পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আমদানি ব্যয় বাড়লেও সে অনুযায়ী বাড়ছে না রফতানি আয়। ফলে বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ২৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ৮২ কোটি ডলার বা ৩৪৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে পোশাক খাতে নানা সংস্কারের পরেও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি তেমন বাড়েনি। গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সামান্য বেড়েছে প্রবৃদ্ধি। পোশাক মালিকেরা এজন্য অবকাঠামোগত সমস্যার পাশাপাশি সরকারি সহায়তার ঘাটতিকে দায়ী করেছেন। অন্যদিকে, বিশ্লেষকেরা বলছেন, পণ্য বহুমুখী না করার কারণেই রপ্তানি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি ব্যয় যে হারে বেড়েছে, সে তুলনায় রফতানি আয় না বাড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমশই বাড়ছে। একই সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স কমায় ও সেবা খাতের ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে চলতি হিসাবের ভারসাম্য। এ অবস্থা বিদ্যমান থাকায় দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ভালো নয় বলে মনে করছেন তারা।
সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। এর মূল কারণ সার্বিকভাবে আমদানি যে হারে হয়েছে সেই হারে রফতানির প্রবৃদ্ধি বাড়েনি। গত বছরের তুলনায় রফতানি প্রবৃদ্ধি ৮ থেকে ৯ শতাংশে কমেছে। যে কারণে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাইতে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে ২৯৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় হয়েছে ৪০০ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ হিসাবে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ১০৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৩৪৭ শতাংশ বেশি।
২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরজুড়ে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল। এতে বৈদেশিক দায় পরিশোধে সরকারকে বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৪৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণাত্মক হয়েছে। যা এর আগের অর্থবছরে একই সময়ে উদ্বৃত্ত ছিল ৩৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ সময়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকদের বেতনভাতা পরিশোধে সেবামূল্য ব্যয় বেশি হওয়ায় চলতি হিসাবে ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সে হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু গত কয়েক বছর উদ্বৃত্তের ধারা অব্যাহত থাকলেও গেল অর্থবছরে ঋণাত্মক ধারায় চলে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাইয়ে সেবাখাতে বিদেশিদের বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়েছে ৭৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ৩২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এ হিসাবে সেবা বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ৯০ লাখ ডলারে। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ছিল (ঘাটতি) ২৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে মোট ২৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এর মধ্যে নিট এফডিআই (বৈদেশিক বিনিয়োগ) এসেছে ১৬ কোটি ডলার। যা আগের বছরে এসেছিল ১৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ হিসাবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিট এফডিআই বেড়েছে ৯ দশমকি ৫৯ শতাংশ।
ইপিবির তথ্য অনুসারে, গত অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৮১৫ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় মাত্র শূন্য দশমিক দুই শূণ্য শতাংশ বেশি। তবে গত অর্থ বছরে এ খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ছিল ৩ হাজার ৩৮ কোটি ডলার। রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগ আসছে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এ খাতের ওপর ভর করে আগামী চার বছরে উচ্চ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি আশা করছে সরকার। এ লক্ষ্যে গত কয়েক বছরে কারখানায় কাজের পরিবেশও উন্নয়ন করেছে মালিক পক্ষ। এরপরেও রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় হতাশ তারা।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে রপ্তানিতে কিছুটা গতি এলেও খুব বেশি আশাবাদী নয় মালিক পক্ষ। রপ্তানী প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে চট্টগ্রাম বন্দরের জটিলতা দূর করাসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নের তাগিদ দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
অন্যদিকে, রপ্তানী প্রবৃদ্ধি বাড়াতে পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদেরা। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে ৫৫২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে নিট পোশাকে আয় হয়েছে ২৮৭ কোটি ডলার এবং ওভেন পোশাকের রপ্তানি থেকে এসেছে ২৬৫ কোটি ডলার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।