রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, চান্দিনা (কুমিল্লা) থেকে: ট্যানারি মালিক ও বড় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে চামড়া শিল্প। এ সিন্ডিকেটের প্রভাবে এবার মাঠপর্যায়ে পানির দামে চামড়া বিক্রি হয়েছে। মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা সামান্য লাভবান হলেও ব্যক্তিপর্যায়ে চামড়ার দাম পাওয়া যায়নি। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুরবানির চামড়া বিক্রির অর্থে চলা মাদ্রাসা ও এতিমখানাসহ দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ। কুমিল্লার সবচেয়ে বড় চামড়ার মোকাম ইলিয়টগঞ্জ শনিবাার ছিল হাটবার। ঈদুল আজহার পর শনিবার প্রথম হাটে প্রায় ৩ কোটি টাকার চামড়া আমদানি হয়েছিল। এদিন সূর্য ওঠার আগেই কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ব্যবসায়ীরা চামড়া নিয়ে হাটে আসতে শুরু করেন। সকালে হাটে গিয়ে দেখা গেছে পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্য। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বাড়তে থাকে। এদিন হাটে সবমিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার গরুর চামড়া ও ২০ হাজার ছাগলের চামড়া আমদানি হয়। তবে চামড়ার দাম গত কুরবানি ঈদের তুলনায় প্রায় অর্ধেক। গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে প্রতি পিচ ৩শ’ থেকে ৮শ’ টাকায়। আর ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে ৮০শ’ থেকে ১২০ টাকায়। ইলিয়টগঞ্জ হাটে চামড়া বিক্রি করতে আসা দেবিদ্বার উপজেলার চুলহাঁস গ্রামের আনোয়ার জানান, তিনি ২০ পিস গরুর চামড়া নিয়ে এসেছেন। ১২ পিস ৫ হাজার ৮শ টাকায় বিক্রি করেছেন। বাকিগুলোর দাম ৩/৪ শ’র বেশি উঠছে না। গড়ে ৬শ’ টাকা করে তিনি এ চামড়া কিনেছেন। মুরাদনগর উপজেলার লাজৈর গ্রামের কবির হোসেন ইলিয়টগঞ্জ হাটে নিয়ে এসেছেন ছাগলের চামড়া। মাঠপর্যায়ে তিনি চামড়া কিনেছেন ৬৫/৭০ টাকা পিচ। হাটে দাম উঠেছে ১শ’ টাকা করে। চামড়া ব্যবসায়ী সাইফুল জানান, এবার চামড়ার বেঁধে দেয়া দাম কম হওয়ায় তিনি আগেভাগেই বাড়ি থেকে ১৪ পিস চামড়া সাড়ে ৮শ’ টাকা দরে বিক্রি করে দিয়েছেন। হাটে যে ক’টি চামড়া নিয়ে এসেছেন তার দাম ৩/৪শ’র বেশি উঠছে না। চান্দিনার সব্দুলপুর গ্রাম থেকে আসা ব্যবসায়ী মিজান ১৪টি চামড়া নিয়ে এলেও একটিও বিক্রি করতে পারেননি। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এবার আগে থেকেই বেঁধে দেয়া দর সম্পর্কে ধারণা থাকায় তারা মাঠপর্যায়ে কম মূল্যে চামড়া সংগ্রহ করেছেন। এ কারণে তাদের লোকসান হয়নি। তবে লাভের পরিমাণ কম।
চামড়া ব্যবসায়ী মনির, জলিল, মোশাররফ ও আক্তার জানান, ঈদ পরবর্তী প্রথম হাটে যথেষ্ট পরিমাণ চামড়া আমদানি হয়েছে। বেচাকেনাও বেশ চলছে। তারা জানান, এবার কুরবানির পশুর চামড়ার দাম গতবারের তুলনায় বেশ কম। এ কারণে তা ভারতে পাচারের আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন। এদিকে সূত্র জানিয়েছে, ছোট ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে নামমাত্র মূল্যে চামড়া সংগ্রহ করেছেন। কুরবানির গরুর চামড়া ২শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় এবং ছাগলের চামড়া ৪০ থেকে ৭০ টাকায় ক্রয় করেছেন তারা। হাটে এ চামড়া ৫শ’ থেকে হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। ফলে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও চামড়ার মূল অংশীদাররা চরম ক্ষতির শিকার হয়েছেন। কারণ কুরবানির এ চামড়ার টাকা মূলত মাদ্রাসা, এতিমখানা, হেফজখানাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও দরিদ্র মানুষকে দান করা হয়। সঠিক দাম না পাওয়ায় চামড়ার অর্থের ওপর নির্ভরশীল ওই প্রতিষ্ঠান ও দরিদ্ররাই বঞ্চিত হয়েছেন। আর এজন্য নেপথ্যের সিন্ডিকেটকেই দায়ী করেছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।