Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

গরু পালন করে দিশাহারা কৃষক হাট ইজারাদারদের মাথায় হাত

| প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ময়নুল হক, ডোমার (নীলফামারী) থেকে : গরু পালন করে দিশাহারা কৃষক ও হাট ইজারাদারদের মাথায় হাত। নীলফামারীর ডোমার উপজেলার কোরবানীর গরুর হাটগুলোতে নেই কোন ভারতীয় গরু। তারপরও হাটে প্রচুর গরু দেখা গেলেও অভাব দেখা দিয়েছে ক্রেতার। গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর দামও কম, তার পরেও বিক্রি নাই বললে চলে। উপজেলায় গরুক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য মোট ৬ টি হাট রয়েছে, এর মধ্যে ৪ টি হাট গরুর জন্য বিখ্যাত, হাটগুলোতে শুধু ডোমার উপজেলা নয়, পার্শ্ববর্তী কয়েক উপজেলা থেকে গরু আসে। প্রতিটি হাটে হাজার হাজার গরুর আমদানি হয়। বিভিন্ন গরুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটগুলোতে দেশি গরুর প্রচুর আমদানি হয়েছে এবং গরুর মালিকরা কেউ গরুর রশি ধরে কেউ আবার এমনিতে গরুর কাছে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু দেখা গেছে তাদের অনেকের মুখে হতাশার ছাপ। উপজেলার বোড়াগাড়ী গরুর হাটে কথা হয় গরুর মালিক কৃষক মোতাহারের সাথে। তিনি জানান যে, আমার প্রায় ১শ’ গরু কেনা আছে। এই গরুগুলো গত এক বছর আগে কিনেছি, এবছর সব গরুই বিক্রি যোগ্য। ৩/৪ হাট থেকে গরু নিয়ে ঘুরছি হাটে গরু কেনার লোক নাই বললেই চলে আর যদিও ২/৪ টা গরু বিক্রি হচ্ছে, তা আবার দাম কম। গত বছরের তুলনায় প্রতিটি গরুতে ৬/৭ হাজার টাকা দাম কম হবে। আমার যেটুকু পুজি ছিল, সবটুকু দিয়ে গরু কিনেছিলাম। এবার গরুর যে অবস্থা দেখছি তাতে আমার ভবিষৎ কি হবে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেনা।
হাটে কোরবানির গরু খরিদ করতে আসা নজরুল ইসলাম বলেন , গত বছরগুলোতে ঈদের হাট যেভাবে দেখেছি, তার সিঁকি পরিমানও বিক্রি এবার দেখছি না। আমি যতটুকু জানি, এই হাটটা ১০/১২ জন মিলে কোটি টাকার উপরে ইজারা নিয়েছে। কিন্তু এ বছর অতি বন্যার কারনে হাটগুলোর অবস্থা খুবেই খারাপ। আমবাড়ী হাটের হাট ইজারাদার আব্দুল হামিদ জানান, আমরা বড় হাটগুলো যারা ইজারা নেই, আমাদের শুধু আশা থাকে ঈদের ১ মাস আগে থেকে, গরুর হাটগুলো ভালোভাবে চললে সেখানে লাভের মুখ দেখতে পাই। কিন্তু এবারে বন্যা এমন সময়ে হইলো, ঠিক ঐ সময়টা আমাদের জন্য মূল সময়। গত বছর গুলোতে ঈদের ১ মাস আগে থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে গরু ব্যাবসায়ীরা ট্রাক নিয়ে এসে গরু ক্রয় করে নিয়ে যেত। তাতে গরুর চাহিদাও ছিল বেশি এবং দামও ছিলো ভালো, এতে আমরা ও গরু বিক্রেতা উভয়ে লাভবান হইতাম। এবছর বন্যায় রাস্তাঘাট নষ্ট হওয়ায় এবং বাহিরের ব্যাবসায়ীরা গাড়ি নিয়ে আসতে না পাড়ায়, বর্তমানে ঈদের হাট বলতে কিছুই বুঝতেছিনা। এদিকে বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ায় কোরবানীর গরু কেনার বিষয়ে কৃষকদের সেরকম কোন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। এবছর এই আমবাড়ী হাট ইজারা নিয়েছি সরকারি ভ্যাটসহ মোট ১ কোটি ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে। এখন পর্যন্ত চার ভাগের এক ভাগ টাকাও তুলতে পারি নাই, আর হাটের যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে এবারে পথে বসার মতই প্রায়। একই কথা বললেন, বসুনিয়া, হাটের ইজারাদাররা। ঈদকে সামনে রেখে, ডোমার থানার ওসি মোকছেদ আলী বলেন, উপজেলার বিভিন্ন গরুর হাটবাজারে প্রশাসনের নজরদারী রয়েছে। যাতে কোন প্রকার জাল টাকা বা বিশৃঙ্খলা না ঘটে সেদিকে আমরা সজাগ থাকবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ