Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নড়াইলে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির হাট

| প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নড়াইল জেলা সংবাদদাতা : নড়াইলে কোরবানির হাটে গরু, ছাগল ও ভেড়ার বেচাকেনা জমে উঠেছে। এক্ষেত্রে নড়াইলে গৃহপালিত ষাঁড়ের চাহিদাই বেশি। এসব গরু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকার মধ্যে। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার গরুর কদর বেশি। তবে, আকার ভেদে ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে দেশি গরু গুলো। গরুর পাশাপাশি একেকটি ছাগল ছয় হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে। চলছে ভেড়া বেচাকেনাও। দামের ব্যাপারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তবে, জেলার হাটগুলোতে ভারতীয় গরু তেমন একটা দেখা যায়নি। এদিকে কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য ছুরি, দা, বটির চাহিদাও বেড়েছে। নড়াইল সদরের নাকসী গরুর হাট এলাকার বাসিন্দা হাদিউজ্জামান হাদি জানান, ‘খড়, ঘাস ও ভূষিসহ প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠা ষাঁড়ের চাহিদাই বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এসব গরু ৩৫ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। মঙ্গলবারের হাটে প্রায় এক হাজার কোরবানির পশু হাটে উঠতে দেখা যায়। গরু বিক্রেতা সদরের দৌলতপুরের মনিরুল ইসলাম বলেন, হাটে ঘাস, পাতা খাওয়ানো মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি। ক্রেতারা ইনজেকশনমুক্ত গরু কিনছেন। মিরাপাড়ার এক ক্রেতা বলেন, তিনি ৯০ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় কিনেছেন, যেটির দাম হাঁকানো হয়েছিল এক লাখ ১০ হাজার টাকা। গতবারের চেয়ে এবার গরুর দাম অনেক কম বলে জানান তিনি। নাকসী হাটে আসা আরেক ক্রেতা মনিরুজ্জামান খান বলেন, ছোট পরিসরে ৩৫ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। ফুলসরের কাজী আলমগীর হোসেন এসেছেন গরু বিক্রি করতে। তিনি বলেন, ‘একটি ষাঁড়ের দাম এক লাখ ১৫ হাজার টাকা চেয়েছি। ক্রেতারা ৯০ থেকে ৯৫ হাজার টাকা দাম বলছেন। লাখের উপরে হলে বিক্রি করে দিব।’ নড়াইল শহরের ভওয়াখালীর রেজাউল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, প্রায় ছয়মাস আগে ৪০ হাজার টাকা করে আটটি গরু কিনে লালন-পালন করেছি। ভূষি, কলাই, গম, আটা, সরিষার খৈ ও চালের খুদ খাওয়ানো হয়েছে। এসব গরু এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি। খরচবাদেও আমার লাভ হয়েছে। গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার জয়নগর-বাইখোলার ফোরকান খান বলেন, তিনজনে কোরবানির জন্য নড়াইলে গরু কিনতে এসেছি। তবে আজ দাম একটু চড়া মনে হয়েছে। এ কারণে ফিরে যাচ্ছি। সদরের জঙ্গলগ্রামের ভেড়া বিক্রেতা জহির জানান, কোরবানির হাটে ছাগলের পাশাপাশি ভেড়ার চাহিদা রয়েছে। ছাগলের চেয়ে ভেড়া বিক্রি লাভজনক। ছাগল বিক্রেতা ইয়ামিন বলেন, বড় ধরণের একটি ছাগল ১৬ হাজার টাকা দরদাম হয়েছে, ১৭ হাজার হলে বিক্রি করব। এদিকে কোরবানির পশু জবাইসহ গোশত প্রস্তুতির কাজে ব্যবহৃত ছুরি, দা, বটিসহ ধারোলো অস্ত্র তৈরির জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন কামারশিল্পীরা। জেলা শহরের রূপগঞ্জ, লোহাগড়া, লক্ষীপাশা, এড়েন্দা, দিঘলিয়া, কালিয়া, নড়াগাতিসহ বিভিন্ন হাটবাজারে এসব ধারালো অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মারুফ হাসান জানান, নড়াইলে ছোট-বড় চার হাজার গরুর খামার রয়েছে। এছাড়া সদরসহ লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলায় ১৩টি স্থায়ী গরু-ছাগল বেচাকেনার হাট রয়েছে। এছাড়া ঈদ উপলক্ষ্যে কয়েকটি অস্থায়ী হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা চলছে। পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম জানান, জাল টাকা সনাক্তকরণ এবং কোরবানির পশু বেচাকেনা ও পরিবহন ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হাটবাজারগুলোতে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে। সর্বত্র ব্যাপক নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ