পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঈদুল আজহার আর পাঁচদিনর বাকি। ঢাকা শহরের মানুষ এত আগে কোরবানির পশু না কিনলেও তারা পরিবারের ছোট-বড় সদস্যরা দলবেধে এ হাট ঐ হাট ঘুরে কোরবানীর পশু দেখে। দর দাম বুঝার চেষ্টা করে। রাজধানীর অস্থায়ী হাটগুলোতে গরু, মহিষ, উট, ছাগল ও ভেড়াসহ পর্যাপ্ত কোরবানীর পশু ইতোমধ্যে উঠে গেলেও বেচা কেনা এখনও জমে উঠেনি।
হাটগুলোতে এখন ক্রেতার চেয়েও দর্শনার্থী বেশি। বিক্রেতারা বলছেন, হাটে এখন যারা আসছে তারা শুধু দাম জেনেই চলে যাচ্ছে। কেউ কিনছে না। তবে আগামীদিন থেকে ক্রেতা পাওয়া যাবে। বেচা-কেনার সময় এখনও হয়নি। আগামী ২-১ দিনের মধ্যে হাট পুরোপুরি জমে উঠবে বলে প্রত্যাশা তাদের। সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বছিলা পশুর হাট কানায় কানায় ভরে উঠেছে। এরপরও ট্রাকে ট্রাকে গরু আসছে। শহীদ বুদ্ধিজীবি সড়কের দু’পাশের খালি জায়গায় শেড তৈরি করে অত্যন্ত চমৎকারভাবে পশু রাখার জায়গা করা হয়েছে।
এবার সড়কে পশু উঠানোর ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকায় হাট ইজারাদাররা সেটা মেইনটেইন করে চলার চেষ্টা করছেন। তবে শেষমেষ সেটা থাকবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কবরস্থান সংলগ্ন পশুর শেডে কথা হয় পাবনার বেড়ার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, কোরবানির উদ্দেশ্যে ১০টি গরু নিজ বাড়িতে লালন-পালন করেছি। ট্রাকে করে সে গরু ঢাকার হাটে নিয়ে এসেছি। এখনো একটিও বিক্রি হয়নি। আশাকরছি দু-একদিনের মধ্যে গরুগুলো বিক্রি করতে পারবো। তবে আগ্রহী গ্রাহকরা দামাদামি করছে। অনেক ক্রেতা দু-তিনবার করেও তার গরু দেখেছেন বলে জানান। এ ব্যবসায়ীর গরুগুলো ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকার মধ্যে দাম পেলেই বিক্রি করে দেবেন।
হাজারীবাগের কোরবানির হাট ঘুরে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। নিয়ম ভেঙে নির্ধারিত জায়গা ছাড়িয়ে রাস্তা দখল করে বসানো হয়েছে হাট। লেদার টেকনোলজি কলেজের পাশের রাস্তা (বটতলা) দখল করে প্রায় এক কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা জুড়ে রয়েছে এ হাট। হাজারীবাগ বাজার, ৫ নং বিডিয়ার গেট, প্রধান সড়কে পশুর হাট বসানো হয়েছে।
হাটের দায়িত্বে থাকা ইজারাদারের সহযোগী এস এম সানোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের এই রাস্তাতেই হাট বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। লেদার কলেজের পাশের রাস্তা ধরেই হাট শুরু।
আফতাবনগর পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের দুই পাশের ফাঁকা প্লটগুলোতে ইজারাদারের পক্ষ থেকে পশু বিক্রির উপযোগী করে সারি সারি বাঁশের খুঁটি বসানো হচ্ছে। ইতোমধ্যেই কিছু গরু নিয়ে চলে এসেছেন ব্যাপারীরা। গরু রাখা এবং ক্রেতাদের আসার পথও তৈরি করা হয়েছে। ক্রেতা না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন গরু ব্যবসায়ী ও তাদের সহযোগীরা।
হাজারীবাগ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন বেড়ীবাধ হাটেও প্রচুর গরু উঠেছে। তবে ওই হাটটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়নি। হাট ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত আব্দুল হাকিম ইনকিলাবকে বলেন, শেষ সময়ে হাটের ইজারা পাওয়া গেছে। এ কারণে ব্যবস্থাপনা করতে একটু সময় লাগছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে আজকের মধ্যে (সোমবার) পশুতে হাট কানায় কানায় ভরে উঠবে।
লালবাগ বেড়ীবাধ সংলগ্ন খালি জায়গার হাটে গিয়ে দেখা যায়, বেড়ীবাধ সড়কের একাংশ দখল করে গরু বাঁধা হয়েছে। ফলে যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মানিকগঞ্জের গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রায় ২৫ বছর ধরে আমি পশু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। প্রতিবারই রাজধানীর হাটগুলোতে পশু বিক্রি করি। এবারও এ হাটসহ আরো দুটি হাটে পশু নিয়ে এসেছি। এ হাটে ৩০টি ছোট-বড় মিলিয়ে গরু উঠিয়েছি। ভারতের গরু কম আসায় লাভ ভাল হবে বলে আশা করছি।
জানা যায়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) এলাকার সাতটি অস্থায়ী হাট আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে সোমবার। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ১৫টি হাটের আনুষ্ঠানিকভাবে হাট শুরু হবে আজ মঙ্গলবার থেকে। এর বাইরে গাবতলীর স্থায়ী হাটে কোরবানির পশুর জমজমাট পসরা বসেছে। আগামীকাল থেকে রাজধানীর কোরবানি পশুর হাটগুলোর বেচা-বিক্রি জমে উঠবে আশা করছে পশু ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা গেছে, কয়েক দিন ধরেই রাজধানীর এই হাটগুলোতে ট্রাক ভরে আসছে গরু, ছাগল ও মহিষ। গতকাল সোমবার শাহজাহানপুর মৈত্রী সংঘ মাঠের অস্থায়ী হাটে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রাকে করে গরু নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা। তবে দীর্ঘ যাত্রায় অনেক গরু দুর্বল হয়ে পড়ে। ট্রাক থেকে নামানোর সময় পাটাতনে শুয়ে পড়া একটি গরু অনেকক্ষণ টানাটানি করেও নামাতে পারছিলেন না কুষ্টিয়া থেকে আসা ব্যবসায়ী আবুল কাসেম ও তার সঙ্গীরা। এ ব্যবসায়ী জানান, যানজটের কারণে হাটে আসতে তিন দিন সময় লেগেছে। এসময় নিজেদের ও গরুর খাওয়াতে তাদের অনেক কষ্ট হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন হাটে গরু উঠেছে ৪০-৪৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত। ছোট আকৃতির গরু পাওয়া যাচ্ছে ৪০-৪৫ থেকে ৫০-৫৫ হাজার টাকায়। আর মাঝারি আকৃতির গরু পাওয়া যাচ্ছে ৬০-৬৫ থেকে ৮০-৮৫ হাজার টাকায়। বড় আকৃতির গরুর দাম ১ লাখ টাকার উপরে। ১ থেকে ৩ লাখ টাকার মধ্যে বেশি গরু পাওয়া যাচ্ছে। তবে এরচেয়ে বেশি দামেরও গরু রয়েছে। রাজধানীর মেরামিদয়া ও গাবতলী হাটে ৫ লাখ, ৬ লাখ, ৭ লাখ টাকার অনেকে গরুর দেখা মিলেছে। মেরাদিয়া হাটে একটি গরুর দাম ১২ লাখ টাকা হাকিয়েছেন একজন ব্যবসায়ী। তবে অন্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, আলোচনায় আসার জন্য ওই ব্যবসায়ী গরুটির দাম ১২ লাখ টাকা হাঁকিয়েছেন। সর্বোচ্চ ওই গরুটির দাম হবে সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা।
এদিকে ক্রেতারা যেন হাটে এসে নির্বিঘেœ পছন্দমতো পশু কিনতে পারেন, সেজন্য রাজধানীর সকল হাটে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। র্যাব-পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম সক্রিয় রয়েছে। পশু কেনাবেচার সময় যাতে টাকা পরিবহন ও জাল টাকা নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্যও কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।