Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চৌদ্দগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ভারতে চামড়া পাচারের আশঙ্কা

| প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


চৗদ্দগ্রাম উপজেলা সংবাদদাতাঃ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাই পথে কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচারের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এ জন্য সব সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, ভারতে চামড়া পাচারের আশঙ্কা নেই।
জানা গেছে, বাংলাদেশে কোরবানির ঈদ ঘিরে বিশাল একটি অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চলে। কোরবানির পশু বিক্রি করে খামারিরা প্রতি বছর বড় ধরনের আয় করেন। অনেকে ব্যক্তিগতভাবে কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য পশু পালন করেন। সারা বছর পশু পালন করার একটাই লক্ষ্য থাকে, কোরবানির হাটে তা বিক্রি করে বড় অঙ্কের আয় করে নেয়া। বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা থাকে ভারত থেকে পশু আসবে না; কিন্তু চূড়ান্ত মুহূর্তে প্রতিবেশী দেশ থেকে বানের পানির মতো পশু ঢুকতে থাকে। ফলে দেশীয় উৎপাদকেরা লোকসানে পড়েন। অর্থনীতির আরেকটি দিক হচ্ছে; কোরবানির পশুর চামড়া। বাংলাদেশে চামড়া শিল্প প্রসারের অন্যতম কারণ একসাথে প্রায় কোটির মতো পশু কোরবানির সময় জবাই হওয়া। এই চামড়া প্রক্রিয়াজাত করে দেশে বিশাল চামড়া শিল্প গড়ে উঠেছে।
খামারিদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, কোরবানিকে ঘিরে এবার সারাদেশে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার পশু উৎপাদন হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৪৫ লাখ গরু। পশুর মধ্যে মহিষ, ভেড়া ও ছাগলও রয়েছে। সা¤প্রতিক বছরগুলোতে বিপুল পশু উৎপাদন করতে গিয়ে দেশে খামার গড়ে উঠেছে। এখন দেশে প্রায় পাঁচ লাখ ২২ হাজার খামার রয়েছে। কোরবানি ঘিরে বিপুল পশুর চাহিদা মূলত প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে জোগান দেয়া হতো। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওই দেশ থেকে পশু আসা বন্ধ হয়ে যায়। কোরবানির পশু সঙ্কটের মধ্যে আমাদের দেশে গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল পালন বেড়ে যায়। এটি দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। কোরবানি কেন্দ্রিক একটি নতুন ধরনের অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বহু খামারি ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছে। কোরবানির সময় প্রতিবেশী দেশের পশু আমদানি বন্ধ রাখার মাধ্যমে এই খামারিদের সহায়তা করা যায়। অন্য দিকে, চামড়া ও চামড়া কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক সুফল নেয়ার উপলক্ষও এই কোরবানি। এ বছর ৩১ কোটি ৫০ লাখ বর্গফুট চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কোরবানি ঈদে সংগ্রহ করা হয় ১৯ কোটি বর্গফুট। বিপুল পরিমাণ চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ সমস্যায় পড়ে আছে। তাই পাচার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পশু কোরবানি আমাদের অর্থনীতির জন্য দারুণ সুযোগ এনে দিয়েছে। চামড়া পাচার ঠেকানো গেলে ঈদ ঘিরে অর্থনৈতিক ফায়দার সবটুকু অর্জন হবে। গত সোমবার বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতে চামড়া পাচারের আশঙ্কা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের যে বেঁধে দেওয়া দাম সেই দামের ভেতরেই আমরা অবশ্যই চামড়া সংগ্রহ করব। এখানে কোনো আপনার হেরফের হবে না। শাহিন আহমেদ আরও বলেন, ‘প্রায় টোয়েন্টি পারসেন্ট চামড়া দেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পাচার হয়ে যায়, আমরা বর্ডার গার্ডসহ যাঁরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আছেন, তাঁরা যাতে আপনার চামড়া পাচাররোধের ব্যাপারে অন্ততপক্ষে এক মাস আপনার নজরদারি জোরদার করেন’। এদিকে চৌদ্দগ্রামের শিবের বাজার, মতিয়াতলী, কালিকাপুর, কেছকিমুড়া, শাহাপুর, সোনাইছা এলাকা থেকে ভারতে চামড়া পাচারের আশঙ্কা রয়েছে। এসব রুট দিয়ে মাদকসহ বিভিন্ন ভারতীয় পণ্যের চালান বাংলাদেশে আসে। ইতোপূর্বে বিজিবি মাদকের বেশ কয়েকটি বড় চালান আটকও করেছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ