Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আশাশুনিতে পুলিশ আতঙ্কে বেড়িবাঁধ রক্ষার কাজ বন্ধ

| প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে : আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নে হরিষখালীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ রক্ষার কাজ পুলিশী আতঙ্কে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নতুন করে আরও দু’টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এলাকাবাসী প্লাবিত হয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। বাঁধ ভেঙে ৩ দিন অতিবাহিত হলেও সরকারি-বেসরকারি কোন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ তাদের পাশে না দাঁড়ানোয় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
৭/২ নং পোল্ডারের প্রতাপনগর গ্রামের হরিষখালী নামক স্থানে পাউবো’র বেড়ী বাঁধের ভাঙন রক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এলাকার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছিল। দুপুর ২ টার দিকে খোলপেটুয়া নদীর ¯্রােত ও পানির অতিরিক্ত চাপে বাঁধে ফাটল শুরু হয় এবং মুহূর্তের মধ্যে বাঁধের মাটি ভেঙে জোয়ারের পানি ভিতরে ঢুকতে শুরু করে। বিকেলে ভাটার সময় ৭/৮ শ’ মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে বাঁধটি আটকাতে সক্ষম হয়। কিন্তু এদিন রাত্র ১.৩০ টার দিকে পুনরায় জোয়ারের পানিতে বাঁধ ভেঙ্গে যায়। পানির চাপে ভিতরে কেয়ারের বাঁধের বহু স্থানে ভাঙন শুরু হওয়ায় প্রতাপনগর, বন্যাতলা ও মাদারবাড়িয়া গ্রামের সহস্রাধিক ঘরবাড়ি নিমজ্জিত হয়ে যায়। কয়েক হাজার বিঘা জমির মৎস্যঘের ভেসে গেছে। ২০০ বিঘা জমির ধান ক্ষেত তলিয়ে যায়। শুক্রবার সকালে ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বুলি, আইয়ুব আলি ও মোকছেদ আলি এবং সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু দাউদ, বাজার কমিটির সভাপতি হাজী কামাল হোসেন ও অমিয় কুমার সোম এর নেতৃত্বে সহ¯্রাধিক মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিকে বাঁধ রক্ষার কাজ করছিলেন। এসময় এসআই নয়ন চৌধুরির নেতৃত্বে মেম্বার রফিকুল ইসলাম বুলিকে আটকের চেষ্টা এবং এনিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতে কাজ বন্ধ হয়ে গেলে বাঁধ রক্ষার কাজ শেষ হয়নি। ফলে প্রতাপনগর, বন্যাতলা, মাদারবাড়িয়ার পর দরগাহতোলারাইট, কুড়িকাহুনিয়া ও কল্যানপুর গ্রামের অংশ বিশেষ গতকাল (শনিবার) প্লাবিত হয়েছে। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে ৫৪ জনের নাম উল্লেখ করে ২ শতাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামী করে মামলা করা হয়। পুলিশী গ্রেফতারের ভয় ও আতঙ্কে এলাকার মানুষ গতকাল বিকালে কাজ করেননি। ফলে বাঁধটি রক্ষার কাজ অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। কাজে নেতৃত্বদানকারী হাজী কামাল হোসেনসহ কাজের সাথে জড়িত কয়েকজন সাংবাদিকদের জানান, তারা পুলিশের সাথে অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়িত নন, এমনকি ঘটনার সাথে বিন্দুমাত্র সম্পর্কও তাদের নেই। তার পরও তাদেরকে মামলার আসামী করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামী হিসাবে কখন, কাকে গ্রেফতার করা হয়, সে আতঙ্কে এলাকার মানুষ চরম ভীতিকর অবস্থায় রয়েছে। তাই কেউ বাঁধ রক্ষার কাজে যেতে পারছেনা। আজ কালের মধ্যে বাঁধ বাঁধা না গেলে পুরা প্রতাপনগর ইউনিয়নসহ আশপাশের ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষ, হাজার হাজার একর জমির মৎস্য ঘের, ফসলী জমি, হাজার হাজার ঘরবাড়ি, প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাবে। মানুষ বাসস্থান ও সম্বলহারা হয়ে মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হবে। এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ পুলিশ ও প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ