Inqilab Logo

শনিবার, ০৮ জুন ২০২৪, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বাউফলে জরিপ আতঙ্কে শত শত ভূমিহীন পরিবার

| প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বাউফল (পটুয়াখালী ) উপজেলা সংবাদদাতা : জরিপ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চরবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের শতশত ভূমিহীন পরিবার। আদালতে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়ার আগেই এ ধরনের জরিপকে অন্য ইউনিয়নের সাথে সংযুক্ত করার পাঁয়তারা করার অভিযোগ করেছেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। চেয়ারম্যানের অভিযোগ, চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নকে নিচ্হ্ন করার জন্যই একটি মহলের প্ররোচনায় এ জরিপ করা হচ্ছে।
চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাছ জানান, প্রায় ১১ হাজার ৯১৫ জন লোকসংখ্যা নিয়ে ২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারি ১১টি মৌজা নিয়ে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন গেজেটভূক্ত হয়। গেজেটভূক্ত ওই ইউনিয়নের ৬৯, ৭৪ এবং ১৪৬ জে.এল এর প্রায় ১ হাজার একর জমির চরগুলো ১৯৭৯ সালে দিয়ারা জরিপের মাধ্যমে প্রায় ৬০০ একর জমি ৪ শতাধিক ভূমিহীন পরিবারকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভূমি অফিসের অসহযোগিতার ফলে ভূমিহীনরা বন্দোবস্তের দলিল হাতে পায়নি। এ নিয়ে দেনদরবার চলার ফাঁকে ১৯৯৩-৯৪ সালে হাইকোর্টের সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের অফিস সহকারি বাউফলের নাজিরপুরের কাদের মোল্লার ছেলে হাফিজুর রহমান প্রকৃত ভূমিহীনদের বাদ দিয়ে নিজ নামসহ আত্মীয়-স্বজন, চাকুরিজীবী, নাবালক, ব্যবসায়ি ও বেনামে ৩২০ একর জমি বন্দোবস্ত নেন। ওই সময় ভূমিহীনরা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করলে ১৯৯৮ সালের ২ ফেব্রæয়ারি ভূরা/পটু/প্রতি/৯২-৭২/১(১) নং স্মারকের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক অবৈধ বন্দোবস্ত বাতিলের নির্দেশ দেন। ঐ নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাফিজুর রহমানের লোকজন বাউফল সহকারি জজ আদালতে ১০১/৯৮ দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন। যাহা ২০০৪ সালের ১৫ মে খারিজ হয়ে যায়। এরপর জেলা প্রশাসন অনেক যাচাই বাছাই করে প্রকৃত ভূমিহীনদের মাঝে জমি বন্দোবস্ত দেন।
এদিকে মামলায় পরাজিত চক্রটি ভূমিহীনরা যাতে জমি ভোগ করতে না পারে সেজন্য মামলা মোকদ্দমাসহ নানা কৌশল নেয়। বিষয়টি নিয়ে পটুয়াখালী জেলা জজ আদালতে প্রকৃত ভূমিহীনদের পক্ষে একটি মামলা (নং ১১৮/২০১৩) চলমান রয়েছে। যার পরবর্তি শুনানির তারিখ আগামি ২৪ সেপ্টেম্বর ধার্য আছে।
এদিকে মামলার নিষ্পত্তি না হলেও ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি জরিপকারী দল ওই চরগুলোতে জরিপ কাজ শুরু করেছেন। নতুন করে এ জরিপের ফলে শত শত ভূমিহীনরা শংকিত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া একাধিক ভূমিহীন অভিযোগ করেন, জরিপকারী দলটি জরিপের নামে এবং জমি না পাওয়ার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অপরদিকে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক অভিযোগ করেন, একটি মহলের প্ররোচনায় তার ইউনিয়নটি বিলুপ্তি করতে জরিপকারীদলটি ইউনিয়নের ৬৯, ৭৪ এবং ১৪৬ জে.এল এর প্রায় ২ থেকে আড়াই হাজার একর জমির চরগুলো কর্তন করে পাশ^বর্তী নাজিরপুর ইউনিয়নের সাথে সংযুক্ত করতে চাচ্ছে। এরফলে তার ইউনিয়নের আয়তন ও লোকসংখ্যা কমে যাবে এবং পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। জরিপকারী দলের সদস্য নূরে আলম টাকা পয়সা গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা রাস্ট্রপতির আদেশ বলে জরিপ করছি। যে কোন আদালতে মামলা-মোকদ্দমা চলমান থাকলেও আমরা জরিপ করতে পারবো। আমাদের কেউ বাধা দিতে পারবে না। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মোহম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহামুদ জামান বলেন, এটা ডিজিটাল জরিপ। কোন ইউনিয়নের ভূমি অন্য ইউনিয়নের সাথে সংযুক্ত করার সুযোগ নাই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ