Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে নতজানু নীতি ছেড়ে ঘুরে দাঁড়ান-সরকারকে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রোহিঙ্গা ইস্যুতে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ছেড়ে ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর অমানবিক নির্যাতন ও হামলায় বিশ্ববিবেক জাগ্রত ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু বর্তমান সরকারের কোন জোরালো অবস্থান, কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। তিনি রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে তাদের এই সমস্যা সমাধানেরও আহ্বান জানান। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত রোহিঙ্গাদের উপর হত্যাযজ্ঞ বন্ধের দাবিতে এক মানববন্ধনে রিজভী এসব কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, সরকার শুধু দায়সারাভাবে রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কিছু কথা বলে ছেড়ে দিচ্ছে। কারণ, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার গণবিরোধী। জনগণের রায়ে নির্বাচিত নয়। জনগণের ভোটে যদি নির্বাচিত সরকার হতো তাহলে রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভুতিশীল হতো। আশ্রয়ের পরিবর্তে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকতো না। ভারত রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতার ঘটনায় মিয়ানমারের দেশটির স্টেট কাউন্সিলর অং সান সূ চির ভাষ্যে সমর্থন দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে রিজভী বলেন, বিশ্বের অন্যতম প্রধান গণতান্ত্রিক দেশ বলে দাবি করে ভারত। তারা অং সান সূ চির নীতিকে সমর্থন করলেন, মোদী সাহেব (নরেন্দ্র মোদী)। আমরা বিস্মিত, আমরা হতবাক হয়ে গেলাম। সূ চির সমালোচনা করে তিনি বলেন, মুসলমানের কোনো মানবাধিকার থাকবে না, মুসলমান তার নিজ বাড়িতে বসবাস করতে পারবে না, তাদের কোনো অধিকার থাকবে না। তারা রাখাইন রাজ্যে বাস করতে শত শত বছর ধরে আদিবাসী, তারা নিজ দেশে থাকতে পারবে না। ফিলিস্তিনিরা নিজ দেশে থাকতে পারবে না। ওদের মানবাধিকার নেই, ওদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই, ওদের সন্তানরা পঙ্গুত্ব বরণ করবেন; হয় চলে যাও তোমরা দেশ থেকে, না হয় হত্যার শিকার হও।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছেন, তিনি চাপ সৃষ্টির জন্য অনেক দেশকে বলছেন; কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। কিছুই দেখা যায় না তারা কী করছেন, কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন। আপনার (শেখ হাসিনা) কূটনৈতিক তৎপরতা তো জোরদার না। ডাক দিয়ে বলছেন অ্যাম্বাসেডরকে, দুই-একটা কথা বলে ছেড়ে দিচ্ছেন। আজকে আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন মুসলিম দেশ যেভাবে জাগ্রত হয়েছে, জাতিসংঘ যেভাবে প্রতিবাদ করছে, অন্যান্য দেশ যেভাবে কথা বলছে, একসাথে সোচ্চার হয়ে জোরালো একটা অবস্থান বাংলাদেশের সরকারের কাছ থেকে দেখা যাচ্ছে না। অর্থাৎ ওরা মরুক, ওরা পঁচুক, ওরা নাফ নদীর পানিতে ভেসে যাক, কারো কোনো দায়িত্ব নেই।
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে রিজভী বলেন, আমরা এর কূটনৈতিক সমাধান চাই। কতদিন? বছরের পর বছর তারা পালিয়ে আসছে, উদ্বাস্ত হয়ে বাংলাদেশে জীবন-যাপন করছে। আগে চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে, ভারতে ৪০ হাজারের মতো এসেছে। মোদী সাহেব বলছেন তাদেরকেও তাড়িয়ে দেবেন। রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে দায়িত্ব মিয়ানমারের না থাকতে পারে, বাংলাদেশের মানুষ তো কিছুটা হলেও সহানুভুতিশীল হচ্ছে। তাদের হৃদয়ের মধ্যে কান্না ঝরছে। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের যেরকম দায়িত্ব পালন করা দরকার ছিল, সেটা তারা পালন করেননি। চট্টগ্রামে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দূরবস্থা তুলে ধরে এই বিএনপি নেতা বলেন, যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে, তারা ঈদের দিন নাফ নদীর তীরে শুয়ে আছে অনাহারে, অর্ধাহারে, খোলা আকাশের নিচে, খাদ্যহীন অবস্থায়। মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর এজেডএম জাহিদ হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সহসভাপতি আবুল হোসেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রিজভী

৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ