Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাদ্রের সাময়িক বর্ষণেই তলিয়ে গেল চট্টগ্রাম : ফের জনদুর্ভোগ

| প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

হঠাৎ মৌসুমি বায়ু সক্রিয় : ভারী বৃষ্টিতে পাহাড়ধসের সতর্কতা
বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে গতকাল রোববার ভোর থেকেই বিকট বজ্রসহ হঠাৎ মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হয়। চলে দুপুর পর্যন্ত। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৪৬ মিলিমিটার। ভাদ্র মাসের শেষের দিকে এসে সাময়িক এই বর্ষণেই হাঁটু থেকে কোমড় সমান পানিতে তলিয়ে যায় বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিশাল এলাকা। কাদা-পানিতে অপ্রত্যাশিতভাবে আবারও সৃষ্টি হয় চরম জনদুর্ভোগ। দুপুরের পর অনেক এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও দুই দফা জোয়ারের পানিতে ফের পানিবন্দী হয়ে পড়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকা। হাজারো বসতঘর, দোকান-পাট, বিপণিকেন্দ্র, হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস ছাড়াও গুদাম-আড়ত প্লাবিত হয়। পবিত্র ঈদুল আযহার ছুটি শেষে গতকাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ খোলার এবং অনেক অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্যে ফিরে আসার দিনে মানুষের অশেষ দুর্ভোগ চোখে পড়ে। পানির-জটে নগরজুড়ে ও শহরতলীতে সৃষ্টি হয় অসহনীয় যানজট। শিক্ষার্থীদের বেশি বিপাকে পড়তে হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া দপ্তর জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে বর্ষারোহী মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় থাকার পর গতকাল হঠাৎ করেই সক্রিয় হয়ে উঠে। রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে পাহাড়ধসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তবে সমুদ্র বন্দরসমূহের জন্য আপাতত কোন সতর্ক সঙ্কেত নেই।
ঘনঘোর মেঘে আকাশ কালো করে বজ্র ও দমকা হাওয়ার সাথে চট্টগ্রামে গতকালের বর্ষণ আর জোয়ার একাকার হয়ে সৃষ্টি হয় পানিবদ্ধতার। খাল-ছরা, নালা-নর্দমাগুলো উপচে গিয়ে বাড়িঘর, দোকানপাটের ভেতরের কাদাপানি, বালির স্তূপ আর ময়লা-আবর্জনা জমে যায়। প্রচুর মালামাল বিনষ্ট হয় অনেক দোকান, গুদাম, আড়তে। বর্ষণে মহানগরীর চকবাজার, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, প্রবর্তক, পাঁচলাইশ, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মোহরা, কাপ্তাই রাস্তার মোড়, শোলকবহর, ষোলশহর, ২নং গেইট, নাসিরাবাদ, বাকলিয়া, চাক্তাই খাতুনগঞ্জ, আছদগঞ্জ, রাজাখালী, আগ্রাবাদ, সাগরিকা, হালিশহর, কাটগড়, পতেঙ্গাসহ অনেক এলাকা কোমর সমান পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় বন্দরমুখী ও বহির্মুখী পণ্যসামগ্রী ডেলিভারি পরিবহন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে গেছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে মানুষ বাড়িঘর দোকান-পাট ও গুদামের কাদা-পানি অপসারণ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মৌসুমি বায়ুর একটি বলয় তৈরি হয়েছে ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর-প্রদেশ, বিহার, হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় রয়েছে। আজ (সোমবার) রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ