Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পূর্বাচল জোনাল অফিসে সীমাহীন দুর্নীতি অনিয়ম

| প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রূপগঞ্জ (নারায়নগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে নারায়নগঞ্জ জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন রূপগঞ্জ জোনাল অফিসের ১৭ দালালের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে ২৫ হাজার গ্রাহক। শুধু তাই নয়, অনেক গ্রাহক এসব দালালদের হাতে নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন। অফিসের কতিপয় দূনীতিবাজ কর্মকর্তার যোগসাজসে দালালরা দাবড়ে বেড়াচ্ছে। দুর্নীতি আর অনিয়মের সুবাদে এসব দালালরা গত কয়েক বছরের ব্যবধানে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। নতুন মিটার দেওয়া, মিটার স্থানান্তরিত করা, অবৈধ সংযোগ দেওয়ার নাম করে এসব দালালরা গ্রাহকদের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রূপগঞ্জ জোনাল অফিসে ১৭ জনের দালাল সিন্ডেকেট গড়ে উঠেছে। এ দালালদের কাছে জোনাল অফিসের আওতাধীন রূপগঞ্জ সদর ও কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ২৫ হাজার গ্রাহক জিম্মি হয়ে পড়েছে। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছে গুতিয়াবো এলাকার রহিম মিয়া ও তার ছেলে রিফাত মিয়া এবং কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া এলাকার আবদুল্লাহ মিয়া। জোনাল অফিসের অন্তর্ভুক্ত গ্রাহকরা এদের কাছে নিরুপায়। এদের বাহিরে গিয়ে কেউ কোন কাজ করতে পারে না। কার্যত পল্লীবিদ্যুতের অফিসের কর্মকর্তারাও তাদের কাছে অসহায়। বাধ্য হয়ে সাধারণ গ্রাহকদের তাদের কাছে ধরণা দিতে হয়। দালালির বদৌলতে গত কয়েক বছরের ব্যবধানে রহিম মিয়া অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছে।
ভুক্তভোগি গ্রাহকরা অভিযোগ করে জানান, গুতিয়াবো এলাকার রহিম মিয়া ও তার ছেলে রিফাত রূপগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে এলাকার শত শত মানুষের কাছ থেকে নতুন মিটার দেওয়ার নাম করে অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতিটি মিটার বাবদ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করছে। তারপরও নতুন মিটার সংযোগ পেতে গ্রাহককে অপেক্ষায় থাকতে হয় মাসের পর মাস। এরপরও চলে নানা অজুহাত। গ্রাহকের বৈধ সংযোগ থেকেই অবৈধ সংযোগ দিচ্ছে উপশহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও শিল্প কারখানায়। সেখান থেকেও তারা হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গ্রহকরা অভিযোগ করেও কোন ফল পাচ্ছে না।
গুতিয়াবো এলাকার সেলিনা বেগম জানান, তিনি রহিম মিয়াকে ৪৩ হাজার বিনিময় তিনটি মিটার সংযোগ নিয়েছেন। এ তিনটি মিটার সংযোগ নিতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৫ মাস। তিনি অভিযোগ করে বলেন, একটি বাতি, ফ্যান ও ফ্রিজ চালানো বাবদ তার বিদ্যুৎ বিল আসছে ২৩শ’ টাকা। বিষয়টি রহিম মিয়া জানালে তিনি বলেন প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা করে মানতি দিলে আপনার ৩ মিটারে বিল কমিয়ে দেওয়া হবে।
প্রতিবন্ধী রিপন চন্দ্র দত্তের বৈধ সংযোগ থেকে বিদ্যুৎ লাইন নিয়ে উপ-শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি ও সংযোগ দিয়ে রহিম মিয়া প্রতিমাসে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পরে রিপন চন্দ্র দত্ত ঐ সংযোগ দিতে অস্বীকার করলে তাকে শারীরিক নির্যাতন করে রহিম মিয়া ও তার ছেলে রিফাত মিয়া।
অভিযুক্ত রহিম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে বলেন, দালালি করি না। ওয়ারিংয়ের কাজ করি। যারা অভিযোগ করেছে তারা মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজ। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোনোয়ারুল ইসলাম ফিরোজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের অফিসে কোন দালাল নেই। তবে রহিম মিয়ার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে তা আমি তদন্ত করে দেখবো। প্রমান পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিব।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ