Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী ভুট্টো সিআইডির হাতে গ্রেফতার

| প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কক্সবাজার ব্যুরো : কক্সবাজারের টেকনাফের অন্যতম শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী এবং মানবপাচারকারী নুরুল হক ওরফে ভুট্টোকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি পুলিশ। গত সোমবার চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানাগেছে। গ্রেফতারে সময় তার কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা এবং একাধিক বিভিন্ন কোম্পানির সিম পাওয়ায় বলে জানিয়েছেন সিআইড সদস্যরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান সিআইডি সাইবার ক্রাইম এবং মানি লন্ডারিং ইনভেস্টিগেশন সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, ভুট্টোর দেয়া তথ্য মতে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরো ১১ জন কে গ্রেফতার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, এখন থেকে সিআইডি টেকনাফসহ জেলার চিহ্নিত মাদক এবং চোরাকারবারীদের ধরতে কাজ করছে। ইতিমধ্যে তারা শীর্ষ বিশজন ইয়াবা এবং অস্বাভাবিকভাবে অর্থসম্পদের মালিক বনে যাওয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।
সিআইডির হাতে আটক নুরুল হক ভুট্টোর বিরুদ্ধে টেকনাফসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান পুলিশ। ২০১৬ সালে ১৩ মে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ভূট্টো এবং তার বাহিনীর হামলার শিকার হন কক্সবাজারের কর্মরত ছয় জন টিভি সাংবাদিক। এসময় তাদের কাছে থাকা ক্যামেরা, ল্যপটপ সহ ব্যবহৃত গাড়ি ভাংচুর করা হয়। হামলার দুই দিন পর ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক তৌফিকুল ইসলাম লিপু বাদী হয়ে ভুট্টোকে প্রধান আসামী করে টেকনাফ থানায় একটি দ্রæত বিচার আইনের মামলা করেন।
ভুট্টোর বিরুদ্ধে ইয়াবা, মানব পাচারসহ অসংখ্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে পুলিশের খাতায়। রীতিমত সে এলাকায় ত্রাস হিসেবে পরিচিত। এক সময়কার দিনমজুর ভুট্টো রাতারাতি হয়ে যায় কোটিপতি। ইয়াবা ব্যবসায় বদৌলতে ভুট্টো টাকার পাহাড় গড়তে থাকেন। এলাকায় গড়ে তুলেন তার নিজস্ব বাহিনী। অন্যের জমি দখল, নিরহ মানুষদের হয়রানিসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন ভুট্টো।
২০১৫ সালের টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় হামলা চালায় ভুট্টো বাহিনী। টেকনাফ সদরের শীল বুনিয়া এলাকায় ভুট্টো এবং তার বাহিনীর লোকজন কালু নামের এক ব্যাক্তির বসত বাড়িতে হামলা চালায় এবং ঘরের মালামাল লুট করে। এতে বাধা দিলে ভুট্টো তার হাতের একটি আঙ্গুল কেটে নেন। একই এলাকার আরো এক ব্যক্তির হাতের কব্জি কেটে নেয় ভুট্টো এবং তার বাহিনীর লোকজন। সাবরাং এলাকার জাফর আলম নামের এক ব্যক্তির মাথার চুল ন্যাডা করে দেয় এবং জাফর নামে আরেক ব্যক্তির কান কেটে নেয় বলে এলাকাকাসী অভিযোগ করেন। একই বছর কক্সবাজারের টেকনাফে বেড়াতে আসা দুই পর্যটক অপহরনের শিকার হন এই ভুট্টো বাহিনীর হাতে। ভুট্টোর অপকর্ম এখানেই শেষ নয়,ভুট্টোর সঙ্গে তার বাহিনীর নেতৃত্ব দেন, তার আপন ভাই নুর মোহাম্মদ মংরী। তাদের সহযোগী হয়ে নিরীহ মানুষের উপর হামলা ও জমি দখলের সহযোগিতা করে থাকে ভুট্টোর অপর ভাই নুরুল আমিন খোকন, নুরুল ইসলাম নুুরু, এবং তার ভাগিনা একই এলাকার নুরুল আলমের পুত্র হেলাল, বেলাল, আবছার ও মোঃ হোছন। তাদের বিরুদ্ধেও টেকনাফ থানায় ইয়াবা ব্যবসা এবং মানবপাচারের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ