Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চায়ের বাজার বেজায় তেজী

প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শফিউল আলম : বেজায় তেজী হয়ে উঠেছে চায়ের বাজার। রঙ, ঘ্রাণ ও স্বাদে উন্নততর গুণগত মানসম্পন্ন দেশীয় চায়ের কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর ফলে ঐতিহ্যবাহী অর্থকরী পণ্য চায়ের অভ্যন্তরীণ ভোক্তা চাহিদাও বাড়ছে। বাংলাদেশের উৎপাদিত চায়ের রফতানি বাজার চাহিদা থাকলেও সুষ্ঠু, সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। বরং আফগানিস্তান, রাশিয়া (সিআইএস), পাকিস্তান, মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহের মতো অনেকগুলো পুরনো বাজার হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। ৯০-এর দশকে চা রফতানিকারক দেশ হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশ ছিল পঞ্চম অবস্থানে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামে দেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক চা নিলাম বাজারে এবার এক মওসুমেই (২০১৫-১৬ সালের ৪২তম নিলাম সেল পর্যন্ত) পাতা ও গুঁড়ো চা বিক্রি হয়েছে ৬ কোটি ১৬ লাখ ৮৩ হাজার কেজি। যার মূল্য ১ হাজার ১৫৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
এর আগের বছরে (২০১৪-১৫ সাল) বিক্রি হয় ১ হাজার ৪৭ কোটি ৭ লাখ টাকা মূল্যের ৫ কোটি ৮১ লাখ ৭১ হাজার কেজি চা পাতা। গত বছরের তুলনায় এবার ১১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। কেজিপ্রতি গড় মূল্য বেড়েছে ৭ টাকারও বেশি। তবে বাংলাদেশে উৎপাদিত চায়ের রফতানি ক্রমাগতভাবে কমে যাচ্ছে। এবারের মওসুমে রফতানিমুখী চা বিক্রি হয়েছে মোট চায়ের মাত্র ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর অভ্যন্তরীণ ভোক্তারা কিনছেন ৯৭ ভাগেরও বেশি চা। এদিকে ৪৪তম সেলের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে চলতি মওসুমের আন্তর্জাতিক নিলাম বাজারের পর্দা নামছে আজ (মঙ্গলবার)। আজ মোট ১৫ হাজার ২১৬ ব্যাগ পাতা ও গুঁড়ো চা বিক্রির জন্য বাজারে ছাড় করা হচ্ছে। বিগত ৫ মে, ২০১৫ সালে এই নিলাম মওসুম শুরু হয়েছিল। ফের আগামী মে মাসে আরেকটি নতুন মওসুম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
চায়ের বাজারে চাঙ্গাভাব ও গড়মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি চা উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সাম্প্রতিককালে সর্বোচ্চ ফলন বা উৎপাদন। গত ২০১৫ পঞ্জিকা সালে দেশে মোট ৬ কোটি ৭০ লাখ কেজিরও বেশি পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে। ২০১৪ সালে চা উৎপাদিত হয় ৬ কোটি ৩১ লাখ কেজি। ২০১৩ সালে ৬ কোটি ৬৩ লাখ কেজি, ২০১২ সালে ৬ কোটি ৩০ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়। তবে ক্রমবর্ধমান দেশীয় বাজার চাহিদা সামাল দিয়ে বিদেশে রফতানির সুযোগ নিতে হলে উৎপাদন আরো বৃদ্ধির ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছেন চা শিল্পের অভিজ্ঞজনরা।
এদিকে গত ৮ মার্চ অনুষ্ঠিত ৪৩তম চট্টগ্রাম নিলাম বাজারে মোট ৮ হাজার ৪ শ’ ব্যাগ পাতা চা ও ১৭ শ’ ব্যাগ গুঁড়ো চা বিক্রির জন্য আনা হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন গুণগত মানের চা প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ২১৫ টাকা থেকে সর্বনিম্ন ৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর খুব ভালো মানের কিছু নতুন চা কেজি ২৪১ থেকে ৪১৪ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। নতুন চায়ের পরিমাণ ছিল ৮১ ব্যাগ। আবার বিশেষভাবে চয়ন করা সিলেটের মধুপুর বাগানের জিবিওপি-বিটিআই চা কেজি ২৭১ টাকায় এবং সিএফ-বিটিআই ২৪৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। তবে মওসুমের শেষ দিক হওয়ায় বাজারে বেশিরভাগই বিক্রির জন্য ছাড়া হয় তুলনামূলক নিম্নমানের চা। তবে আসন্ন নতুন মওসুমে ভালো মানের চা বাজারে আসতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশিষ্টরা। এ বছর আগাম বৃষ্টিপাত শুরু হওয়াকে চায়ের ফলনের জন্য আবহাওয়ার ভালো মতিগতি হিসেবে দেখা হচ্ছে। দেশে মোট ১৬৩টি চা বাগান রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় ৯০টি, হবিগঞ্জে ২৩টি, চট্টগ্রামে ২২টি, সিলেটে ১৯টি, পঞ্চগড়ে ৭টি, রাঙ্গামাটিতে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটি চা বাগান রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চায়ের বাজার বেজায় তেজী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ