Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্তিত্ব হারাতে বসেছে দুই সিটির মিনি ডাস্টবিন প্রকল্প

সায়ীদ আবদুল মালিক : | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ময়লা আবর্জনার সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য হাতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। তারই অংশ হিসেবে দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রায় ৬ কোটি টাকা খরচ করে গত বছরের মাঝামাঝি সময় বসানো হয়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মিটি ডাস্টবিন। সিটি কর্পোরেশনের সঠিক তদারকির অভাবে ও জনসাধারণের অসচেতনতার কারণে এ প্রকল্পটি এখন অনেকটাই ভেস্তে যেতে বসেছে। দুই সিটির বিভিন্ন রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে এ মিনি ডাস্টবিনগুলো বসানোর আগে এ নিয়ে তাদের যথেষ্ঠ পর্যালোচনা ছিলনা বলে নগর বিশেজ্ঞরা মনে করেন। তাদের মতে, নগরিকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এটি একটি ইতিবাচক উদ্যোগ হলেও এ নিয়ে দুই সিটি কর্পোরেশনেরই অবহেলা রয়েছে। এমন একটি পদক্ষেপ নেয়ার আগে পত্রিকা ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে নগরবাসিকে এর ব্যবহার সংক্রান্ত বিষয়ে সচেতন করতে পারতো। তবেই এর সঠিক ব্যবহার হতো। বর্তমানের এ প্রকল্পটি প্রায় ধ্বংসাবস্থায় উপনিত হয়েছে। এ অস্থা থেকে ফেরাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ইতোমধ্যে মিনি ডাস্টবিনগুলোর সংস্কার কাজ হাতে নিয়েছে। তবে, এ বিষয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশন এখনও কোনো পরিকল্পনা নেয়নি বলে জানা গেছে।
মিনি ডাস্টবিনটি যে ফ্রেমের মধ্যে ঝুলানো হয়েছিল এখন শুধুু সেটিই অবশিষ্ট রয়েছে। আর যে পাত্রটি ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য দেয়া হয়েছিল সেটির কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকা, পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকাসহ উত্তর সিটির ফারমগেট, বিজয় সরণী, মহাখালী, সৈনিক ক্লাব, বনানী, তেজগাঁও শাহবাগসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। এ বিষয়টি নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া।
ফার্মগেট এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোহাম্মদ সরোয়ার আলম বলেন, সিটি কর্পোরেশন যে কাজটি করেছিল, তার জন্য অবশ্যই তারা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে এর ধারাবাহিকতার প্রয়োজন ছিল। ডাস্টবিন সংস্কারে উদ্যোগ নিচ্ছে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন
পুরান ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাজিন আহসান বলেন, আমরা কেনো জানি ভালো কাজগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারছি না। রাস্তার মোড়ে মোড়ে ডাস্টবিন বসানো সিটি কর্পোরেশনের একটি ভালো উদ্যোগ ছিল। এখন এগুলো তদারকি করা দরকার। না হলে এগুলো করতে যে টাকা ব্যয় হয়েছে সেগুলো অপচয় ছাড়া কিছু না। আশা করবো যারা দায়িত্বে আছেন তারা বিষয়টি লক্ষ্য করবেন। উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, দুই সিটিতে এ মিনি ডাস্টবিনগুলো বসাতে প্রায় ছয় কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, ডিএসসিসি’র বিভিন্ন স্থানে ৫ হাজার ৭০০ মিনি ডাস্টবিন বসানো হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ডাস্টবিন নষ্ট হয়েছে, কিছু ডাস্টবিন চুরি হয়েছে কিছু ডাস্টবিন নানা কারণে ব্যবহার অযোগী হয়েছে। আমাদের কাছে এর সঠিক তথ্য আছে। এগুলো মেরামত বা এ নিয়ে পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের লোকেরা সেগুলো তদারকি করছে। যেগুলো একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে সেগুলো নতুন করে লাগানো হবে। আর যেগুলো মেরামতের যোগ্য, সেগুলোকে মেরামত করা হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা এক হাজার মিনি ডাস্টবিন বসিয়েছি। সেখান থেকে ১৭১ টি ডাস্টবিন একেবারে ভেঙে গেছে, কোনোটির হাতল ভেঙে গেছে। এরকম তথ্য আমাদের কাছে আছে। এগুলো মেরামত করা বা পরবর্তী পরিকল্পা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপাতত আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। পরবর্তীতে নতুন করে করা হলে তখন দেখা যাবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ