পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগামী বছর থেকে নতুন পরিমার্জিত বই পাবে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। পর্যায়ক্রমে সকল শ্রেণির বইয়ের মান বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। গতকাল (মঙ্গলবার) সচিবালয়ে পরিমার্জিত বই হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন। মাধ্যমিক স্তরের ১১টি পাঠ্যবই পরিমার্জন করে সেগুলো শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের হাতে তুলে দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রফেসর মোহাম্মদ কায়কোবাদ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবাল নবম-দশম শ্রেণির গণিত, উচ্চতর গণিত, বিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও জীব বিজ্ঞানের পরিমার্জিত বই মন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। এর আগে বাংলা সাহিত্য, ইংলিশ ফর টুডে, বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, বাংলাদেশ ও বিশ্ব সভ্যতা এবং অর্থনীতির পরিমার্জিত বই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে হস্তান্তর করেন শিক্ষাবিদরা।
এসময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নবম ও দশম শ্রেণির পরিমার্জিত পাঠ্যবইগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে অনেক আকর্ষণীয় ও সহজপাঠ্য হবে। বইয়ের মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তিনি বলেন, নতুন পরিমার্জিত বইগুলো আগামী বছর শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেব। পর্যায়ক্রমে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অন্যান্য বইয়ের মানও বাড়ানো হবে। নাহিদ বলেন, বইগুলোর মান উন্নত করা হয়েছে। এর ফলে পাঠ্যপুস্তকের মানের দৃশ্যমান অগ্রগতি হল। এগুলোর উপস্থাপনা সুন্দর ও বইগুলো সুখপাঠ্য হবে। শিক্ষার্থীরা পড়ে নিজেরাই বুঝতে পারবে। নতুন পরিমার্জিত বইগুলোকে চমৎকার উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাঠ্যবইয়ের মান বৃদ্ধির প্রভাব অন্যান্য ক্ষেত্রের মান বৃদ্ধিতেও পড়বে। শিক্ষকের মান বৃদ্ধি, ভৌত অবকাঠামো সুন্দর হওয়া প্রয়োজন। শিক্ষকদের নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা আরো জোরদার করতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার মান কমছে না, বাড়ছে। তবে আমরা যে মানে পৌঁছতে চাই, সেটা হয়ত হচ্ছে না। শিক্ষার মান বৃদ্ধি করা সারা জগতের চ্যালেঞ্জ। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার ফলে বিরাট উৎসাহ সৃষ্টি করছে। ছেলেমেয়েদের স্কুলমুখী করছে। এখন সকল শিশুকে স্কুলে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। যদিও ঝরে পড়া এখনও চ্যালেঞ্জ।
হিসাববিজ্ঞানের পরিমার্জিত বই শিগগিরই পাওয়া যাবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে পরিমার্জিত বই তুলে দেওয়া হবে। শিক্ষাবিদদের সুপারিশের ভিত্তিতে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা করে পাঠ্যপুস্তক আরও সুখপাঠ্য, আকর্ষণীয় ও সহজ করতে গত ৮ জানুয়ারি দুটি কমিটি করে সরকার। একটি কমিটিকে ২০১২ সালের পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা করে পাঠ্যবই আরও পাঠযোগ্য করার সুপারিশ এবং আরেক কমিটিকে নবম-দশম শ্রেণির কয়েকটি বই পরিমার্জন করে সুখপাঠ্য, আকর্ষণীয় ও সহজ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, এবারের যে বড় কাজটি হয়েছে, আমার মনে হয় সেটি সকল মহলে প্রশংসিত হবে এবং আমাদের ছাত্ররা উপকৃত হবে। অনুষ্ঠানে জাফর ইকবাল বলেন, আমি সাহস করে ছয়টি বই পরিমার্জনের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। এখন এগুলো যারা ছাপাবে, তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া যাবে। পেইজ মেকিং কিংবা আর কিচ্ছু করতে হবে না। কিছু অনুরোধ ছিল যে বইগুলো রঙিন করতে হবে। উনারা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) অনুমোদন দিয়েছেন, এজন্য হয়তো তাদের কিছু বেশি ফান্ড লেগেছে। বলেছিলাম বিজ্ঞানের কিছু বিষয় আছে, সেগুলো ব্যাখ্যা করতে কিছু জায়গা বেশি দিতে হয়, কাজেই বইয়ে সাইজ বড় হতে পারে। উনারা আমাদের সেই ফ্রিডম দিয়েছেন। প্রফেসর জাফর ইকবাল বলেন, একটা ছেলে বা একটা মেয়ে বইটা হাতে নিলে তার মনটা ভালো হয়ে যায় যে, আহ কী সুন্দর বই! এটা আমার সারা জীবনের স্বপ্ন ছিল। আমার স্বপ্নটা নিজে নিজে করতে পারতাম না, যদি শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বাধীনতাটা না দিত।
আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি যাতে এটা নির্ভুল হয়। বই হাতে তুলে দিলে তাদের (শিক্ষার্থী) মনটা ভালো হয়ে যায়, তাহলে আমাদের পরিশ্রমটা স্বার্থক হয়েছে। আমরা পরিশ্রমের কোনো ঘাটতি করিনি। গত ১০ মাস আমি কোনো দিন রাত ২টার আগে ঘুমাইনি।
প্রফেসর কায়কোবাদ বলেন, শিক্ষার মান উন্নত করতে চাইলে খুব ভালো মানের পাঠ্যপুস্তক করতে হবে। ভালোমানের পাঠ্যপুস্তক প্রণিত হলে অবশ্যই শিক্ষার মান ভালো হবে। অনুষ্ঠানে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন কমিটির সমন্বয়ক চৌধুরী মুফাদ আহমদ এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ন চন্দ্র সাহা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।