Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আওয়ামী লীগের ভয় বিএনপি নির্বাচনে এলে রাজপথে নামলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না-মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ভয়। কারণ তারা জানে বিএনপি যদি রাজপথে নামে এবং নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে তাদের আর কোন অস্তিত্ব থাকবে না। এ কারণে তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের সভা-সমাবেশ করতে বাধা দিচ্ছে। হামলা, মামলা ও গুমের মাধ্যমে বিএনপিকে দূর্বল করার চেষ্টা করছে। তবে মনে রাখতে হবে বিএনপি জিয়াউর রহমানের আর্দশকে অনুসরণ করে সাহস-শক্তি নিয়ে অত্যাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে। গতকাল (শনিবার) বিকেলে দলের ৩৯তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। বিএনপি জনগণের দল। বারবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করেছে। বিএনপি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে নোংরা রাজনীতি করছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি নোংরা রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগই নোংরা রাজনীতি করে। বিএনপি একটি উদারপন্থী, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বিএনপিতে সা¤প্রদায়িকতার লেশমাত্র নেই। বরং আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে। বিশেষ ক্ষমতা আইন, সংবাদপত্রে স্বাধীনতা হরণ, জরুরি আইন জারি করেছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি নেতাকর্মীরা এখন দুঃসময় পার করছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি এখন কঠিন দুঃসময় পার করছে। নেতা-কর্মীরা বিপদগ্রস্ত, হামলা, মামলা, গুম-খুনের শিকার। দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই সরকারকে রুখে দাঁড়াতে হবে। জনগণের কাছে গিয়ে তাদের ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন আদায় করে নিতে হবে। জনগণের শর্ত হচ্ছে একটি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। তিনি বলেন, এ দেশে নির্বাচন অবশ্যই হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হবে। সে নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। তাই আমাদের স্পষ্ট কথা, নির্বাচন অবশ্যই চাই। সেই নির্বাচন হতে হবে জনগণের শর্তে। জনগণের শর্ত হচ্ছে, সহায়ক সরকার। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। সবাই ঐক্যবব্ধ হয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা কোন সংঘাতে যেতে চাই না। সংঘাত এড়িয়ে যেতে চাই। আমরা চাই সত্যিকার অর্থেই একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্যে আগামী নির্বাচন হোক। সিরিয়াসলি চাই। আমরা কখনোই চাই না যে, সেই অতীতের পুনরাবৃত্তি হোক।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতনের ইস্যুতে সরকারের ভূমিকা লজ্জাজনক মন্তব্য করে বিএনপি নেতা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব সোচ্চার হয়ে রুখে দাঁড়ালেও এই অগণতান্ত্রিক সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। আওয়ামী লীগ এই ইস্যুতে সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি কোন রাজনীতি নয়, বরং মানবতার পক্ষে কথা বলছে। যখন আমেরিকা থেকে বিবৃতি দেয়, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তুরস্ক থেকে ফার্স্ট লেডি বাংলাদেশে চলে আসেন, তখন মনে হয়, আওয়ামী লীগের কিছুটা টনক নড়ছে। আমাদের দাবি কূটনৈতিক ব্যবস্থার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকেই। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ সরকার নড়াচড়া করার আগে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তুরস্কের ফার্স্ট লেডি চলে এসেছেন। এটা দেশের জন্য লজ্জাজনক। তবে এখন সরকার কিছুটা নড়াচড়া শুরু করেছে।
দলের প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে যখন রাজনৈতিক চরম শূন্যতা বিরাজ করেছিল এবং দেশের জনগণ দিশেহারা ছিল সেই সময়ে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উত্থান হয়েছিল একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে। আর জিয়াউর রহমানের উত্থান হয়েছেন সেই ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে যিনি জাতির সামনে নতুন এক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব অত্যন্ত জরুরি। পরিবর্তনশীল ইতিহাস ও সা¤প্রতিক জীবন অভিজ্ঞতা আমাদের এই শিক্ষাই দেয় যে, ঐক্যবদ্ধ সুসংহত গণ প্রচেষ্টা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা কবজ। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অতন্দ্র প্রহরী হচ্ছে গণঐক্য।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সরকার নানা অজুহাতে বিএনপিকে আবারও নির্বাচনের বাইরে রাখতে চায়। কিন্তু তা হতে দেওয়া হবে না।
এসময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েল, ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রমুখ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মির্জা ফখরুল

২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ