঋণের কিস্তির টাকার চাপ। এনজিওগুলোর মাঠ কর্মীরা এনজিও’র নিয়ম মেনে না চললে আইন গত ব্যবস্থা নেয়ারও হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফলে ঋণ গ্রহীতারা নিরুপায় হয়ে কিস্তির টাকা পরিশোধের শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সরকারী ভাবে ঋণের কিস্তি না নেয়ার ঘোষণা আসলেও তা কর্ণপাত করছে না এনজিও’র স্থানীয় শাখাগুলো। গ্রামীণ ব্যাংক পীরগাছা উপজেলা এরিয়া ম্যানেজার লুৎফর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পীরগাছা উপজেলায় কোন বন্যা হয় নাই। আর ঋণ গ্রহীতারা নিয়মিত কিস্তির টাকা পরিশোধ করছে। তাদের কোন অভিযোগ নেই।
উপজেলার কান্দি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক হাইফুল ইসলাম খান ইকরাল জানান, পীরগাছা উপজেলায় এবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এনজিওগুলোকে কিস্তি না নেয়ার জন্য আহবান জানালেও তারা প্রকাশ্যে কিস্তি আদায় করে আসছে। অনেকে কিস্তির টাকা পরিশোধে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার। পীরগাছা উপজেলা পরিষদের একাধিক দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান,যে কোন বারের বন্যার চেয়ে এবারের বন্যায় পীরগাছা উপজেলায় বেশী ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি মানুষদের পুষিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগবে। পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(অ:দা)আমিনুল ইসলাম বলেন, এবারের বন্যা ও নদী ভাঙনে ক্ষতির পরিমান সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ