বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিস এখন সম্পূর্ণরূপে বদলে গেছে। নেই এখন দালালদের উৎপাত। জমির নামজারি, মিসকেস, তদন্ত, দাগ নম্বর সংশোধনসহ জমি সংক্রান্ত অন্যান্য কাজে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়না। নেই হয়রানি। নেই উৎকোচের অত্যাচার। উৎকোচ না দিলে ফাইল নড়ে না এমন চিত্র আর এই ভূমি অফিসে নেই। একসময় ভূমি অফিসের নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে সাধারণ মানুষ ভূমি অফিসে আসতে ভয় পেত। আর দালালদের উৎপাত ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু এখন দালালদের উৎপাতও নেই। সাধারণ মানুষ যেকোনো অভিযোগ দিতে সরাসরি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কল্যাণ চৌধুরীর কাছে আসছেন। নিজেদের অভাব অভিযোগের কথা নিজেরাই কর্মকর্তার কাছে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা পাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে অফিসে খোলা হয়েছে সেবা সহায়তা কেন্দ্র, সুবিন্যস্ত রেকর্ড রুম, রাজস্ব আদালত, তথ্য বাতায়ন, সেবা গ্রহীতাদের জন্য ফ্রি ওয়াই ফাই জোন, সিটিজোন চার্টার, ডিজিটাল সাইনবোর্ড, গণশুনানির মাধ্যমে জবাবদিহিতাসহ তৃণমূলে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ভূমি সেবা। এছাড়াও রেকর্ড রুম সুন্দরভাবে বছরওয়ারী সাজানো হয়েছে। উপজেলা ভূমি অফিসের চারপাশ সুসজ্জিতভাবে সুচারুরুপে সাজানো-গোছানো। সব মিলিয়ে পাল্টে গেছে শিবগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিস। গত ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসাবে কল্যাণ চৌধুরী যোগদানের পর থেকে ধীরে ধীরে বদলে দিয়েছেন অফিসের অবস্থানসহ বিভিন্ন সেবাসমূহ। শুরু হয় ভূমি অফিস বদলে দেয়ার গল্প। ‘ভূমি অফিসে হয়রানী রোধে, সচেতন করার দায়িত্ব নিব কাঁধে’ শীর্ষক স্লোগানে বদলে দেয়ার গল্প শুরু। তিনি প্রায় এক বছর ধরে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে অফিসের সব কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এতে করে উপজেলা ভূমি অফিসে বৃদ্ধি পেয়েছে সেবার মান। সেবা পেয়ে ভূক্তভোগী জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অফিসে সেবা গ্রহীতাদের জন্য রয়েছে জনসাধারণের জন্য বিশ্রামাগার ও খাবার পানির সুব্যবস্থা। ভূমি অফিসের পুরো ক্যাম্পাস রয়েছে সিসি ক্যামেরা পরিচালিত। দালালমুক্ত পরিবেশে নিশ্চিতভাবে বিভিন্ন স্থান থেকে সেবা নিতে আসছেন সাধারণ মানুষ। এরআগে অনেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) শিবগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে আসলেও তেমন কোন পরিবর্তন না হওয়ায় হতাশায় ভুগছিলেন উপজেলার ভূমি অফিসে আসা সাধারণ মানুষ। কিন্তু বর্তমানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কল্যাণ চৌধুরী যোগদানের পর অল্প সময়ের মধ্যেই পাল্টে গেছে উপজেলা ভূমি অফিসের চিত্র। সংশি¬ষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষসহ অন্যরা উপজেলা ভূমি অফিস পরিদর্শনে এসে ভূমি অফিসের সকল কার্যক্রম দেখে মুগ্ধ হয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কল্যাণ চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং উপজেলা ভূমি অফিসে বিশেষ বরাদ্দ দেন জেলা প্রশাসক। সহকারী কমিশনার (ভূমি) কল্যাণ চৌধুরী এ প্রতিবেদককে বলেন- উপজেলায় ভূমি নিয়ে ভূক্তভোগী মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করেছি। ভূমি অফিসের চারপাশের অবৈধভাবে গড়ে তোলা ফুটপাতদের উচ্ছেদ করায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়ে। ভূমি অফিস কেন্দ্রীক দালালরা আমার ওপর ক্ষুদ্ধ হলেও উপজেলার জনগণ অনেক খুশি। কোন কাজে কাউকে প্রয়োজনীয় সময়ের বাইরে এক সেকেন্ডও অপেক্ষা করতে হয়নি। কোন সেবা প্রত্যাশী এই ভূমি অফিসে ভোগান্তিতে পড়েনি, এটি ছিল আমার অঙ্গীকার। এছাড়া ভিপি লীজমানি রেকর্ড পরিমাণ আদায়সহ জনবান্ধব ভূমি অফিস তৈরিতে জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল হাসান মহোদয়ের নির্দেশনা মতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। রোববার সকালে ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে আসা বিনোদপুর ইউনিয়নের তেলকুপি গ্রামের মাজিরুদ্দিন বলেন- আমার কাছে মনে হচ্ছে এটি সম্পূর্ণ অলৌকিক ব্যাপার। ভূমি অফিসে সচরাচর যা দেখা যায় না তাই আমি দেখলাম। ভূমি অফিস নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগ অন্তহীন। ভূক্তভোগীদের কাছে ভূমি অফিসগুলো অনেকটাই অলিখিতভাবে ‘হয়রানীর কেন্দ্র’ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু নৈতিবাচকতার এই ধারার আমূল পরিবর্তন করতে নানা উদ্যোগ সম্পন্ন হয়েছে ভূমি অফিসের। সহকারী কমিশনার (ভূমি) কল্যাণ চৌধুরীর মত যদি ন্যায় পরায়ন কর্মকর্তা বাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত থাকত তাহলে সোনার বাংলা গড়তে বেশি সময় লাগত না বলে মনে করেন উপজেলার সচেতন মহল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।