Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় দেশি গরুতে জমে উঠেছে কুরবানির পশুর হাট

কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন : | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 ছোট বড় ট্রাকে করে গরু আসছে হাটে। কুরবানির দেশি গরুতে কুমিল্লার হাটগুলো জমে উঠেছে। পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গত রোববার থেকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ও ১৬ উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী ইজারা দেয়া চার শতাধিক হাটে কুরবানির জন্য দেশিয় গরু, মহিষ, ছাগল বেচাকেনা জমজমাট হয়ে উঠেছে। কুরবানির পশুহাটে দালালের প্রভাব রয়েছে। ইজারাদারা দালাল থেকে সতর্ক থাকতে ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে মাইকে পরামর্শ দিচ্ছেন।
মাস খানেক আগ থেকেই গুঞ্জন উঠেছিল এবার বন্যা ও ভারতীয় গরুর প্রভাবে হাটে কুরবানির পশু কমদামে কেনা যাবে। কিন্তু এ পর্যন্ত কুমিল্লায় যে কটি হাট বসেছে সেখানে গিয়ে ক্রেতারা ‘এবারে গরুর দাম কম’ এমন গুঞ্জনের সত্যতা পাননি। এদিকে দেশের অন্যান্য স্থানের হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর প্রভাব পড়লেও কুমিল্লাতে তা নেই বললেই চলে। সেই হিসেবে এবারে কুমিল্লার প্রকৃত খামারি, খন্ডকালিন খামারি ও গৃহস্থ (পারিবারিক) পর্যায়ে পালন করা দেশি গরুতেই ঈদুল আজহা উদযাপন করবেন কুরবানিদাতারা। হাট ইজারাদার, বেপারী ও সাধারণ বিক্রেতারা বলছেন বাজারে গরুর সঙ্কট দেখা দেবে না। আর দামও সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। তবে গরু ঘিরে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করা হলে দাম অনেক কুরবানিদাতার নাগাল বা বাজেটের বাইরে চলে যাবে। অন্যদিকে বেপারীদের কেউ কেউ লোকসানের আশঙ্কাও করছেন। তাদের মনে গতবারের লোকসানভীতি এখনো রয়েছে। গতবার ঈদের আগেরদিন গরুর দাম হঠাৎ কমে গিয়েছিল। তবে ইজারাদারসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতবার ঈদের আগের দিনের বৈরি আবহাওয়া ও বৃষ্টিপাত দুর-দুরান্তের বিক্রেতা ও বেপারীদের ভাবিয়ে তুলেছিল। কেননা বৃষ্টিপাতের হাত থেকে হাটে গরু নিরাপদে রাখার ব্যবস্থা ছিল না। আর তাই এসব বিক্রেতা ও বেপারীরা লোকসান দিয়ে গরু বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছিল।
খামারি ও গৃহস্থের গরু-ছাগলেই চাহিদা মেটাবে কুমিল্লার কুরবানিদাতাদের। এঅঞ্চলের উৎপাদিত প্রায় তিন লাখ ও মৌসুমী ব্যবসায়ি বা বেপারীদের হাত ধরে উত্তরাঞ্চল থেকে আনা লাখ খানেকসহ প্রায় চার লাখ গরু, মহিষ এবারে কুমিল্লার পশুর হাটে স্থান পাবে। হাটে গরু সঙ্কট দেখা দেবে না বলে আশা করছেন ইজারাদাররা। গত রোববার শহরের চকবাজার, ফকিরহাট, মাধাইয়াসহ কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে ছোট বড় ট্রাকে করে আনা গরুতে সয়লাব। আবার আশপাশের গ্রামের গৃহস্থরা পায়ে হেঁটেও গরু নিয়ে এসেছেন হাটে। বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে দেশিয় গরু লালন পালনে খরচ বেশি পড়ায় গরুর দাম কম রাখার সুযোগ নেই। তবে ইজারাদাররা বলছেন হাটে পর্যাপ্ত গরু ওঠলে দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। ইজারাদাররা মাইকে ঘোষণা দিয়ে ক্রেতাদের আশ্বস্থ করছেন ‘এবারে গরু সঙ্কট থাকবে না, গরু আসছে, গরু আসবে, ভয়ের কারণ নেই, আপনার পছন্দের গরু কিনে নিতে পারবেন।’
কুমিল্লা নগরীর হাটে পাবনা, কুষ্টিয়া, বগুড়া, রাজশাহী, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলা থেকে আগত সিন্ধি, ফিজিয়ান, শাহীআওয়াল, সুরমা, নেপালীসহ উন্নতজাতের দেশি গরু আসতে শুরু হয়েছে। আর উপজেলার হাটগুলোতে উঠছে স্থানীয় খামারি ও গৃহস্থের পালন করা দৃষ্টিনন্দন গরু। মৌসুমী ব্যবসায়িদের অনেকেই উত্তরাঞ্চলের জেলা থেকে গরু এনে মজুদ করেছেন। অনেকে বাড়িতে রেখেই বিক্রি করছেন। কেউ হাটে তুলছেন। সীমান্ত ঘেষা উপজেলাগুলোর হাটে কিছু ভারতীয় বোল্ডার গরু উঠেছে। এসব গরুর মাংস স্বাদ নেই এমন ধারণা রয়েছে লোকজনের মধ্যে। ঈদেরদিন সকাল পর্যন্ত গরু পাওয়া যাবে এমন হাটের মধ্যে রয়েছে কুমিল্লা শহরের চকবাজার, সদর দক্ষিণের নেউরা, বাগমারা, সুয়াগঞ্জ বাজার, চৌদ্দগ্রাম বাজার, মুন্সিরহাট ও চিওড়া বাজার। বরুড়া বাজার, চান্দিনা বাজার, বুড়িচংয়ের ময়নামতিবাজার, দাউদকান্দির ইলিয়টগঞ্জ ও গৌরিপুর বাজার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ