Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে গ্রামীণ সড়ক

| প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

চান্দিনা (কুমিল্লা) থেকে মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল : কুমিল্লাসহ দেশের পল্লী সড়কগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করা এখন সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপজেলা ও ইউনিয়নে এমন কিছু সড়ক রয়েছে যার অনেকগুলো ‘ডিজাইন লাইফ’ ইতিমধ্যে অতিক্রম করেছে। আর এসব সড়কের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় একদিকে যেমন অবনতি ত্বরান্বিত হচ্ছে, অন্যদিকে সড়কগুলো ক্রমশ যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠছে।
কুমিল্লার সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সড়কগুলো যানবাহন চলাচলের উপযোগী থাকলেও আঞ্চলিক সড়ক, ফিডার রোড ও গ্রামীণ সড়কগুলোর বেহাল দশা। বিশেষ করে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার সড়কগুলোর করুণ দশা। অর্থাভাবে এসকল সড়ক মেরামত ও সংস্কার করা যাচ্ছে না। আবার মেরামত কাজে ফাঁকির কারণে কিছুদিন যেতে না যেতেই ভেঙে চুরে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলার সড়কগুলোর নানা স্থানে খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাভাবে এ সড়কগুলোর সংস্কার করা যাচ্ছে না। তত্ত¡াবধায়ক সরকারের আমলে কয়েকটি সড়ক পুন:নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পরপরই গাড়ি চলাচলে কার্পেটিং উঠে যেতে থাকে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, টাকার অভাবে রাস্তাগুলো পুরাপুরি সংস্কার করা যায় না। আংশিক সংস্কার করা হয়ে থাকে। ফলে রাস্তাগুলো প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে ভেঙে চুরে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে।
কোন কোন রাস্তাতে হাঁটু সমান গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অর্থাভাবে মেরামত বা সংস্কার করা যাচ্ছে না। কাঁচা সড়কগুলোর অবস্থা আরো করুণ। বর্ষাকালে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বছরে যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় তা দিয়ে রাস্তাগুলোর মেরামত সম্ভব হয় না। জেলার এমন অনেক সড়ক আছে নির্মাণের পর আর মেরামত বা সংস্কার করা হয়নি। পাকা সড়কগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা হলে এসব বিনয়োগের ফলাফল হবে হতাশাব্যঞ্জক। শুধু তাই নয়, প্রকৃত সুফল অর্জনে ব্যর্থ হবে বলে মনে করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দফতর। ১৯৯২-৯৩ সাল থেকে সরকার রাজস্ব খাত থেকে এলজিইডিকে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য অর্থায়ন করছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দফতর সূত্র জানা যায়, পল্ল­ী সড়কগুলো রক্ষণাবেক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছেÑ নিরাপদ, আরামদায়ক ও দ্রæত পরিবহন নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে যানবাহন পরিচালনার ব্যয় ও দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা। বর্তমানে যে হারে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে তা অতীতের তুলনায় বেড়েছে। যে কারণে উপযুক্ত ও পর্যাপ্ত সড়ক নিরাপত্তা সংকেত স্থাপনের ব্যাপারে মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন।
এলজিইডি সূত্র জানায় চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ না পাওয়ায় সড়কগুলো মেরামত করা যাচ্ছে না। আর যে পরিমাণ বরাদ্দ মেলছে তা দিয়ে এ বিশাল ঘাটতি রাতারাতি দূর করা সম্ভব নয় বলে এলজিইডি মনে করে। যে কারণে সরকার প্রত্যেকটি উন্নয়ন প্রকল্পের দলিলে প্রকল্পের ব্যয়ের কিছু অংশ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ রাখবে এলজিইডির জন্য। তবে যেসব গ্রামে সড়কগুলো এলজিইডি রক্ষণাবেক্ষণ করবে না সেগুলো জেলা পরিষদ বা উপজেলা পরিষদ তাদের উন্নয়নে বাজেটের ২৫ শতাংশ অর্থ নির্দিষ্ট করে রাখবে। এর জন্য অগ্রাধিকার সড়কের তালিকা তৈরি করা হবে এলজিইডি সূত্র জানায়। এছাড়া বিভিন্ন সড়কের দেশের ওপর নির্মাণ করা ব্রিজগুলো কার স্বার্থে নির্মিত হয়েছে এমন প্রশ্ন প্রতিদিন ঘুরপাক খায় চলাচলকারী হাজার মানুষের মনে। ব্রিজ আছে রাস্তা নেই, রাস্তা আছে ব্রিজ নেই, মানুষের চলাচলের উপায় নেই। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই এসব ব্রিজগুলো সরকারি সহায়তায় নির্মাণ করা হয়। ফলে এসব ব্রিজগুলো দিয়ে মানুষের চলচলে কোনো উপকারে আসেনি। এসব ব্রিজে সাধারণ মানুষ এখন খরের পালা, ধান শুকানোসহ গোবর শুকানোর জায়গা হিসেবেই ব্যবহার করে আসছে। মানুষের চলাচলের দুর্ভোগ ঘোচানোর জন্য নির্মিত এ ব্রিজগুলোই এখন মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। প্রকৃত অর্থে মানুষের যে দুর্ভোগ সেই দুর্ভোগই রয়ে গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ