Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যামুনার ভাঙনে অসহায় পরিবারগুলোতে নেই ঈদ আনন্দ

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) থেকে টি এম কামাল,: | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আগামী শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা। সবাই যার যার সামর্থ অনুযায়ী কুরবানি পশু কেনা ব্যস্ত। কিন্ত সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলায় বন্যাকবলিত ও যমুনা নদীর ভাঙনে সর্বহারা পরিবারের চিত্র ভিন্ন। এখানে বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধে আশ্রিত কিংবা চরাঞ্চলের কয়েক হাজার দুস্থ, পরিবারে ঈদের আনন্দ নেই। এদের কেউ বাঁধের বাইরে ছোট্ট ঘরে বসবাস করছেন, কারও ঠাঁই হয়েছে বাঁধের ওপর। আবার কেউ সামান্য পরিমাণ জমি কিনে বাঁধের ভেতরের অংশে বানিয়েছেন ঘর। পরিবার পরিজনসহ এভাবেই বসবাস করছেন সব হারানো নিঃস্ব মানুষেরা। দিনমজুর খেটে খাওয়া কিংবা নদীতে মাছ শিকার করা মানুষের দুই বেলার অন্ন জুটলেও আর্থিক সংকটে দিন কাটছে। ফলে বাস্তুহারা এসব পরিবারের সদস্যদের কুরবানি ভাগ্যে জুটছে না।
কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ও মাইজবাড়ি ইউনিয়ন যমুনার ভাঙনে দ্বিখন্ডিত হয়েছে। এদের কেউ বাস করছে যমুনার ওপারে বালু চরে। আবার কেউ বাস করছে মুল ভূখন্ডের সাথে। যমুনার ডান তীরে রয়েছে বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধ। এই বাঁধের ধারে বসবাস করে বাস্তুহারা শত শত পরিবারের মানুষ। নাগরিক অধিকারের সামান্যতম এদের ভাগ্যে জোটে না। শুভগাছা গ্রামে বন্যানিয়ন্ত্রন বাঁধের পাশে দাড়িয়ে কথা হলো বাস্তুহারা মানুষ গুলোর সাথে। দুর্বিষহ বাস্তুহারা জীবনের কাহিনী শোনাতে গিয়ে বিধবা হাসনা খাতুন জানালেন নানামুখী সংকটের কথা। তিনবেলা ঠিকভাবে খাবার জোটানো সম্ভব হয় না।
সরকার অনেক সুবিধার কথা বলে। আমরা তো সুবিধাই পাই না। এ অবস্থায় ঈদের আনন্দ করমু কি দিয়ে। একই বাঁধে আশ্রিত হেলাল উদ্দিন জানান, এক সময় এদের জমিজমা ছিল। কৃষিকাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। নদী ভাঙনসহ নানামুখী প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের সে অবস্থা কেড়ে নিয়েছে। এক সময়ের জমির মালিক এই মানুষগুলো এখন দিনমজুরে পরিণত হয়েছে। কাজেই দিনমজুর খেটে ঈদ উপলক্ষে বাড়তি খরচ করার সামর্থ নেই। নতুন মাইজবাড়ী চরের আব্দুল হামিদ, বেলাল হোসেন, কেরামত উল্লাহ, লিয়াকত আলী, হাজরা খাতুনসহ অনেকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা যমুনা নদীর ভাঙনের শিকার হয়ে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন। জায়গা-জমি যা ছিল সবই চলে গেছে নদীতে। মানুষের জমিতে কৃষিকাজ করে তাদের সংসার চালানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ঈদের আগে অনেকেই সহযোগিতা করতে। কিন্তু এবার কেউই সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি।
কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস, এম হাবিবুর রহমান খোকা জানান, তার ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবারের মানুষ পানিববন্দি ও নদী ভাঙনের শিকার। বর্তমানে এসব মানুষ আর্থিক সংকটে দিন কাটাচ্ছে। অন্যান্য বছর ঈদের আগে সরকারিভাবে ১০ কেজি করে ভিজিএফ চালের ব্যবস্থা ছিল। কিন্ত এবার দেয়া হয় নাই। বেসরকারিভাবেও কেউ যমুনা পাড়ের হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতারন করছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ