বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিশেষ সংবাদদাতা, ময়মনসিংহ ব্যুরো : মাত্র একদিন আগে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে নান্দাইলে এনে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক পরিচয়ে জনসভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন আনোয়ারুল আবেদিন তুহিন এমপি। কিন্তু পরের দিনই তার এ পদটি অবৈধই ঘোষণা করলো ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ।
একই সঙ্গে কেন্দ্রের নির্দেশে দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ভূইয়ার নেতৃত্বাধীন কমিটিকেও বৈধতা দেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হয়েছে এমপি তুহিনকেও। দলীয় পদবীতে স্থানীয় এমপি হোঁচট খাওয়ায় রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়েছেন তার অনুসারীরা। জানা যায়, ঋণ খেলাপির দায়ে ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছিলেন মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুস সালাম। আর এ সুযোগে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন স্থানীয় রাজনীতিতে অনেকটাই অপরিচিত আনোয়ারুল আবেদিন তুহিন। মনোনয়নের পর নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদটিতেও সাবেক এমপি সালামকে হটিয়ে নিজের কবজায় নিতে চেয়েছিলেন এমপি তুহিন। তার এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে গুরু দায়িত্বও পালন করেছিলেন তার আতœীয়, জেলা আওয়ামীল ীগের সাবেক সভাপতি ও ধর্মমন্ত্রী প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান। ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ওই সময়কার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকারের অনুপস্থিতিতে আকস্মিকভাবে সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দিয়ে এমপি তুহিনকে আহবায়ক করে ৬২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন তৎকালীন সভাপতি প্রিন্সিপাল মতিউর। তবে জেলার ঘোষিত ওই কমিটি বাতিল করে কেন্দ্র মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুস সালামের কমিটিকেই বহাল রাখে। এ নিয়ে ওই সময় দু’গ্রæপই মারমুখী অবস্থান নেয়ায় বেশ কয়েক দফা ১৪৪ ধারার খপ্পড়ে পড়ে নান্দাইলের বাসিন্দারা। এমপি’র লোকজনের হাতে প্রাণ যায় উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের ভাই স্থানীয় কৃষক লীগ নেতা আবুল মনসুরের। সূত্র জানায়, কেন্দ্রের ওই সিদ্ধান্ত না মেনে নিজেকেই স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক দাবি করে আসছিলেন স্থানীয় এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিন। এমনকি গত রোববার নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে নিয়ে জনসভাও করেন তিনি। সেই সভায় তিনি সভাপতিত্বও করেন। এর ঠিক একদিনের মাথায় গত সোমবার ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এমপি তুহিনকে নয়, মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুস সালামের নেতৃত্বাধীন কমিটিকেই বৈধতা দেয়া হয়। সাবেক এমপি আব্দুস সালাম বরাবরে দেয়া চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনা অনুসারে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিজবাহ উদ্দিন সিরাজ আমাদের অবহিত করেছেন, মেজর জেনারেল (অব:) আব্দুস সালাম ও সিরাজুল ইসলাম ভূইয়ার নেতৃত্বাধীন কমিটি বৈধ কমিটি হিসেবে উপজেলা আওয়ামীলীগের কর্মকান্ড পরিচালনা করবে।’
চিঠিতে আরো বলা হয়, জেলার দপ্তর থেকে চিঠির একটি কপি স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্যের কাছেও প্রেরণ করা হয়েছে।
এসব বিষয়ে ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অবশ্যই আমি মেনে নিবো। আহবায়ক হিসেবেই জনসভায় সভাপতিত্ব করেছি। তখন এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত ছিল না। এখন বাধ্য হয়েই মানতে হচ্ছে। তবে এ কমিটির বিষয়ে আমার আপত্তি আছে। আমি বিষয়টি কেন্দ্রের সামনে উপস্থাপন করবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।