Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রায়পুরায় ফিলিং স্টেশনে ৬ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি

| প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : রায়পুরার সিএনজি ফিলিং স্টেশনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৬ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে রায়পুরা তথা সারা নরসিংদী জুড়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়। দাবী উঠেছে, এই তরতাজা ৬টি প্রাণের মৃত্যুর দায়িত্ব চিহ্নিতকরণের। কার কারণে এই ধরনের ভয়াবহ বিদ্যুৎ দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে তা চিহ্নিত করে ক্ষতিগ্রস্থ শ্রমিক পরিবারগুলোকে ক্ষতিপুরণ দানের দাবী উঠেছে সকলের মুখে। সচেতন লোকজনের মধ্যে প্রশ্নের উদ্রোক করেছে যে, ৩০ ফুট উচু লোহার মই নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। লাল মিয়া ফিলিং স্টেশনটিতে ৩০ ফুট উঁচু লৌহ নির্মিত এই মই’র কি প্রয়োজন ছিল। আর এত বড় একটি লোহার মই সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে অন্যত্র সরবরাহ করার কারণ কি। কারা সেই মইটি তৈরী করেছে এবং কার অনুমতিতে এই বিশাল মইটি ফিলিং স্টেশনের বাইরে নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা জানিয়েছে, ফিলিং স্টেশনে উচু মই’র প্রয়োজন হয় সাধারণত স্টেশনের উচু শেডগুলোতে বৈদ্যুতিক কাজ তথা ডেকোরেশন বাল্ব স্থাপনের জন্য। লোকজন জানিয়েছে, ফিলিং স্টেশনের পশ্চিম পাশে তাবাস্সুম মোটর সার্ভিস সেন্টারের ছাদের ট্রাস বসানোর জন্য লাল মিয়া ফিলিং স্টেশন থেকে মইটি ঠেলে ধাক্কিয়ে নেয়া হয় সার্ভিস সেন্টারে। সেখানে কাজ শেষ করে মইটি পূনরায় ফিলিং স্টেশনে জমা দিতে যাবার সময় পল্লী বিদ্যুতের ওভারহেড লাইনের তারের সাথে সংযোগ ঘটে যায় মইটির। আর মুহূর্তের মধ্যেই তরতাজা ৬টি প্রাণ মই’র চার দিকে ছিটকে পড়ে ছটফট করতে করতে প্রাণ হারায়। মৃত্যুর এই বীভৎস রুপ দেখে উপস্থিত লোকজন হতভম্ব হয়ে যায়। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এতগুলো মানুষের মৃত্যু সাধারণ মানুষকে হতচকিত করে দেয়। ভাগ্যক্রমেই ফিলিং স্টেশনের অন্যান্য লোকজন বেঁচে গেছে আরো অধিক ভয়াবহতার হাত থেকে। বিদ্যুৎ দুর্ঘটনা সম্পর্কে নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২’র জেনারেল ম্যানেজার মো: সাইরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই বিদ্যুৎ দুর্ঘটনার ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের কোন দায় নেই। সেখানকার ওভারহেড লাইনের তারগুলো খুবই আটসাট করে বাধা হয়েছে এবং তারগুলো যথার্থ উচুতেই রয়েছে। ৩০ ফুট উচু একটি মইটি এবং এর প্রস্তুতকারকরাই দায়ী। এত উচু লোহার মই ব্যবহার করা মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ এটা না বুঝা কোন ব্যপার নয়। যারা ফিলিং স্টেশন চালান তাদের এতটুকু জ্ঞান থাকা খুবই প্রয়োজন। সর্ব শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘটনা তদন্তে নরসিংদী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। এ তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটির প্রধান কাজ হবে মইটির প্রস্তুত কারক কে, তাকে চিহ্নিত করা, মইটি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা নির্নয় করা, মইটি কারা ব্যবহার করেন তাদেরকে খোজে বের করা, ফিলিং স্টেশন থেকে মইটি কারা বাইরে সরবরাহ করেছে তাকে খোজে বের করা এবং যে প্রয়োজনে মইটি ঠেলে ফিলিং স্টেশন থেকে মোটর সার্ভিস সেন্টারে নেয়া হয়েছিল সে প্রয়োজন কতটুকু ছিল তা খোজে বের করা। আর এতেই এই দুর্ঘটনার দায়িত্ব চিহ্নিত করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ