Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাঙ্গালবাড়িতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

ঈদে রূপগঞ্জের পূর্বাচল উপশহর উন্মূক্ত বিনোদনে পরিণত

খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 রাজউকের নির্মানাধীন পূর্বাচল উপশহর হয়ে ওঠেছে উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র। প্রকল্পটির খোলামেলা পরিবেশে ঢাকা শহর ও আশপাশের জেলার বাসিন্দারা যে কোন উৎসবকে ঘিরেই ঘুরতে আসছেন এখানে। বিশেষ করে এখানকার বাঙ্গালবাড়ি বাতিঘরে সাধারন লোকজন ভীড় করছে প্রাচীন ব্যবহার্য তৈজসপত্র ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার নানা সংরক্ষণ দেখতে। এছাড়াও প্রকল্পটির পশ্চিমপারে বালু নদী ও পূর্বপারে শীতলক্ষ্যার তীরে এসে কাশফুলের নরম ছোঁয়া নিচ্ছেন দর্শনার্থীরা।
সরেজমিন ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের রাজউকের অধীনে নির্মাণাধীন পূর্বাচলের চিত্র। পবিত্র ঈদ উল আযহার দিন থেকে শুরু করে এখনো দর্শনার্থীরা ভীড় করছেন উন্মুক্ত বিনোদনের স্বাদ নিতে। এখানে বেড়াতে এসে সব রকম বিনোদন পাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। ঘোড়া গাড়ী , গরুর গাড়ি, চরকি চড়া, নৌকা দোলা, নৌকা ভাড়া করে নদীতে ঘুরা , ইচ্ছে হলেই সাঁতার কাটা এছাড়াও বেশ কয়েকটি সুইমিং পুলে সামান্য অর্থ খরচ করে সাঁতার কাটানোর নিরাপদ পরিবেশ পাওয়ায় এ জমে ওঠেছে এখানকার ঈদ বিনোদন। তাই স্বাচ্ছন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছেন দর্শনার্থীরা। তাদের আহারের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত অস্থায়ী খাবার হোটের। এছাড়াও পূর্বাচল উপশহরের আশপাশের পার্কগুলোও ঘুরে দেখছেন। বিশেষ করে পূর্বাচল উপশহরের ৯নং সেক্টরে বাঙ্গাল বাড়িতে ভীড় করছেন উৎসুক জনতা। বাঙ্গালবাড়ি বাতিঘর নামক একটি যাদুঘর দেখতে তাদের কৌতুহলের শেষ নেই। সম্প্রতি বাঙ্গাল বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, এ বাড়িটিতে রয়েছে পুরনো নানা স্মৃতি বিজরিত সব সংরক্ষণ। বাপ দাদা ও দাদার দাদার কালের নানা ব্যবহৃত তৈজসপত্র দেখতে দর্শনার্থীরা তাদের পরিবারের সদস্য ও শিশুদের নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। কথা হয় আব্দুল হক ভ‚ঁইয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিরা তাসফি প্রভার সাথে সে জানায়, প্রথমবার হুক্কা, হারমোনিয়াম, গিটার, একতারা, যাঁতা, সিঁকা, কাহাল ছিঁয়া, বিশেষ দোলনা, পাখা, চাপ টিউবওয়েল, গরুর গাড়ি, পালকি,বাবুই পাখির বাসা, মাটির হানকি,বাঁশের বাঁশি, বিন ইত্যাদি সরাসরি দেখেছে।
একই বাড়িতে অপর শিশু ইমলা মুহান্না, রুপা, অর্পা, ইউষা, জাইমা এই প্রতিবেদককে বলেন, এখানে অনেক কিছুই আছে যা এর আগে তারা নামই শুনেনি। এমনকি তাদের অভিভাবকরাও পরিচয় করাতে পারছেন না। এতে তাদের ক্ষোভের শেষ নেই। এ সময় তারা বাঙ্গাল বাড়ির মাতলা মাথায় ও হাতে তালপাখা নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। তাদের চোখে মুখে কৌতুহলের যেন শেষ নেই। এটা কি ওটা কি বলে তাদের অভিভাবকদের কান ঝালাপালা করছেন বলে জানায় তারা।
স্থানীয় সাংবাদিক মাহবুব আলম প্রিয় বলেন, পূর্বাচল উপশহরে যে কোন ধর্মের লোকজন সাধারন ছুটিতেও ভীড় করেন। রাজধানীর অতি সন্নিকটে হওয়ায় রাজধানীর চার দেয়ালে থাকা মানুষগুলো একটু খোলামেলা পরিবেশ পেয়ে ঘুরতে আসেন এখানে। এখানকার বাঙ্গাল বাড়িটি ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। এছাড়াও পূর্বাচলের আশপাশের পার্কগুলো বিশেষ করে জিন্দা পার্ক, পন্ড গার্ডেন, রাসেল পার্ক, ফনল্যান্ড পার্ক, পেরাবর তাজমহল ঘুরেও বেড়াচ্ছেন দর্শনার্থীরা। এখনো ঈদের আমেজ কাটেনি। তারপর আবার দূর্গা পূজা আসছে। তাই দর্শনার্থীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বাঙ্গাল বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ও কলামিষ্ট লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় আমরা অতীতকে ভুলে যাই। তাই আমাদের নতুন প্রজন্মকে সেসব হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেই বাঙ্গাল বাড়িতে নানা পুরনো জিনিসপত্র সংগ্রহ চলছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু সংরক্ষন করা হয়েছে। এটা বিনা টিকেটে সকলের জন্য উন্মূক্ত থাকবে। তাই যে কোন দর্শনার্থীরাই এখানে ঘুরে দেখে যেতে পারবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ