বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ থেকে : নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নগরভবন থেকেই সিডিউল দেয়া হয়নি হাট ইজারায় অংশ নিতে আসা লোকদের। নাসিক মেয়র নিজের পছন্দের লোককে হাটের ইজারা পাইয়ে দিতে একটি পক্ষের কাছে সিডিউল বিক্রি করে অন্যদের সিডিউল কিনতে দেননি। এমনকি সিডিউল কিনতে আসা একজনকে নিজের রুমে ডেকে নিয়ে শাসিয়ে দিয়েছেন মেয়র। এসময় মেয়রের রুমে সাতখুন মামলার অন্যতম আসামী নুর হোসেনের সহযোগি সাদেকুর রহমান ও বন্ধ আদামজী জুট মিলের সাবেক শ্রমিক নেতা রিয়াজ উদ্দিন রেনু উপস্থিত ছিলেন। পরে ওই ব্যক্তি মেয়রের রুম থেকে বের হওয়ার সময় পেছন থেকে রেনু বলেন, এবার খেলা জমবে। শেষ পর্যন্ত সিডিউল কিনতে না পেরে ৪ ব্যক্তি সাংবাদিকদের কাছে আভিযোগ করে এসব কথা বলেন। তারা হলেন, সুমন, চঞ্চল, বিটু ও আলামিন। তারা জানান, শুধু মাত্র সন্ত্রাসী নজরুলের লোকজনের কাছেই সিডিউল বিক্রি করা হয়েছে।
তারা আরো জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও গাড়ি চোর সিন্ডিকেটের সদস্য নজরুল ইসলাম ওরফে পিচ্চি নজরুলকে হাটের ইজারা পাইয়ে দিতে মেয়রের রুমে সকাল থেকে অবস্থান নেন সাদেকুর রহমান ও রিয়াজ উদ্দিন রেনু। তাদের পরামর্শে মেয়র তড়িগড়ি করে মুহুর্তে এই দুটি হাটের ইজারা আহবান করেন।
সিডিউল কিনতে না পেরে সুমন সংবাদিকদের জানান, সিডিউল কেনার জন্য দুপুর দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত নগর ভবনে অপেক্ষা করেছি। শিমরাইল তাজ জুট মিল মাঠ হাটের সিডিউল কিনতে না পেরে তিন দফা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এফ এম এহতেশামুল হকের কাছে যাই। কিন্তু তিনি অসহায়ত্ব বোধ করে বলেন, আমি চাইলে তো আর হবে না। এক পর্যায়ে তিনি অফিস থেকে বেরিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যান। বিকাল ৫টা পর্যন্ত আর অফিসে ফিরে আসেননি। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেয়রের রুমে যাই। তিনি সিডিউল কিনতে আসার কারণ জানতে চান। এক পর্যায়ে শাসিয়ে বলেন, তোমার বাড়ি দেওভোগে। তুমি ওই এলাকার হাটের সিডিউল কিনতে এসেছো কেন? সিডিউল দেয়া যাবে না। পরে মেয়রের রুম থেকে বেরিয়ে আসার সময় পেছন থেকে রিয়াজ উদ্দিন রেনু বলেন, এবার খেলা জমবে। সন্ত্রাসী নজরুলের লোকজনকে নগর ভবনে অবস্থান করতে দেখেছি। এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার কিছু করার নাই। তাছাড়া আমি চাইলে তো আর সব হবে না। মেয়রের সঙ্গে কথা বলেন।
সিটি মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই হাটের সিডিউল দেয়া হবে না। এর বেশি কিছু তিনি বলতে রাজি হননি।
সিটি করপোরেশনের তথ্য মতে, এবার নাসিকের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় ১০টি ওয়ার্ডে একটি করে মোট ১০টি হাটের ইজারা সম্পন্ন হয়। এরমধ্যে ৪নং ওয়ার্ডে টাইগার রি-রোলিং মিলের মাঠের হাটে সর্বচ্চ দরদাতা হিসেবে ৭ লাখ টাকায় ইজারা পেয়েছে শফিকুল ইসলাম শফি। হাট ইজারাদার হাটে গরু আনতে শুরু করেছে। এমন অবস্থায় ২৪ আগস্ট আকষ্মিকভাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ৪নং ওয়ার্ডে নতুন করে আরো ২টি হাটের দরপত্র আহবান করে। একটি শিমরাইল তাজ জুট মিল মাঠে অন্যটি আটি গ্রামের আর এম আর ওয়েল মিলসের পশ্চিম পাশের মাঠে। আজ সোমবার ২৮আগস্ট বিকাল ২টায় দরপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় ও একই দিন বিকাল ৩টায় দরপত্র খোলার সময় নির্ধারন করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে রোববার বিকাল ৫টা পর্যন্ত সিডিউল বিক্রির সময় নির্ধারন করা হয়। সিটি করপোরেশনের দুটি আঞ্চলিক কার্যালয় সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল, নগর ভবন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের কার্যলয় থেকে দরপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়ার স্থান নির্ধারিত থাকলেও শুধু মাত্র নগর ভবন থেকে সিডিউল বিক্রি করা হয়। এদিকে
হাট ইজরা দিতে এত তড়িগড়ি নিয়ে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এবং ইজারা সম্পন্ন হওয়ার পর নতুন করে আবার ২টি হাটের দরপত্র আহবান করার ঘোষনায় চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ৪নং ওয়ার্ডবাসীর মধ্যে। তাজ জুট মিল মাঠের দুরুত্ব টাইগার রি-রোলিং মিল মাঠ থেকে মাত্র ৪শত গজের মধ্যে। এত কাছাকাছি হাট দেয়া হলে আইনশংলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার আশংকা করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ জেলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে সিটি করপোরেশনকে চিঠিও দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।