Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ছাতকে আ’লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে লুটপাটের অভিযোগ ৭০ লাখ টাকা উধাও

| প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ছাতক (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : ছাতকে আ’লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কতিপয় নেতা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে খাদ্য গুদামের লাখ লাখ টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে। সরকার দলের দাপট দেখিয়ে কতিপয় নেতাকর্মী ও অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারি মিলে দীর্ঘদিন থেকে জমজমাটভাবে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এখানে চোরাকারবারিরা দু’টি সিন্ডিকেটে বিভক্ত হয়ে চালের চোরাই ব্যবসা করে রাতারাতি তারা কোটিপতি হচ্ছে। এসব সিন্ডিকেট ব্যবসায়িদের সঙ্গে গোপন আতাত করে এ ব্যবসা করছেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও গুদামের কর্মকর্তা-কর্মচারি। তারা সরকারি চাল ক্রয়-বিক্রয়ের নামে অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট করে গুদামের চাল বদল করে বস্তা পরিবর্তনের মাধ্যমে আবারো চাল গুদামজাত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বস্তা বদলের জন্য পৌর শহরের ভেতরে ১টি গুদাম ও আমেরতল গ্রামে ১টি গুদাম ব্যবহার করছে সিন্ডিকেটচক্র। গত সম্প্রতি চাল ব্যবসার নামে গুদামের নৈশ প্রহরী আজফর আলী ও শ্রমিক ইমান আলী শহরের কয়েকজন ব্যবসায়ির কাছ থেকে নগদ ৭০লক্ষ টাকা নিয়ে আত্মসাত করার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আত্মসাতের ঘটনা নিয়ে কয়েক দফা সালিশ বৈঠকে নিষ্পত্তি করার চেষ্ঠা করা না হলেও অবশেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসারও ছাতক থানায় পৃথক দু’টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। ৫জুলাই রাতে আজেফর আলী ও শ্রমিক ইমান আলীকে আটক করে ব্যবসায়ীরা মারপিট করেছে। আজেফর আলী চাকুরি হারানোর ভয়ে হাসপাতালে ভর্তি না হলেও ৬জুলাই ইমান আলী ছাতক হাসপাতালে ১সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন।
জানা গেছে, গুদাম কেন্দ্রিক চাল ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করেছেন আজেফর আলী ও ইমান আলীর সাথে শহরের কয়েকজন ব্যবসায়ি। শেষ পর্যন্ত ৩মাস থেকে আজেফর আলীর কাছে ৭০লক্ষ টাকা আটকা পড়ে। গুদাম থেকে বিভিন্ন প্রজেক্টের চাল উত্তোলন করা হয়নি বলে সংশ্লি­ষ্ট একটি সূত্র জানায়। প্রজেক্ট সভাপতি শুধুমাত্র চালের মূল্য নির্ধারন করে সিন্ডেকেটের কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। আর প্রজেক্টের কাগজ হাত বদল হয়ে গুদাম থেকে চাল তুলে নিচ্ছেন সিন্ডিকেটচক্র। এছাড়া টিআর, কাবিখা, ওএমএস, ফেয়ার প্রাইজ, ভিজিএফ ও ভিজিডির চালের একটি অংশ প্রায় প্রকাশ্যেই ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে উপজেলা পরিষদ চত্ত¡র ও গুদাম এলাকায়। অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ১৪টি ডিলার এসব চাল বিক্রি করছেন বিভিন্ন এলাকায়। ১৪জন ওএমএস ডিলারের গুদামের নাম উল্লেখ থাকার সরকারি বিধি থাকলেও বাস্তবে এসব ডিলারের চাল মজুদের কোন গুদাম নেই। সরকারি চাল বিক্রির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহাব উদ্দিন, গুদাম কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়াসহ একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারি। প্রতি মাসে গুদামের কয়েক শ’ মে.টন সরকারি চাল ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে। সরকারি চাল ডেলিভারির তারিখ মতে সিন্ডিকেট ব্যবসায়িও তাদের দালালরা খাদ্য অফিসে ভিড় জমাতে দেখা গেছে। গুদাম শ্রমিক ইমান আলী জানান, গুদাম ভিত্তিক চাল ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসায় জড়িত রয়েছে শহরের একাধিক ব্যবসায়িও খাদ্য গুদামের কর্মকর্তা-কর্মচারি। ব্যবসায়িদের টাকা লেনদেনের সত্যতা তিনি স্বীকার করেছেন। নৈশ প্রহরী আজেফর আলী জানান, ব্যবসায়িদের সাথে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের চেষ্ট চলছে। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহাব উদ্দিন জানান, ডেলিভারী অর্ডার দেয়ার পর সংশ্লি­ষ্টরা চাল বিক্রি করছেন বলে তার জানা নেই। চাল সংক্রান্ত বিষয়ে গুদামের নৈশ প্রহরী আজেফর আলীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ তার দপ্তরে রয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন। গুদাম রক্ষক আমিনুল ইসলাম ভুঁইয়া ৬মাস আগে এখানে যোগদান করেছেন উল্লেখ করে বলেন, এসময়ের মধ্যে এখানে চাল ক্রয়-বিক্রয়ের কোন ব্যবসা দেখতে পাইনি।
আদমদীঘিতে কোরবানীর পশুর ন্যায্যমূল্যে লোকসানে কৃষক ও খামারীরা
আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা ঃ ঈদের আর মাত্র ৪দিন বাঁকী পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরসহ সান্তাহার জংশন শহরের কোরবানীর পশুর হাটে ব্যাপক দেশী ও ভারতীয় গরুর আমদানী। পাইকারী ক্রেতা নেই স্থানীয় ক্রেতা থাকলেও বাঁচা ক্রেনা কমহওয়ার কারনে কোরবানীর পশুর ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় কৃষক এবং খামারী ব্যবসায়ীরা লোকসানের মূখে পরেছে। একদিকে বন্যা অন্যদিকে খড়সহ গো-খাদ্যোর মূল্য বৃদ্ধির ফলে কৃষক ও খামারী ব্যাবসায়ীদের লক্ষ লক্ষ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। বন্যার কারণে প্রথমদিকে উপজেলা সদর, নশরৎপুর ও সান্তাহার রাধাকান্ত পশুর হাটে গরু ছাগলের আমদানী কম হলেও গত শনিবারের হাটে ভারতীয় ছোট বড় গরুসহ দেশী গরু, মহীষ, ছাগলসহ বিভিন্ন কোরবানীর পশুর ব্যাপক আমদানী হয়। বন্যায় রাস্তা, ঘাট নষ্ট হয়ে যাওয়ায যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্বকভাবে ভেঙে পরায ঢাকা, চট্রগ্রাম, সিলেটের পাইকারী গরু ব্যাবসায়েিদর হাটে উপস্থিতি কম। এতে এবার হাটে কোরবানীর পশুর বেঁচাকেনা ও দাম কম হওয়ায় কৃষক ও খামারীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। সান্তাহার পৌর এলাকার উপর পোঁওতা মহল­ার রায়হান আলী জানান, আমার খামারে এবার ৮০ হাজার থেকে এক লক্ষ টাকা মূল্যের ২৫টি ছোট বড় গরু আছে। খড়,ক্ষুদ,গুড়াসহ গো-খাদ্যোর মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় গরু লালন পালনে খরচ বেশী হয়েছে। আশাছিল ভালদাম পাওয়া যাবে। কিন্ত এবার দেশে অবাধে ভারতীয় গরু আশায় এবং বিভিন্ন এলাকায বন্যার কারনে হাট বাজারে কেবানীর পশুর র্মূর কমে যাওয়ায় এবার আমাকে কমপক্ষে ৫ লক্ষ টাকা লোকশান গুনতে হবে। একই মহল­ার শাজাহান আলী বলেন এবার আমি ৩ টি গরু বিক্রি করে ২০ হাজার টাকা লোকশান হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ