Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে : তথ্যমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মিয়ানমার কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন না করা পর্যন্ত তাদের সঙ্গে আমাদের প্রতিবেশি দেশ হিসেবে স্বাভাবিক সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। গতকাল সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টির উসকানি রোধ করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সামরিক নয়, কূটনৈতিক তৎপরতায় বিশ্বাসী। রোহিঙ্গাদের সমস্যাটি জাতিগত, কোনো ধর্মীয় সমস্যা নয়। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে ফেরত পাঠানো এবং মর্যাদার সঙ্গে তাদের নিজ দেশে পুনর্বাসনই এ সমস্যার একমাত্র সমাধান। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করার জন্য দেশটিতে শান্তি নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।
ইনু বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সামরিক নয়, কূটনৈতিক তৎপরতায় বিশ্বাসী। দ্বিপক্ষীয় কূটনীতির সাথে আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় তথা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সমাধানের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আশা করি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শরণার্থীদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। যুদ্ধকে আমরা সমাধান মনে করি না। কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। ইনু বলেন, মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী। প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক এবং প্রতিবেশীর অভ্যন্তরীণ সমস্যার ফলে উদ্ভূত উদ্বাস্তু সমস্যাকে কূটনৈতিক মুন্সিয়ানার সঙ্গে মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
গত ২৪ অগাস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর স্থাপনায় হামলার ঘটনার পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নতুন করে দমন অভিযান শুরু করলে রোহিঙ্গারা পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। জাতিসংঘের হিসাবে এরই মধ্যে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তা দশ লাখে পৌঁছাতে পারে। মিয়ানমারে জাতিগত দমন-পীড়নের কারণে আরও চার লাখের মত রোহিঙ্গা গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। মিয়ানমার সরকার তাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি নয়, এমনকি তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করতেও তারা নারাজ।
রাখাইনের ঘটনাপ্রবাহকে জাতিসংঘ জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে চিহ্নিত করলেও মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং দাবি করেছেন, রোহিঙ্গা বলে কোনো জাতিসত্ত¡া তার দেশে কখনোই ছিল না। যারা নিজেদের রোহিঙ্গা বলছে, তারা আসলে ‘বাঙালি চরমপন্থি বিদেশি সংস্থাগুলো যা বলছে তাতে কান দিয়ে এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন তিনি। রোহিঙ্গা সঙ্কটের মধ্যেই মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও ড্রোন প্রায়ই আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ছে, যা নিয়ে দুই দফা প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা।
তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, অন্যের সমস্যা আমাদের ঘাড়ে এসে পড়েছে। আমরা বর্ডার বন্ধ করে দিয়ে এ সমস্যা এড়াতে পারতাম। কিন্তু মানবতা ও মনুষ্যত্বকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়ে আমরা সমস্যাটা গ্রহণ করেছি, কারণ মানবিক সংকট নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার রাজনীতি করে না। অন্যরাও এ নিয়ে রাজনীতি করবেন না- সেটাই একান্ত কাম্য। রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধানে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিএনপির সমালোচনার জবাবে ইনু বলেন, এই মানবিক বিপর্যয় নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পাশাপাশি সমগ্র বিশ্ব এবং জাতিসংঘ যে ব্যাপক তৎপরতায় কাজ করছে তা খালেদা জিয়া দেখতে পারছেন না বা দেখতে চাচ্ছেন না। জঙ্গিদমন আন্দোলনকে দুর্বল করার জন্য রোহিঙ্গা সমস্যা ব্যবহার করাই তার চক্রান্ত। এটাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে যে, কোনো সমাধান তার কাম্য নয় বরং রোহিঙ্গা সমস্যাকে কেন্দ্র করে সরকারকে ঘায়েল করার এক চক্রান্তের জাল বোনার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন খালেদা জিয়া। সা¤প্রদায়িকতার জিগির তুলে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের সুযোগ খুঁজছেন তিনি। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার ছাড়াও তথ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ