Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কুমিল্লায় সিন্ডিকেটের কারসাজিতে চামড়ার দরপতনে ধরাশায়ী মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে: | প্রকাশের সময় : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দুপুরের পর থেকে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়িদের কেউ রিকশা ভ্যানে, কেউ সিএনজি অটোরিকশা, কেউবা ইজিবাইক ও ত্রিচক্রযান রিকশাযোগে চামড়া নিয়ে আসতে থাকে কুমিল্লা শহরের ঋষিপট্টিতে। শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকার কুরবানিদাতাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে মাঝারি ও বড় সাইজের চামড়া সংগ্রহ করে ঋষিপট্টিতে বিক্রি করতে এসে হতাশ হয়ে পড়েন মৌসুমি ব্যবসায়িরা।
গতবারের ন্যায় এবারো সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে লাভ তো দুরের কথা চামড়ার কেনা দর পেতে আকুতি মিনতি করতে হয়েছে ঋষিপট্টির চামড়া ব্যবসায়িদের কাছে। কেবল ঋষিপট্টিই নয়, শহরের রাস্তার মোড়ে মোড়ে কাউন্টার খুলে চামড়া ক্রয়কারি চক্রের নি¤œমুখি বাজারদরের মুখে পড়তে হয়েছে মৌসুমি ব্যবসায়িদের। অন্যদিকে শহর এলাকায় চামড়া বেচাকেনার সবচেয়ে বড় স্পট ঋষিপট্টিতে চামড়া ব্যবসায়িদের একটি বড় অংশ গরুর ভুড়ির সঙ্গে থাকা ‘গোল’ (স্থানীয় ভাষায় সাতফল্যা) কেনায় বেশ তৎপর ছিল।
সিন্ডিকেটের কারসাজিতে শেষ পর্যন্ত কুরবানির গরুর চামড়া কিনে ধরাশায়ি হয়েছেন কুমিল্লার মৌসুমি ব্যবসায়িরা। শনিবার ঈদের দিন কুরবানিদাতাদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে যেসব মৌসুমি ব্যবসায়িরা গরুর চামড়া কিনেছেন তারা পাইকারি ব্যবসায়ি, আড়তদার ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসা ক্রয়কারিদের কাছে বিক্রি করতে এসে লোকসানের মুখে পড়েন। গতবারের লোকসানের কষ্ট ভুলে এবারে লাভের আশায় চামড়া ব্যবসায় নামে মৌসুমি ব্যবসায়িরা। কিন্তু এবারেও তাদের কপাল খুলেনি। পাইকার ও আড়তে চামড়া বিক্রি করতে এসে হাহাকার ফুটে ওঠে মৌসুমি ব্যবসায়িদের চোখেমুখে। চামড়ার পাইকারি ব্যবসায়ি ও আড়তদারদের কারসাজিতে এবারেও লোকসানে পড়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন মৌসুমি ব্যবসায়িরা। তারা অভিযোগ করেন ঢাকার বাইরের জেলাগুলোর জন্য বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশন থেকে চামড়ার যে দর নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে তা মানা হয়নি। মাঝারি ও বড় সাইজের চামড়া ৫শ’ থেকে ৭শ’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। চামড়ার পাইকারি ব্যবসায়ি ও আড়তদাররা কমদামে চামড়া কেনার ক্ষেত্রে ছিল অনড়। তাই বাধ্য হয়ে মৌসুমি ব্যবসায়িদের কেউ লোকসান দিয়ে কেউবা পুঁজি রক্ষার দরেই চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে।
মৌসুমি ব্যবসায়িরা গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছে অভিযোগে আরও জানান, ‘ঢাকার ট্যানারি মালিকদের যোগসাজসে এখানকার পাইকারি চামড়া ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করেই চামড়ার দাম কমিয়ে এবারেও বিক্রির ক্ষেত্রে অস্থির অবস্থা সৃষ্টি করেছে। দুপুর ১টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত মৌসুমি চামড়া বিক্রেতারা পুঁজি তুলতে পারলেও ৪টার পর থেকে চামড়ার দরপতন ঘটায় মুল ব্যবসায়ি ও আড়তদাররা।
এদিকে শহরের ঋষিপট্টির চামড়া ব্যবসায়িদের একটি অংশ গরুর চামড়া কেনার চেয়ে ভুড়ির সঙ্গে থাকা ‘গোল’ সংগ্রহে ছিল বেশ তৎপর। তারা কুরবানি দাতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে একশো থেকে দেড়শো টাকার মধ্যে গোল বা সাতফল্যা সংগ্রহ করেছে। ঋষিপট্টির চামড়া ব্যবসায়ি সঞ্জিত, রঞ্জিত জানান, ঢাকা ও চট্টগ্রামের চামড়া ব্যবসায়িদের একটি গ্রæপের কাছে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায় ‘গোল’ বিক্রি করে থাকেন। বিদেশে গোলের বেশ চাহিদা রয়েছে। এবারের কুরাবানি ঈদ থেকেই ‘গোল’ ব্যবসা জমে উঠেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ