বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রকাশ্য দিনের বেলায় শত শত যাত্রী ও পুলিশের উপস্থিতিতে নরসিংদী রেলস্টেশন মাস্টারের অফিসকক্ষে গুলিবর্ষণ
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : প্রকাশ্য দিনের বেলায় শত শত যাত্রীর উপস্থিতিতে স্টেশন মাস্টারের অফিস কক্ষে ঢুকে ক্ষুদ্রাস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করেছে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এতে কেউ হতাহত না হলেও গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিতে বিদ্ধ হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে ছবিটির কাচ ভেঙে নিচে পড়ে গেছে। গুলিবর্ষণ করে তান্ডব সৃষ্টির পর সন্ত্রাসীরা ধীর গতিতে স্টেশন ত্যাগ করেছে। ৫ জন রেল পুলিশ কনস্টেবল ও ১ জন নিরাপত্তা প্রহরীর নিয়মিত পাহাড়াসহ ২১ জন রেল পুলিশের অবস্থান থাকার পারও কেউ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতার করতে পারেনি। গতকাল সোমবার সকাল পৌনে ৯ টায় নরসিংদী জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত নরসিংদী রেলস্টেশনে এই সন্ত্রাসী ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। সন্ত্রাসীদের এই গুলিবর্ষণের সময় প্লাটফরমে উপস্থিত শত শত যাত্রী আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে ছুটাছুটি করতে থাকে। ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে স্টেশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
গুলিবর্ষণের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। তবে স্টেশনের নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভোরে একদল ছিনতাইকারী চিটাগং মেইলের একজন যাত্রীর নিকট থেকে একটি মোবাইল সেট ও ৫শত টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এই ঘটনাটি নিরাপত্তা বাহিনীর গোচরীভূত হলে তারা ছিনতাইকারীদেরকে ধরে এনে মোবাইল সেট ও ৫শত টাকা যাত্রীকে ফিরিয়ে দেয়। সাথে সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মধ্যস্থতা করে যাত্রী ও ছিনতাইকারীদেরকে মিলিয়ে দিয়ে বিদায় করে দেয়। এই ঘটনার কয়েক ঘন্টা পর ছিনতাইকারীদের ৫/৭ জনের একটি সশস্ত্র দল প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে স্টেশন প্লাটফরমে প্রবেশ করে। তারা স্টেশন মাস্টারের অফিস সংলগ্ন নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসের দরজায় গিয়ে লাথি মেরে দরজা খুলতে চেষ্টা করে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে পার্শবর্তী স্টেশন মাস্টারের কক্ষে গিয়ে লাথি মেরে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে ক্ষুদ্রাস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এসময় স্টেশন মাস্টার মহিদুর রহমান নিজের কক্ষে থাকলেও জানালার পাশে বসে পত্রিকা পড়ছিলেন।
এসময় সন্ত্রাসীরা বলাবলি করে ‘ঐ লোকটি কোথায়’। ঘটনার আকস্মিকতায় স্টেশন মাস্টার মহিদুর রহমান হতবিহব্বল হয়ে পড়েন। পরে তিনি কক্ষে থেকে বেরিয়ে দেখতে পান সন্ত্রাসীরা চলে যাচ্ছে।
এই ঘটনার ঢেউ সারা স্টেশনে আতংকের সৃষ্টি করলে খবর পেয়ে ভৈরবা রেলওয়ে থানার ওসি আবদুল মজিদ ঘটনাস্থলে পৌছেন। তিনি স্টেশনমাস্টার মহিদুর রহমান, রেল ফাড়ির পুলিশ কর্মকর্তা কর্মচারী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে কথা বলে সন্ত্রাসীদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেন। পরে স্টেশনের সিটি টিভি থেকে ঘটনার সময়ের চলচ্চিত্র সংগ্রহ করেন। পরে খবর পেয়ে নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা ও জেলা প্রশাসকের কার্য্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার হুমায়ন কবির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ওসি আবদুল মজিদ জানান, স্টেশনের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে আমরা ছিনতাইকারীদের চিহ্নিত করতে সমর্থ হয়েছি। তবে তদন্তের স্বার্থে কারো নাম এ মুহুর্তে প্রকাশ করা যাবে না। তবে শহরের বানিয়াছল এলাকার সাগর (২০) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তাকে নিয়ে অন্যান্য সন্ত্রাসীদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এব্যাপারে ভৈরব জিআরপি থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে স্টেশনের অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা স্টেশনের আশেপাশের বাসিন্দা। এরা স্টেশনের অল্প বয়স্ক একজন কর্মচারীর সাথে সব সময়ই আড্ডা দিয়ে থাকে এবং সুযোগ পেলেই তারা যাত্রীদের সর্বস্ব কেড়ে নেয়। প্রায় প্রতিদিনই এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। কিন্তু অল্প বয়স্ক কর্মচারীটি এলাকার স্থানীয় বলে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।