বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দুতে ডাকসু
৫ জন ছাত্র প্রতিনিধিসহ পূর্ণাঙ্গ সিনেট
বাণিজ্যিক সান্ধ্য কোর্সের লাগাম টেনে ধরা
বহিরাগত যানবাহন নিয়ন্ত্রণ
হল ও গ্রন্থাগারের আসন সঙ্কট দূরীকরণ
সকল ছাত্র সংগঠনের সহাবস্থান
গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো
এহসান আব্দুল্লাহ: গত ০৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ২৮ তম ভিসি হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানকে। এর পূর্বে তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রশাসন বিভাগের প্রো-ভিসি ছিলেন। রাষ্ট্রপতি এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক ভিসি হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।
এর পূর্বে সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এর নিকট সাধারণ শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত নিজেদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট নানা দাবির শীর্ষে ছিল ডাকসুর বাস্তবায়ন। এবারও তার কোন ব্যত্যয় নেই। নতুন ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানের নিকটও এই একই দাবি করেন শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতারা। অধিকাংশ শিক্ষার্থীই জানান ডাকসু বাস্তবায়িত না হলে এই পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের কোন কাজে আসবেনা। বরং এটি পূর্বের ধারাবাহিকতারই নামান্তর মাত্র বলে বিবেচিত হবে। তাই তারা নতুন ভিসির নিকট বিশ^বিদ্যালয়ের সকল অনিয়ম এর অবসান ও ছাত্র অধিকারের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দেখতে চান। বিশ^বিদ্যালয়ের সুষ্ঠ গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে তারা দ্রæত পূর্ণাঙ্গ সিনেট নির্বাচন ও ৫ জন ছাত্র প্রতিনিধি দেখতে চান বলেও মতামত দিয়েছেন।
হলে আসন সঙ্কট ও পড়াশোনার সুবিধা সহ বিশ^বিদ্যালয়ের নানা সমস্যার সমাধানের প্রত্যাশাও তাদের কন্ঠে উঠে আসে।
এ ব্যাপারে শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আরিফ ইনকিলাবকে বলেন, ভিসির নিকট শিক্ষার্থীদের সবসময় একটিই চাওয়া ছিল, তা হলো ডাকসু। ডাকসু না হলে কেউ শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলেতে পারবেনা। শিক্ষার্থীরা সবসময়ই অবেহেলিত ও বঞ্চিত হবে।
ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি সংসদের সভাপতি তুহিন কান্তি দাস ইনকিলাবকে বলেন, নতুন ভিসি বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী সিনেট পূর্ণাঙ্গ করবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা। সিনেটে ৫ জন ছাত্র প্রতিনিধির অংশগ্রহন নিশ্চিত করে ক্যাম্পাসে সকল ছাত্র সংগঠনের সহবস্থান নিশ্চিত করবেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমান ভিসি পূর্বের নিয়মে চলতে থাকলে ছাত্র অধিকার বলে কিছুই থাকবেনা। তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দিকেও ভিসির সুদৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ছাত্র ফেডারেশন ঢাবি সংসদের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির ইনকিলাবকে বলেন, প্রথমে তাকে অভিনন্দন জানাতে চাই। আশা করি তিনি খুব দ্রæতই ডাকসু নির্বাচনের পদক্ষেপ নিবেন। এবং সেই সাথে শিক্ষক নিয়োগের অনিয়ম কাটিয়ে তাতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবেন। একটি একক ছাত্র সংগঠনের কর্তৃত্ব থেকে বিশ^বিদ্যালয়কে মুক্ত করে প্রশাসনের ক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে বিভিন্ন বিভাগে নামে বেনামে সান্ধ্য কোর্সের নামে এইসব বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ইনকিলাবকে বলেন, আমরা আশা করি তিনি সর্বপ্রথম সকল ছাত্র সংগঠনের সহবস্থান নিশ্চিত করার মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন। পূর্বের সকল অনিয়ম, প্রশ্নফাঁস ও ভর্তি বাণিজ্য ইত্যাদির সুষ্ঠ তদন্ত করে অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করবেন।
ঢাবি ছাত্রদলের সেক্রেটারী আবুল বাশার সিদ্দিক ইনকিলাবকে বলেন, তিনি যাতে বিশ^বিদ্যালয়ের সকল ছাত্রের অবিভাবক হিসেবে আবির্ভূত হন সেই প্রত্যাশাই করবো। এবং বিশ^বিদ্যালয়ে সকল ছাত্র সংগঠনের সহবস্থান নিশ্চিত করবেন। ভিসি নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ছাত্র প্রতিনিধিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন। শিক্ষক প্রতিনিধিরা কেবল তাদের সমস্যার কথাই বলেন, ছাত্রদের সমস্যার কথা বলার মতো সিনেটে কেউ নেই। ফলে বিশ^বিদ্যালয়ের কোন সিদ্ধান্তে ছাত্রদের কোন অগ্রাধিকার থাকেনা। তাই ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য ডাকসু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। ডাকসু নির্বাচন হলে যেই নেতৃত্বে আসুক না কেন তারা সাধারণ ছাত্রদের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসবেন।
ঢাবি ছাত্রলীগের সেক্রেটারী মোতাহার হোসেন প্রিন্স ইনকিলাবকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় বর্তমান ভিসি ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাবেন এটাই প্রত্যাশা। সকল ছাত্রদের অধিকার নিশ্চিত করে তিনি ঢাবিকে মেধা, তথ্য ও জ্ঞানের দিক দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আশা করি। তাছাড়া তিনি অতি দ্রæতই ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন বলে আশা রাখি। ঢাবি ছাত্রলীগ বিশ^াস করে তারা নিয়মিত ছাত্রদের অধিকার নিয়ে রাজনীতি করে ফলে ডাকসু নির্বাচন হলে তারা এগিয়ে থাকবে এবং ছাত্র অধিকার নিয়ে কাজ করবে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সেক্রেটারী এস এম জাকির হোসাইন ইনকিলাবকে বলেন, নতুন ভিসির নিকট আমাদের প্রত্যাশা তিনি ছাত্রদের অধিকার নিশ্চিত করবেন। ছাত্রদের আবাসিক সঙ্কট দূর করে ঢাবিকে শতভাগ আবাসিক করার চেষ্টা করবেন। বিভিন্ন হলের খাবারের মান অত্যন্ত নি¤œমানের তাই তিনি এই ব্যাপারে নজর দেবার পাশাপাশি সকল হলগুলোতে খেলাধূলার সরঞ্জাম ও বিনোদনের পর্যাপ্ত সুবিধা নিশ্চিত করবেন। এছাড়াও ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও বিজ্ঞান গ্রন্থাগারে ছাত্ররা আসন সংকটের কারনে ভোগান্তি পোহায় ফলে তিনি গ্রন্থাগারের সংস্কার সহ আসন বাড়ানোর ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত করবেন। বিশ^বিদ্যালয়ের ভিতরে বহিরাগত যানবাহন নিয়ন্ত্রণের দিকে তিনি মনোযোগী হবেন। এইসব বহিরাগত যানের কারনে শিক্ষার্থীরা প্রায়শই দূর্ঘটনার শিকার হন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো তিনি ডাকসু নির্বাচনের ব্যাপারে যতদ্রæত সম্ভব পদক্ষেপ নিবেন। এটা সকল ছাত্রদের প্রাণের দাবী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।