Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

খোয়াই নদীতে নৌকা ডুবি শিশুসহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার

| প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


হবিগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : হবিগঞ্জের খোয়াই নদীতে ৫০ জন যাত্রী নিয়ে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় পুলিশ শিশুসহ ৩ জনের লাশ উদ্ধার করলেও নিখোঁজ রয়েছেন আরো কয়েকজন। আহত অস্থায় ৪ জনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিখোজ স্বজনদের বাড়িতে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। অনেকেই মধ্যরাতে নিখোজ ব্যক্তিদের সন্ধানে খোয়াই নদীর পাড়ে ভীড় জমিয়েছেন। নদীতে প্রবল স্রোত ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করেছে জেলা প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার এলাকা থেকে প্রায় ৫০ জন যাত্রী ও রড-সিমেন্ট বুঝাই করে একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে কাশিপুর যাওয়ার পথে খোয়াই নদীর সদর উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের লম্বাবাক এলাকায় পৌছা মাত্র অতিরিক্ত যাত্রীবহনের কারণে ডুবে যায়। এ সময় অনেকেই সাতার কেটে নদীর পাড়ে উঠতে পারলেও নারী, শিশুসহ অন্তত ১০/১২ জন পানির নীচে তলিয়ে যান। পরে ফায়ার সার্ভিস, হবিগঞ্জ সদর থানা পুলিশ ৩ জনের লাশ উদ্ধার ও স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় গুরুতর আহত ৪ ব্যক্তিকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে। নিহতরা হল, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের অবলা রানী সরকার (৪৬), একই গ্রামের মুক্তারানী দাশ (৮) ও কাশিপুর গ্রামের ফুল চান বিবি (৭০)।
পুলিশের তালিকায় নিখোজরা হলো, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড়কান্দি গ্রামের জানু মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (২৮), পুত্র জুম্মন মিয়া (৭ মাস) ও কন্যা অনামিকা (৭), একই গ্রামের আলাই মিয়ার কন্যা নুরজাহান বেগম (৩০), শাহপুর গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের স্ত্রী আলিমা বেগম (৩২), একই গ্রামের নজির মিয়ার পুত্র আইনুল হক (২৫), ফান্দ্রাইল গ্রামের জালাল চৌধুরীর স্ত্রী আগুরা খাতুন (২৮) ও পুত্র আব্দুল রাকিব চৌধুরী (৪)। হাসপাতালে ভর্তি আহতরা হল, বানিয়াচং উপজেলার শাহপুর গ্রামের শাফিয়া আক্তার (১৮), রিপন মিয়া (২২), একই উপজেলার রতনপুর গ্রামের শাহেদা বেগম (৪৫) ও মোহাম্মদ আলী (৬০)। তবে এ ঘটনায় নিখোঁজ ৫ ব্যক্তির পরিচয় তাৎক্ষণিক ভাবে জানা যায়নি।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ নৌকাডুবির ঘটনায় ৩ নারী-শিশুর লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর থানার ওসি (তদন্ত) মানিকুল ইসলাম জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য প্রচেষ্টা চলছে।
এদিকে, গতকাল রাতেই নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়ার ঘোষনা দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এমরান হোসেন। এরই মধ্যে নিহত অবলা রানী সরকারের পরিবারকে ১০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। হবিগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, আমরা সিলেট থেকে ডুবুরি দল এনে নদীতে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করি। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া ও নদীতে প্রবল স্রোত থাকার কারনে উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করতে বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়া আর কোন মৃতদেহ আশপাশে না পাওয়ায় উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন প্রশাসন।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম আজহারুল ইসলাম জানান, আজকের মতো উদ্ধার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। তবে নদীর স্রোত ও আবহওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হলে আবারো উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হবে। এছাড়া নিহত প্রত্যেক পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ১০হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ