Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দীর্ঘ চার দশকেও নোয়াখালী নর্থ ইরিগেশন প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হয়নি

| প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা, নোয়াখালী ব্যুরো ঃ নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, কুমিল্লা ও চাঁদপুরের ২০টি উপজেলাকে যুক্ত করে নোয়াখালী নর্থ ইরিগেশন প্রজেক্ট দীর্ঘ চার দশকেও বাস্তবায়িত হয়নি। করে প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখবে তারও কোন নিশ্চয়তা নেই। তবে নির্বাচনকালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের যে মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করে আসছে রাজনৈতিক নেতারা। দেশে জনসংখ্যা বৃদ্বির পাশাপাশি খাদ্য চাহিদা বৃদ্বির কথা বিবেচনা করে নোয়াখালী নর্থ ইরিগেশন প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হলে শুধুমাত্র পাঁচটি জেলার দুই কোটি অধিবাসী উপকৃত হবেনা-বরং স্বনির্ভরতা অর্জনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি গতিশীল হবে।
উল্লেখ্য, বিগত সত্তর দশকের শেষ দিকে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নোয়াখালী সফরে এসে এতদ্বঞ্চলে পানিবদ্বতা দূরীকরন, অতিরিক্ত খাদ্যশস্য, মৎস,পোট্রি, ডেইরী ফার্ম এবং অতিরিক্ত রবিশস্য উৎপাদনের লক্ষে নোয়াখালী নর্থ ইরিগেশন প্রজেক্ট বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। এরপর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষে প্রশাসনিক দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর প্রকল্পটির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর প্রেসিডেন্ট এইচ,এম, এরশাদের আমলে বেশ কয়েকজন সিনিয়র মন্ত্রী নোয়াখালী সফরকালে নোয়াখালী নর্থ ইরিগেশন প্রজেক্ট বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। কিন্তু এরশাদ সরকারের আট বছর শাসনামলে ভোটের রাজনীতিতে এটি সীমাবদ্ব থাকে। ১৯৯১ সালে বিএনপি পূণরায় ক্ষমতায় আসার পর জিয়াউর রহমান কর্তৃক প্রতিশ্রæত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন অনেক মন্ত্রী। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর জেলার সচেতন মহল থেকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দাবী উঠে। ২০০১ সালে বিএনপি তথা চার দলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর সকলের ধারণা ছিল এবার প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু সবই ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছু নয়। বর্তমান মহাজোট সরকারের প্রথম পাঁচ বছরে এবং পরবর্তীতে আরো তিন বছর অতিবাহিত হবার পথে। কিন্তু নোয়াখালী নর্থ ইরিগেশন প্রজেক্ট ইস্যু নিয়ে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছেনা। দীর্ঘ সময় প্রকল্প ফাইলটির হদিস না থাকলেও ৫টি জেলার দুই কোটি অধিবাসী হতাশ হয়েছে। উল্লেখ্য, নোয়াখালী নর্থ ইরিগেশন প্রজেক্ট বাস্তবায়িত হলে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ, চাটখিল, সেনবাগ, কোম্পানীগঞ্জ, লক্ষীপুর সদর, রামগঞ্জ, রায়পুর, ফেনী সদর, দাগনভূঁইয়া, সোনাগাজী, কুমিল্লার লাঙ্গলকোর্ট, লাকসাম, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ ও লাঙ্গলকোর্টসহ ১৫টি উপজেলার কমপক্ষে আট লক্ষাধিক একর জমি সেচের মাধ্যমে বছরে দুইটি ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে। এছাড়া উৎপাদিত রবিশস্য, শাকসবজী ও তরিতরকারী স্থানীয চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলায় সরবরাহ সম্ভব হবে । অপরদিকে প্রকল্পের আওতাধীন বিশাল ভূমি ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রজাতির মৎস সম্পদ উৎপাদন এবং বাজারজাতকরনের মাধ্যমে বছরে অতিরিক্ত আরো ৫’শ কোটি টাকা আয় হবে। এছাড়া ডেইরী ফার্ম ও পোলট্রি ফার্ম সেক্টরে বিপূল সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এতদ্বঞ্চলের তিন লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানের সূযোগ সৃষ্টি হওয়া ছাড়াও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কয়েক দুই আড়াই লক্ষাধিক পরিবার উপকৃত হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ