Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভোলা-বরিশাল ও ভোলা-ল²ীপুর ফেরি সেক্টরে যানবাহন পারাপারের চেয়ে অপেক্ষমাণ বেশি

| প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : ঈদ পরবর্তি কর্মস্থলমুখি জন স্রোত হৃাসের সাথে দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরগুলোতে যানবাহনের বাড়তি চাপ কিছুটা লাঘবের পাশাপাশি মাওয়া সেক্টরে নাব্যতা উন্নয়নের ফলে পারাপার কিছুটা নির্বিঘœ হয়েছে। তবে এখনো প্রতিদিন হাজার খানেক যানবাহন দেশের প্রধান ফেরি সেক্টরগুলোতে অপেক্ষমান থাকছে। এমনকি ভোলা-ল²ীপুর ও ভোলা-বরিশালের মধ্যবর্তি লাহারহাট-ভেদুরিয়া ফেরি সেক্টরে পারপারের প্রায় সম পরিমান যানবাহন অপেক্ষমান থাকছে। গত তিন দিনে রাজধানী সহ দেশের পূর্বাংশের সাথে দক্ষিন ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় অনেকটা উন্নতি ঘটলেও এখনো প্রতিদিন গড়ে ৭-৮শ যানবাহন অপেক্ষায় থাকছে। পদ্মায় আকষ্মিক ভয়াবহ নাব্য সঙ্কটে মাওয়া সেক্টরে ফেরি চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যাবার মুখে বিআইডবিøউটিএ গত ২অক্টোবর রাত থেকে জরুরী ভিত্তিতে ড্রেজিং শুরু করে। পাঁচ দিনের মধ্যে ঐ ফেরি রুটটির লৌহজং চ্যানেল ও টার্ণিং পয়েন্টে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।
গতকাল পর্যন্ত নৌপথটির গভীরতা প্রায় ১০ফুটে উন্নীত করা সম্ভব হলেও উজানের বালু মিশ্রিত শ্রোত বার বারই পদ্মার তলদেশ ভড়াট করে দিচ্ছে। এমনকি গত দুদিনে পদ্মায় পুনরায় স্রোতের তীব্রতা সহ পানিতে বালুর পরিমান আরো বেড়েছে। ফলে ফেরি পারপারে সময়ও বাড়ছে। এতেকরে মাওয়া সেক্টরে বর্তমানে চলমান সংরক্ষন ড্রেজিং সম্পন্ন করে পদ্মায় নাব্যতা ধরে রাখতে ১৫অক্টোবর থেকে অন্তত দুমাস উন্নয়ন ড্রেজিং অব্যাহত রাখতে হতে পারে বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে।
তবে এখনো মাওয়া সেক্টরের শিমুলিয়া প্রান্তের টার্নিং পয়েন্ট থেকে লৌহজং চ্যানেল পর্যন্ত প্রায় ৪কিলোমিটার এলাকা হ অনেকটাই ‘ওয়ান ওয়ে’ হয়ে আছে। এখানে চ্যানেল কিছুটা সরু থাকায় এক প্রান্ত থেকে রো-রো বা ডাম্ব ফেরি প্রবেস করলে অপর প্রান্ত থেকে কোন নৌযান প্রবেশ করতে পারছে না। বিআইডবিøউটিএ’র দায়িত্বশীল মহল অবশ্য আজকালের মধ্যেই এসংকট সমাধানের কথা জানিয়েছেন। এখনো দিনরাত ৭-৮টি ড্রেজার মাওয়া সেক্টরে নাব্যতা উন্নয়নে কাজ করছে। গতকাল সকালের পূর্ববর্তি ২৪ঘন্টায় বিআইডবিøউটিসি’র ফেরি সেক্টরগুলোতে ৭হাজারেরও বেশী যানবাহন পারপার সম্ভব হলেও এসময় অপেক্ষমান ছিল প্রায় হাজারখানেক। যারমধ্যে পাটুরিয়া ও মাওয়াতে সাড়ে ৩শ করে যানবাহন অপেক্ষমান ছিল। এসময়কালে পাটুরিয়া সেক্টরে ৪হাজার ৭৩৮টি এবং মাওয়া সেক্টরে ১হাজার ৭৭৬টি যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হয়।
একই সময়ে চাঁদপুর-শরিয়াতপুর সেক্টরে ১৬৯টি যানবাহন পারাপার করেছে বিআইডবিøউটিসি। এসময়ে দেশের দীর্ঘতম ফেরি রুট ভোলা-ল²ীপুর সেক্টরে ১৩০টি যানবাহন পারাপার সম্ভব হলেও অপেক্ষমান ছিল আরো ১৪০টি। পাশাপাশি ভোলা-বরিশালের মধ্যবর্তি লাহারহাট-ভেদুরিয়া রুটে আড়াইশ যানবাহন পারাপারের পরেও আরো ১২৫টিরও বেশী যানবাহন অপেক্ষমান ছিল।
বিগত ঈদ উল আজহার আগে থেকেই ভোলা-ল²ীপুর এবং ভোলা-বরিশাল ফেরি সেক্টরে যথেষ্ঠ বিশৃংখলা অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রাম-বরিশাল-খুলনা-মোংলা মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা বাড়লেও তার দুটি ফেরি সেক্টরে ফেরির সংখ্যা বাড়েনি। ভোলা-ল²ীপুর সেক্টরে মাত্র ৩টি কে-টাইপ ও ভোলা-বরিশাল সেক্টরে ৩টি ইউটিলিটি ফেরি চলাচল করছে। এমনকি এসব সেক্টরে রাতের বেলা কোন ফেরি চলছে না। উপরন্তু ইউটিলিটি ৩টি ফেরির মধ্যে ১টি প্রায়ই বিকল থাকায় যানবাহন পারাপারে সংকট আরো বাড়ছে।
এদিকে দেশের প্রধান দুটি ফেরি সেক্টর পাটুরিয়া ও মাওয়া’তে ঈদ পরবর্তি যানবাহনের বাড়তি চাপ কিছুটা প্রশমিত হলেও অপেক্ষমানের সাড়ি খুব একটা কমছে না। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত ৯সেপ্টেম্বর পাটুরিয়া সেক্টরে সাড়ে ৬হাজারেরও বেশী যানবাহন পারপারের পরেও অপেক্ষমান ছিল ৫শতাধীক যানবাহন। ঐদিন মাওয়া সেক্টরে দুই হাজারের বেশী যযানবাহন পারাপার সম্ভব হলেও অপেক্ষমান ছিল আরো দুই শতাধীক যানবাহন। ১০সেপ্টম্বর পাটুরিয়া সেক্টরে প্রায় ৬হাজার যানবাহন পারপারের পরেও ৩শতাধীক অপেক্ষমান ছিল। ঐদিন মাওয়া সেক্টরে ২হাজার দুশ যানবাহন পারাপার সম্ভব হলেও অপেক্ষমান ছিল আড়াউশরও বেশী। পক্ষান্তরে ১১সেপ্টম্বর পাটুরিয়া সেক্টরে ৫সহ¯্রাধীক যানবাহন পারপারের পরেও অপক্ষেমান ছিল প্রায় ৩শ। ঐদিন মাওয়া সেক্টরে ২হাজার ৫০টির মত যানবাহন পারাপার করা সম্ভব হলেও অপেক্ষমান ছিল সাড়ে ৫শরও বেশী। ফেরি বিকল বা অচল থাকাও এসেক্টরে যানবাহন পারপারের দীর্ঘসূত্রিতার জন্য দায়ী বলে জানা গেছে। গতকালও পাটুরিয়া সেক্টরে ১৮টির মধ্যে ৩টি ও মাওয়া সেক্টরে ১৭টির মধ্যে ৪টি ফেরিই বিকল ছিল। তবে যানবাহনের সংখ্যা বাড়ায় পাটুরিয়া থেকেই রো-রো ফেরি ‘হজরত খাজা এনায়েতপুরী(রঃ)’ সহ কে-টাইপ ফেরি ‘ক্যামেলিয়া’কে মাওয়া সেক্টরে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। আজ সকাল থেকে এদুটি ফেরি মাওয়া সেক্টরের কাঠালবাড়ী-শিমুলিয়া রুটে যানবাহন পারাপারে যোগ দেবে বলে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ