Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নার্সের অবাঞ্ছিত ডাক্তারীপনায় মৃত্যুর সাথে লড়ছে অন্ত:সত্বা শাহনাজ

| প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : নার্সের অবাঞ্ছিত ডাক্তারীপনার শিকার হয়ে মৃত্যুর সাথে লড়ছে শাহনাজ পারভীন (৩৫) নামে এক গর্ভবতী মহিলা। মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটেছে। এই অঘটনটি ঘটিয়েছেন একই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স মার্জিয়া বেগম ও পারভীন আক্তার। গর্ভবতী মহিলা এখন বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছে। তার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, মনোহরদী উপজেলার শুকুন্দী ইউনিয়নের দিঘাকান্দী গ্রামের দিনমুজুর আবুল কালামের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন ৬ মাসের অন্ত:সত্বাবস্থায় পেটে ব্যথা অনুভব করলে গত রোববার মনোহরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার দেখাতে যায়। সেখানে তাদের পরিচিত নার্স পারভীন আক্তার কোন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই তাকে লেবার রুমে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মহিলার স্বামী কালামকে জানায় যে, মহিলার গর্ভের শিশুটি মারা গেছে। এ কথা বলে নার্স পারভীন ঢাকায় চলে যায়। দায়িত্ব দিয়ে যায় তার সতীর্থ নার্স মার্জিয়া আক্তারকে। নার্স মার্জিয়া আক্তারও কোন ডাক্তারের আশ্রয় না নিয়ে নিজেই হাতুড়ে ডাক্তারীপনা শুরু করে দেয়। সে শাহনাজ পারভীনকে লেবার রুমে নিয়ে প্রথমে ফোরসেফ ও পরে হাত দিয়ে গর্ভের বাচ্চাটিকে টেনে ছিড়ে অর্ধেক বাইরে বের করে আনে। এ অবস্থায় শাহনাজ পারভীনের ব্যাপক রক্তপাত হতে থাকলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এই অবস্থায় নার্স মার্জিয়া, শাহনাজ পারভীনের স্বামী কালামকে জানায় যে, শাহনাজের অবস্থা ভাল নয়, তাকে ঢাকায় নিয়ে যান। এ কথা বলে সে হাসপাতাল থেকে দ্রæত সরে পড়েন। এই অবস্থায় কালাম তার স্ত্রী শাহনাজকে প্রথমে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা চালায়। কিন্তু এখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা করার পরও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে দুটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শাহনাজের গর্ভ থেকে শিশুটির বাকী অর্ধেক অপসারণ করা হয়। এরপরও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য আইসিইউতে নিয়ে রাখা হয়। তার অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত নার্স মার্জিয়া বেগম সাংবাদিকদের নিকট ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শফীকুল আলম বলেন, রোগীর স্বামী মোবাইল ফোনে ঘটনা সম্পর্কে তাকে অবহিত করেছেন। লিখিত অভিযোগ দিলে নার্সদ্বয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ