Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাছ চাষে সাফল্য

ঈশ্বরদী (পাবনা) থেকে এস এম রাজা : | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাছ চাষ করে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পৌছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ঈশ্বরদীর সফল মৎস্য চাষি আবু তালেব জোয়াদ্দার। তিনি ঈশ্বরদীর মৎস্য চাষিদের আইডল হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিত হয়েছেন। শুধুমাত্র মাছ চাষ করেই তিনি হয়েছেন কয়েক লাখ টাকার মালিক। একজন ভাল ফুটবলার হিসেবেও তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে সর্বত্র। ফুটবল খেলার পাশাপাশি সখের বসে মাছ চাষে ঝুঁকে পড়েন। এই মৎস্য খামারের উপার্জিত অর্থ থেকে তিনি গরিব মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখার জন্য আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে থাকেন।
ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের মরহুম আবুল হোসেনের ছেলে আবু তালেব জোয়াদ্দার পড়াশুনা শেষ করে অন্য কোন পেশায় না গিয়ে ঝুঁকে পরেন মাছ চাষের দিকে। বাবার জমিতে ২টি মাত্র পুকুর দিয়ে ২০১২ সালে মৎস্য চাষ শুরু করেন তালেব। মৎস্য চাষ করে যখন তার আর্থিক অবস্থা ভালো হতে থাকে তখন তিনি এলাকার বিভিন্ন জনের কাছ থেকে পরিত্যাক্ত ও অনাবাদি জমি খাজনা নিয়ে তার খামারকে প্রসারিত করতে থাকেন। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এগিয়ে চলেছেন শুধু সামনের দিকে। বর্তমানে জোয়াদ্দার মৎস্য খামারে ৪৬ বিঘা জমিতে পুকুরের সংখ্যা রয়েছে ১১টি।
তালেব ঈশ্বরদীর একজন আদর্শ ও প্রতিষ্ঠিত মডেল মৎস্য চাষি। তালেবের দেখা দেখি তার এলাকা ও আশপাশের বেকার যুবকেরা পরামর্শ নিয়ে মৎস্য চাষ শুরু করেছে। যারা তার দেখাদেখি শুরু করেছিলেন আজ তারা বেশ ভালো অবস্থানে আছেন। কেউ কেউ তাদের নিজেদের খামারকে প্রসারিত করেছেন। মৎস্য চাষের পাশাপাশি তালেব গড়ে তুলেছেন পোল্ট্রি খামার, ডেইরি ফার্ম, ছাগল-ভেড়ার খামার, ধান চাষ ও সবজি উৎপাদন খামার। তালেব তার খামারের নাম দিয়েছেন জোয়াদ্দার মৎস্য খামার। তার খামারে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ শ্রমিক নিয়মিত কাজ করে থাকেন।
সাফল্যের বিষয়ে মৎস্য চাষি তালেব বলেন, দেশে বেকারত্ব দূরিকরণ এবং আমিষের চাহিদা কিছুটা হলেও পুরণ করার জন্য এ পেশায় এসেছি। দেশের এবং জনসাধারনের কথা চিন্তা করে এদেশের মানুষের পুষ্টির যোগান দিতেই বেকার যুবকদের মৎস্য চাষে উৎসাহিত করে তুলেছি। একটু হলেও তো দেশের উপকারে আসতে পেরেছি। নিজের পাশাপাশি দেশকেও নিয়ে ভাবতে হবে। তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে, দেশের উন্নয়ন ঘটবে। তিনি বলেন, অন্যের পুকুরে টিকিটে মাছ ধরতে গিয়ে মাছ চাষে আগ্রহ জাগে। ফুটবল খেলার পাশাপাশি মাছ চাষে মনোনিবেশ করি। আমার নিজের পুকুরে বড় মাছের চাষ করি তাই মাঝে মধ্যে এই পুকুরেও মাছ ধরার জন্য টিকিট বিক্রি করে থাকি। আমি বিশ্বাস করি এদেশের শিক্ষিত বেকার যুবকেরা সততার সাথে শ্রম দিয়ে মাছ চাষ করলে ভালো অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে। চাকরি নামের সোনার হরিণের পিছু না নিয়ে একটু প্রশিক্ষণ নিয়ে মাছ চাষে মনোনিবেশ করলে যেমনি এদেশ থেকে বেকারত্ব কমবে, সেই সাথে দেশের মাছের চাহিদা কিছুটা হলেও পূরণ হবে বলে আশাকরছি।
ঈশ্বরদী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব নাজমুল হুদা বলেন, মুলাডুলির জোয়াদ্দার মৎস্য খামারটি পরিপাটি ভাবে সাজানো। মৎস্য তালেব বেকার যুবকদের মাছ চাষে আগ্রহী করে তুলেছে এটা একটা ভাল দিক। তিনি মাছ চাষ করে একাই স্বাবলম্বী হয়ে থেমে থাকেন নি। বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী করতে সহযোগিতা করেছেন। জোয়াদ্দার মৎস্য খামারের মাছ চাষের কারণে কিছুটা হলেও দেশের মাছের ঘাটতি পূরণে সচেষ্ট হবে। সেই সাথে দেশের মানুষের পুষ্টির যোগানও দিচ্ছেন। জোয়াদ্দার মৎস্য খামারটি প্লান মাফিক পরিচালনা করলে আরও বেশি ভালো করবেন বলে তিনি এ কথা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ