Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাঁদা-পানি নিত্য সঙ্গী শিক্ষার্থীদের

| প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবদুল হালিম দুলাল, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) থেকে: “স্কুলে আসার সময়ও জামা-কাপড় ভিজে যায়, যাওয়ার সময়ও ভিজে যায়, ভিজা জামা-কাপড়েই ক্লাশ করতে হয়। বর্ষা মৌসুমে পানি-কাঁদা আমাদের নিত্য সঙ্গী। পানির জোঁকও সুযোগ পেলে রক্ত নেয়। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নাই।” উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে দাউদখালী ইউনিয়নের খাসহাওলা গ্রামে ‘নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়’ এর ৯ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোসাঃ জান্নাতি হাঁপাতে হাঁপাতে এ প্রতিনিধিকে কথা গুলো বলছিল। পানিতে ভিজে স্কুলে আসা জান্নাতি আরও জানায়, ছোটহারজী গ্রাম থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার পথে প্রতিদিন তার আসা-যাওয়া করতে হয়। কাঁচা রাস্তা বর্ষা ও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে থাকে। খালে সুপারি গাছের সাঁকো ঝুকি নিয়ে পারাপার করতে হয়।
জানাযায়, খাসহাওলা গ্রাম নিবাসী পুলিশ কর্মকর্তা (অবঃ) এমএ হামিদ ১৯৯০ সালে নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত করেন। সাথে রয়েছে পশ্চিম দাউদখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুই স্কুল মিলিয়ে প্রায় ৬ শত শিক্ষার্থী আছে।
সরেজমিনে দেখা গছে বর্ষা মৌসুমে পানিতে রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেলে স্কুল ২টি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়। নিম্ন চাপে পানি বেড়ে গেলে স্কুলের মাঠ ২/৩ ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। হাটুসমান কর্দমাক্ত রাস্তায় আছে অসংখ্য খানা-খন্দ। অতি বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানিতে প্ল­­াবিত হলে রাস্তার অস্তিত্ব আর চোখে পরে না। প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন শিক্ষার্থীর বই-খাতা কাঁদায় লেপ্টে ও পানিতে ভিজে যায়। পানি-কাঁদায় সবচেয়ে বেশী দুর্ভোগ হয় নারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।
কথা হয় নাছরীন আক্তার (১০ম শ্রেণী), মহিমা আক্তার (৯ম শ্রেনী), আবু হাসান (৮ম শ্রেণী), অপূর্ব বেপারী (৭ম শ্রেণী), দুর্জয় মিত্র (৬ষ্ঠ শ্রেণী), ফারজানা (৫ম শ্রেণী) ও তুলির (৪র্থ শ্রেণী) সাথে। তারা সকলেই বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তা পাঁকা করনে দাবী জানিয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওমর ফারুক জানান, পানি-কাঁদায় বিদ্যালয়ে যাতায়াত করায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রায়ই ঠান্ডা জনিত রোগে ভুগতে হয়।
নূরজাহান মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কামাল হোসেন ক্যাম্পাসের দক্ষিণ দিকে আমুয়া-মিরুখালী সড়ক পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার, পশ্চিম দিকে ছোটহারজী পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার এবং পূর্ব দিকে প্রায় ১ কিলোমিটার রাস্তা ইট সলিং এবং এসকল রাস্তার মধ্যে খালে দ্রæত ব্রীজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মিসেস্ হাসিনা হামিদ জানান, স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের চরম উদাসীনতার কারনে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন না হওয়ায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা নিরাপদে শিক্ষা গ্রহন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এব্যাপারে দাউদখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফজলুল হক রাহাত খানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, খাসহাওলা গ্রামে এবছর ১৫ শত ফুট রাস্তার কাজ হয়েছে। বাকী কাজও হবে। তবে পরিষদের সীমিত সামর্থে রাতারাতি সব সমস্যার সমাধান সম্ভব না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ