বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে : গরুর ব্যবসা করে এখন আর লাভ হয় না। তবে এই ব্যবসা করি কেন জানেন? ভারতে অনেক টাকা পড়ে রয়েছে। এই টাকা আদায় করার জন্য লোকসান করে ব্যবসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। ভারতীয়রা যে দাম ধরে গরু পাঠায় সেই দামে গরু বিক্রি করা খবই কঠিন। আর পরে বাংলাদেশের মাটিতে গরু পা রাখার সাথে সাথে গুনতে হচ্ছে কাড়ি কাড়ি চাঁদা। এই টাকা যাচ্ছে খাটাল মালিক অসাধু বিজিবি ,পুলিশ, রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে। যার ফলে কেউ এর প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। সাতক্ষীরার ঘোনা সীমাস্তে গরুর খাটালে দাঁড়িয়ে একথা গুলো বলেন ব্যবসায়ী বাবলু, ফিরোজ, মশিয়ার,আব্দুল রহমান। এই ভাবে সাতক্ষীরার ঘোনা সীমান্তে গরু ব্যবসায়ীরা পড়েছে চাঁদা বাজদের কবলে। চাঁদাবাজ সিন্ডিকেট দফায় দফায় আদায় করছে চাঁদা। গরু ব্যবসায়ীরা বলছে রাজস্বের ৬ থেকে ৭ গুন টাকা টাকা চাঁদা দিতে হয়। আর খাটাল মালিকরা বলছে টাকার পরিমাণ বাড়েনি আগের মতই আছে।
গরু ব্যবসায়ীরা জানায়, নিয়ম অনুযায়ী ভারত থেকে একটা গরু বাংলাদেশে আসার পর ৫শ’ টাকা রাজস্ব দিয়ে বৈধ করতে হয়। আর খাটাল মালিকদের দিতে হয় ৫০ টাকা। অথচ খাটাল মালিকরা ৫শ’ ৫০ টাকার স্থলে আদায় করছে ৩ হাজার থেকে ৩৫শ’ টাকা পর্যন্ত। আর ব্যবসায়ীদের নামে গরু করিডোর না করে খাটাল মালিকরা নিজে নামে সব গরু করিডোর করে। এই টাকার ভাগ অসাধু বিজিবি, পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতার পকেটে যার যার প্রাপ্য অনুসারে পৌঁছে যায়।
গরু ব্যবসায়ীরা তজিবব, শহিদুল, লতিফ জানায়, শুধু ঘোনায় নয় কালিয়ানি, শাখড়া , কোমর পুর , বৈকারি, তলুই গাছা, কাকডাঙ্গা, মাদরা হিজদি, চান্দুড়িয়া সীমান্তে গরু কম আসলেও খাটালের টাকা নেয় ঘোনা খাটালের চেয়ে দুই একশ’ টাকা কম বেশি মাত্র। ব্যবসায়ীরা আরও জানায়, ভারতীয় যে গরু পাঠায় তার দাম খুব চড়া। সে দামে গরু বিক্রি করা সম্ভব হয় না। তারপর আবার খাটাল মালিকদের নিয়ম বহিভর্‚ত ভাবে চাঁদা আদায়। প্রতিদিন লোকসান করে ব্যবসা করতে হচ্ছে। আর ব্যবসা না করলে তাদের সে দেশে পড়ে থাকা লাখ লাখ টাকা আর আদায় হবে না। আর দেশীয় বাজারে গরু বেশি আসলে কোরবানির পশুর দাম কমতো। ভারত থেকে আসা সবা গরু করিডোর করে না। কারডোর না করে পুরানো কাগজ দিয়ে নিয়ে যায়।
চাঁদা আদায়ের মুল দাযিত্বে থাকা আনিস জানান, চেয়ারম্যান, তার ভাই হাবু আর তিনি এই খাটাল পরিচালনা করে থানেক। তবে মুল দায়িতে রয়েছে¡ চেয়ারম্যান। সমস্ত জায়গায় তাদের টাকা দিতে হয়। তার সহযোগি হিসেবে কাজ করেন জাকির। গরু ব্যকসায়িদের নিকট থেকে খাটাল বাবদ ২৫শ’ টাকা উত্তোলন করার কথা স্বীকার করেন তিনি। অতিরিক্তি টাকা নেন কেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, সে নিজেও একজন গরু ব্যবসায়ি। অন্য কোন খাটালে গরু আসলে তার এর চেয়ে বেশি টাকা দিয়ে গরু আনতে হয়। বরং তারা অন্যদের তুলনায় কম টাকা নেয়।
ঘোনা ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান মোশা জানান, খাটালে গরু প্রতি ২৫শ’ টাকার নেওয়া হয়। তার মধ্যে ৫শ’ টাকা ভ্যাট খরচ। বাকি টাকা তার আনুসাঙ্গিগ খরচ হয়। সাতক্ষীরা ৩৮ বিজিবির ঘোনা ক্যাম্পের সুবেদার আমিরুল ইসলাম জানান, বিজিবি শুধু মাত্র সিলিপ লিখে দেন। গরু প্রতি কত টাকা আদায় করা হয় এটা জানার বিষয় না বিজিবি। এ সবের সাথে বিজিবি জড়িত নয়। সাতক্ষৗীরা সদর থানার ওসি মারুফ আহম্মেদ জানান, পুলিশ খাটালের অনুমতি দেয় না। যারা অনুমতি দেয় তাদের জিজ্ঞাসা করেন কি ভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় করে। যারা অনুমতি দেয় তারা যদি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে আমরা সাথে থাকবো। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো: মহিউদ্দীন জানান, তারা শুধু মাত্র খাটাল পাহারা দেওয়ার অনুমতি দেয়। অতিরিক্ত টাকা আদায়ের বিষয়টি কে দেখবে? যাদের দেখার দায়িত্ব তারা এর সাথে জড়িত কি না খোঁজ খবর নেন। তবে তার কোন লোক এর সাথে জড়িত নন বলে জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।