Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কলারোয়ায় টিআর কাবিটা প্রকল্পে বরাদ্ধ প্রায় ৪ কোটি টাকার বেশির ভাগ লুটপাট

| প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


কলারোয়া (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা : ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে কলারোয়ায় টিআর কাবিটা প্রকল্পে বরাদ্ধ প্রায় ৪ কোটি টাকার সিংহভাগ লুটপাট করা হয়েছে। ফলে কলারোয়ার উন্নয়ন চরম ভাব ব্যাহত হয়েছে। জেলা ত্রাণ দপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে কলারোয়া উপজেলায় দুই দফা সাধারণ কোটায় এবং দুই দফা বিশেষ কোটায় গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) ও রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির আওতায় ৩ কোটি ৮৭ লাখ ৯০ হাজার ৬শ’ ৯৬ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়। মোট বরাদ্ধ দুই ভাগ করে অর্ধেক টাকা বিভিন্ন রাস্তাঘাট, প্রতিষ্ঠান এবং দুঃস্থ জনসাধারণের মধ্যে সৌর বিদ্যুত স্থাপনে ব্যয় করা হয়েছে। বাকি টাকা ক্ষমতাসীন দলের চেয়ারম্যান, মেম্বার ও নেতাকর্মীদের হাতে দেওয়া হয় রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, এতিমখানা নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে। কিন্তু ভুয়া প্রকল্প বরাদ্ধ নিয়ে একই কাজের জন্য একাধিক নামে প্রকল্প বরাদ্ধ নিয়ে, স্থান বিশেষে কাজ না করে এবং কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে কাজ করায়ে বরাদ্ধ টিআর কাবিটার টাকা তুলে আত্মসাত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়। বিধি অনুযায়ী প্রকল্পের নাম, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ্য, বরাদ্ধের পরিমাণ, কাজের মুজুরী সম্বলিত সাইন বোর্ড না দিয়ে লোক চক্ষুর আড়াল করে প্রকল্প বরাদ্ধ হরিলুট করা হযেছে। সূত্র মতে, একই কাজে একাধিক টিআর বা কাবিটা প্রকল্প বরাদ্ধ সম্পূর্ণ বেআইনী। কিন্তু বিশেষ কাবিটা ২য় পর্যায়ে ৭ নং সিরিয়ালে দাড়কী জয়নদ্দীনের বাড়ি হতে সোনাই নদীর ধার দিয়ে হিজলদী আনছার শেখের বাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা নির্মাণে ২ লাখ টাকা এবং একই রাস্তা সাধারণ কাবিটা ২য় পর্যায়ে ৭ নং সিরিয়ালে হিজলদী আনছার শেখের বাড়ি হতে দাড়কী জয়নদ্দীনের বাড়ি পর্যন্ত মাটির রাস্তা সংস্কার নামে আরো ২ লাখ ১১ হাজার ৯২৬ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, একই রাস্তায় দুই নামে দুইবার বরাদ্ধ উত্তোলন হলেও আনুঃ ৫০ হাজার টাকার মাটি দিয়ে বাকি টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। সাধারণ কাবিটা ২য় পর্যায়ে ১ নং সিরিয়ালে জয়নগর বদরুনেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের মাঠ সংস্কারে ১ লাখ ২৬ হাজার ১৪ টাকা এবং একই খাতের ১৫ নং সিরিয়ালে একই বিদ্যালয়ের মাঠ সংস্কারসহ ৩ বাড়িতে সোলার প্রদানে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকার বরাদ্ধ উত্তোলন করা হয়েছে। একই বিদ্যালয়ের মাঠ সংস্কারে দুইবার বরাদ্ধ উত্তোলন করা হলেও আনুঃ ৪০ হাজার টাকার কাজ করা হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক শিক্ষক জানায়। এদিকে বিশেষ টিআর ১ম পর্যায়ে ২নং সিরিয়ালে অস্বিত্ববিহীন ‘মাদার কেয়ার সেণ্টার উপজেলা পরিষদ’ নামে একলাখ টাকার বরাদ্ধ উত্তোলন করা হয়েছে। কোন কাজ না করে বিশেষ টিআর ২য় পর্যায়ে ৩ নং সিরিয়ালে মুরারীকাটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটে বরাদ্ধ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করা হয়েছে বলে স্কুলের সাবেক সভাপতি বুলু আহমেদ জানায়। কর্মসৃজনের শ্রমিক দিয়ে কাজ করিয়ে সাধারণ টিআর ১ম পর্যায়ের ১৮নং সিরিয়ালে পাচপোতা মইদুলের বাড়ি হতে চান্দার বিল অভিমুখে রাস্তা পুনঃ নির্মাণে বরাদ্ধ ১ লাখ ৯৩ হাজার ১শ’ ৩৫ টাকা তুলে আত্মসাত করা হয়েছে। এভাবে সমগ্র উপজেলায় টিআর ও কাবিটার সিংহভাগ প্রকল্প বরাদ্ধ লুটপাট হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক প্রাপ্ত কৃষাণী উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের মহিলা মেম্বর আকলিমা খাতুন জানায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ঘুষের ১১ হাজার টাকা অগ্রিম না দিতে পারায় তাকে অপমান করা হয় এবং টিআর প্রকল্পে ১ লাখ টাকার বিল আটকে দেয়। এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য অফিসে গিয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ