Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ায় সিন্ডিকেটের কাছে ট্যানারি মালিকসহ জিম্মি সবাই

| প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু , বগুড়া ব্যুরো : বগুড়ায় এবার কোরবানীদাতারা তাদের কোরবানিকৃত পশুর চামড়ার ন্যায্য ও স্বাভাবিক দাম না পাওয়ায় দারুণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হল অসহায় দরিদ্র মানুষ ও মসজিদ মাদ্রাসা এবং এতিমখানাগুলো। তবে যে ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে চামড়ার বাজারে এই ধ্বস তার কিন্তু কোরবানি মালিক ও ট্যানারী মালিকদের জিম্মি করে এবং ভারতে চামড়া পাচার করে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। গত কয়েকদিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়া চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে খুনের মামলায় পলাতক ও সম্প্রতি যুবলীগ থেকে বহিষ্কৃত আব্দুল মতিন সরকারের সিন্ডিকেট পরিকল্পিত ভাবে চামড়ার দর পতন ঘটিয়ে ৮শ’ থেকে ১২শ’ টাকায় গরু, ২০ থেকে ৪০ টাকায় ছাগল এবং প্রায় বিনা মুল্যে ভেড়ার চামড়া ক্রয় করেছে।
বগুড়ার চামড়া ব্যবসায়ীরা বলেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে থেকে বেঁধে দেয়া (গরু ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ফুট, খাসি ১৮ থেকে ২২ টাকা ফুট) দরে চামড়া কেনা করতে দেয়া হয়নি। তারা জানান, মতিনের অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী মতিনের ক্যাডারদের দিয়ে কোরবানি কেনাবেচার নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করেছে। বগুড়া শহরের রহমান নগরের সামসুল আবেদীন বলেছেন, তার কোরবানি দেওয়া গরু খাসির পৃথক দুটি চামড়ার যে দাম পেয়েছেন তা রীতিমত লজ্জাকর। প্রতিবছর তিনি যেসব দরিদ্র মানুষ ও মাদ্রাসায় চামড়া বিক্রির টাকা দিতেন তার পরিমান কম হওয়ায় তিনি বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত টাকা যোগ দিয়ে তার মনের ইচ্ছা পুরণ করেছেন। কিন্তু সবাই তা পারেননি, কারণ সবার আর্থিক সামর্থ এক রকম নয় বলে জানালেন কাটনার পাড়া নিবাসি আব্দুর রহিম।
চামড়া ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র বলেছে, ট্যানারী মালিকদের কাছে বগুড়া সহ জেলা পর্যায়ের চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছে কোটি কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বলে মিডিয়ায় অভিযোগ তোলা হয় তা পুরোপুরি সত্য নয়। প্রকৃতপক্ষে জেলায় জেলায় গড়ে ওঠা চামড়া ব্যবসাীদের সিন্ডিকেটের কাছে মূলত তারাও জিম্মি হয়ে আছে। উদাহরন দিয়ে সুত্রটি ইনকিলাবকে জানিয়েছে, এক দশক আগেও কোরবানির আগে ট্যানারী মালিকদের পক্ষ থেকে এজেন্টরা এসে বগুড়ায় অবস্থান করে প্রতিযোগিতামুলক দরে চামড়া কিনতো। প্রতিযোগিতামুলক দরের কারণে কোরবানিদাতারও কিছুটা বেশি টাকা পেত যার হকদার গরীব, মিসকিন অসহায় মানুষেরা। মাদ্রাসা ও এতিম খানা গুলোও এতে উপকৃত হত।
সূত্রটি আরো জানায়, সিন্ডিকেটের হোতারা সবাইকে জিম্মি করে চাড়ার একটি ব্যপক অংশই ভারতে পাচার করে, যে টুকু পারেনা সেটা চড়া দামে ট্যানারী মালিকদের কাছে বিক্রি করে। ট্যানারী মালিকরাও অবস্থার ফেরে পড়ে বেশি দামে চামড়া কিনে অর্ধেক টাকা পরিশোধ করে বাকি টাকাটা ঝুলিয়ে রাখে পরের বছর পর্যন্ত। যেন বকেয়া আদায়ের স্বার্থে বাধ্য হয়ে ট্যানারী মালিকদের কাছেই চামড়া বিক্রিতে বাধ্য হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ