Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঈদে সরগরম হচ্ছে চাটগাঁর রাজনীতি

| প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : পবিত্র ঈদুল আযহায় সরগরম থাকছে চাটগাঁর রাজনীতি। এখানকার নেতারা ঈদ শুভেচ্ছার আড়ালে ব্যাপক গণসংযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নেতাকর্মীদের সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় করার প্রচেষ্টা শুরু করেছেন অনেকে। বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, মেয়র, এমপিসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভিআইপি নেতা থেকে শুরু করে সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজ নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। ইতোমধ্যে কোরবানির প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন অনেকে। ঈদ উপলক্ষে নেতাদের বাসাবাড়িতে চলছে ব্যাপক খানাপিনার আয়োজন। 

রাজনৈতিক অঙ্গণে উত্তাপ-উত্তেজনা না থাকলেও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ঘর গোছাতে ব্যস্ত সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপি। বড় দুই দলের পাশাপাশি জোট-মহাজোটের শরিক অন্য রাজনৈতিক দলগুলোও সামর্থ্য অনুযায়ী ভোটের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সব রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এখন মাঠমুখী। নির্বাচনী এলাকার সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় করার চেষ্টায় সকলে। ঈদুল আযহাকে সম্পর্ক উন্নয়নের বিরাট সুযোগ হিসেবে দেখছেন নেতারা। আর এজন্য চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। জানা গেছে, চট্টগ্রামের ভিআইপি নেতারা মহানগরীর বাসভবনের পাশাপাশি তাদের নির্বাচনী এলাকাতেও একাধিক পশু কোরবানি দিচ্ছেন। ঈদ উপলক্ষে চলবে ব্যাপক আপ্যায়ন। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নানা শ্রেণি পেশার প্রতিনিধি বিশেষ করে নিজ নিজ দলের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠন এবং সমমনা পেশাজীবী সংগঠনের নেতাদেরও আপ্যায়ন করা হবে। এ সুযোগে নির্বাচনী এলাকার সাধারণ জনগণের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করবেন নেতারা। এ লক্ষ্যে আয়োজন করা হচ্ছে ঈদ পুনর্মিলনীসহ নানা অনুষ্ঠানাদি।
চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে বড় দুই দলের ভিআইপি নেতারা ছাড়াও শতাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী এলাকায় তৎপর রয়েছেন। নানা উপলক্ষে তারা নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ভোটারদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছেন। ঈদ আসার আগেই বর্ণিল ব্যানার, পোস্টারে ছেঁয়ে গেছে মহানগরী ও জেলার অনেক এলাকা। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা এলাকাবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার, পোস্টার লাগিয়েছেন। মহানগরীর প্রায় প্রতিটি এলাকায় ঈদ শুভেচ্ছা সম্বলিত হরেক রংয়ের ব্যানার, বিলবোর্ড শোভা পাচ্ছে। গ্রামে-গঞ্জেও ঈদ শুভেচ্ছা বার্তার ছড়াছড়ি।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনসহ সরকারি দলের সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের প্রায় সবাই নিজ নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করছেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশে এখন সউদি আরব রয়েছেন। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর তার দেশে ফেরার কথা। বর্তমান সংসদ সদস্যরা ছাড়াও চট্টগ্রামের ১৬টি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজ নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন বলে জানা গেছে।
বিএনপির নেতারাও নিজ নিজ এলাকায় আসতে শুরু করেছেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এম মোর্শেদ খান, আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হকসহ নেতারা নিজ নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। জাতীয় পার্টির নেতা ও পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু ছাড়াও মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকে নিজ নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপনের পাশাপাশি গণসংযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চার দলীয় জোটের অন্যতম শরিক এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক, ইসলামী ঐক্যজোটের নেতা মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী চট্টগ্রামে ঈদ উদযাপন করছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের অসংখ্য নেতাকর্মী এবারও কারাগারে ঈদ করছেন। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার আহŸায়ক আসলাম চৌধুরীসহ অনেক নেতাকর্মী কারাগারে। বিএনপি নেতারা ঈদের আগে কারাবন্দি নেতাদের খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে দলের নেতারা জানান। অসংখ্য মামলার আসামী হয়ে অনেক নেতাকর্মী পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জীবন দিয়েছেন। অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। ঈদ উপলক্ষে এসব নেতাকর্মীদের পরিবার-পরিজনকে সমবেদনা জানাবেন বিএনপি ও জোটের নেতারা। সব মিলিয়ে ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামের রাজনীতি সরগরম থাকবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ