পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এখন ক্ষমতাসীনদের লুটের খাতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনদের আত্মীয়স্বজনদের লুটপাটের সুযোগ করে দিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিশ্ববাজারে যখন তেলের দাম কমছে তখন নজিরবিহীনভাবে সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। গতকাল (বুধবার) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমার কারণে এখনতো বিদ্যুতের খরচ কমার কথা। বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানি (ফার্নেস) তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করা হলে খরচ আরও কমবে। তা না করে উল্টো বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলছে গণবিচ্ছিন্ন এ সরকার। বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির মূল কারণ হচ্ছে কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ। এই রেন্টাল-কুইক রেন্টাল হচ্ছে আমাদের অর্থনীতির জন্য অভিশাপ। তিনি বলেন, সরকার তার পছন্দের লোকদের দিয়ে রেন্টাল-কুইক রেন্টাল প্রজেক্ট করিয়েছে। ওইসব প্রজেক্টে জনগণের দেয়া ট্যাক্স থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। তাতেও কূল পাচ্ছে না। এখন আবারও দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট কাটার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। গরিবকে আরও গরিব বানাতে চাচ্ছে সরকার।
রিজভী বলেন, গত দেড় বছরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ৮০ শতাংশের বেশি। কিন্তু দেশে এখন পর্যন্ত কমানো হয়নি। এমনকি সরকার কমানোর কথা ভাবছেও না। ফলে দাম কমার সুবিধা থেকে দেশ বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমানে দেশে প্রতি লিটার অকটেনের উৎপাদন খরচ ৫০ টাকারও কম। সরকার বিক্রি করছে ৯৯ টাকা। পেট্রলের উৎপাদন ও বিক্রয়মূল্যের মধ্যেও ব্যবধান প্রায় একই রকম। সরকার দেশে ডিজেল বিক্রি করছে ৬৮ টাকা লিটার। অথচ ডিজেলের আমদানি মূল্য পড়ছে প্রতি লিটার ৪০ টাকার কম। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ফার্নেস তেল সরকার বিক্রি করছে প্রতি লিটার ৬২ টাকা। ক্রয়মূল্য বর্তমানে ২৫ টাকার মতো।
২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে পাইকারি পর্যায়ে ছয়বার এবং খুচরা পর্যায়ে সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেলে সবচেয়ে বিপাকে পড়বে সীমিত আয়ের মানুষ। শিল্প খাতেও পড়বে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রভাব। এমনিতে সরকারের লুটাপাট আর ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশে কোন বিনিয়োগ নেই। এমন সময় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা মানেই বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করবে। এতে গোটা অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। আবার শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলে বাড়বে দ্রব্যমূল্যও। নিত্যপণ্যসহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। এর মাশুলও দিতে হবে সাধারণ ভোক্তাদের। এমনিতেই মূল্যস্ফীতি অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকায় মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়ের আকার স্ফীত থেকে স্ফীততর হচ্ছে। এর ফলে নির্দিষ্ট আয় ও পেশার মানুষের কষ্ট ক্রমাগতভাবে বেড়েই চলেছে। এরপর আবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ব্যয়ভার স্ফীত করার মাধ্যমে দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। কৃষি খাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়বে।
ভোটারবিহীন সরকার জনগনের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগনের প্রতি তাদের কোন দায়িত্ববোধ নেই মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, তারা একের পর পর জনবিরোধী কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছে। এই পবিত্র ঈদুল আজহার উৎসবের মাঝেও আওয়ামী লীগ ও তাদের পেটোয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সন্ত্রাসী তান্ডব থামছেনা। ঈদের আগে ২০দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের অপহরণ করা হলেও এখনও তাদের ফেরত দেয়া হয়নি।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকার নিরব: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনের বিরুদ্ধে বিশ্বনেতৃবৃন্দ সোচ্চার ভুমিকা পালন করলেও, বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করলেও সরকার এখনও উদ্যোগী ভুমিকা নেয়নি। সীমান্তে লাখ লাখ রোহিঙ্গা এখনও মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করলেও তাদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না সরকার। নাফ নদীর তীরে বাংলাদেশে আশ্রয় পাওয়ার জন্য তারা বুকফাঁটা কান্নায় আকুতি জানাচ্ছে। মিয়ানমারে তাদের উপর চলছে পৈশাচিক নির্যাতন, হত্যা করার পর তাদের হাত-পা বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে শরীর থেতলিয়ে দেওয়া হচ্ছে ধর্ষণের পর নারীদের। জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হচ্ছে মানুষ ও পশুদের। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক বিভৎস বর্বরতার নতুন নজির তৈরি করেছে রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমারের নির্যাতন। যারা কাঁটা তারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে প্রবেশ করছে তারা তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছেন। না খেয়ে ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে তারা অসুস্থ হয়ে পড়লেও চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেনা। আহত, গুলিবিদ্ধ,ক্ষুধার্ত, অসুস্থ, বিবস্ত্র, ছায়াহীন তপ্তরোদ্রের মধ্যে চরম এক বিপর্যয়ের মধ্যে তারা দিনাতিপাত করছে। এই মানবতাবিরোধী ভয়ংকর নির্দয়তার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের বিবেকহীন নিরবতা বিশ্ববিবেককে স্তম্ভিত করেছে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে বর্তমান সরকারের ক‚টনৈতিক দূর্বলতা ফুটে উঠেছে। যার কারণে রোহিঙ্গা সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা বিধানের দাবি জানান। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা এম এ মালেক প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।