পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গত দুই মাসে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তিন কোটি টাকার বেশি জাল টাকা উদ্ধার।
মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে, গ্রেফতার হলেও জামিনে বের হয়ে আবারো জড়িত হচ্ছে ওই ব্যবসায়।
ঈদে কোরবানির পশুর হাটকে কেন্দ্র করে জাল টাকা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট আবারো স্বক্রিয়। সারাদেশে এখন কোরবানির পশু বেচা-কেনার ধুম পড়েছে। এতে কোটি কোটি টাকা লেন-দেন হচ্ছে। এটাকে মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করেই সারাদেশে সক্রিয় হয়ে ওঠেছে জাল টাকা তৈরি ও এর অবৈধ ব্যবসায়ী চক্রগুলো। তবে শুধু কোরবানির বাজারেই নয়, এই চক্র সারা বছরই এ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও মাঝে-মধ্যে ধরাও পড়ছে চক্রগুলোর সদস্যরা। তবে এর মূলহোতারা বরাবরই থেকে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। আর যারা ধরা পড়ে, তারাও আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেড়িয়ে এসে পুনরায় একই কাজ করছে। এর চেয়েও ভয়াবহ তথ্য হচ্ছে, জাল টাকা ব্যবসায়ী চক্রে একজন জড়ালে পর্যায়ক্রমে ওই পরিবারের অন্য সদস্যরাও এতে যুক্ত হয়ে পড়ছেন। গত দুই মাসে গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় তিন কোটি টাকার বেশি জালা টাকার নোট উদ্ধার করেছে। এসময়ের মধ্যে ৩৫ জনকে জাল টাকাসহ গ্রেফার করেছে। তারপরেও ওই চক্রের তৎপরতা থেমে নেই।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, সহজেই জামিন প্রাপ্তির সুযোগে দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠছে জাল টাকা তৈরি ও এর বাজারজাতকারী চক্রগুলো। শুধু তাই নয়, পারিবারিকভাবেও এর সম্পৃক্ততা বাড়ছে। এ চক্রের সঙ্গে জড়িতরা ধরা পড়ার পর সহজেই জামিনে বেরিয়ে আসে। এতে জাল টাকার অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করা যাচ্ছে না। বরং দিনের পর দিন বেপরোয়া গতিতে বাড়ছে জাল টাকার ব্যবসা। সেই সাথে এই চক্রে জড়িতরা বেশিরভাগই পারিবারিকভাবে এ অবৈধ কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
পুলিশ জানায়,কামরাঙ্গীরচর,লালবাগ,চকবাজার,মিরপুর,নিউমার্কেট,বাড্ডা,সবুজবাগ,যাত্রাবাড়ীসহ
জনবহুল এলাকায় খুচরা জাল টাকার নোটের ব্যবসা চলছে। ডিবি পুলিশ আরো জানায়, ইতিপূর্বে গ্রেফতার জাল টাকার কারবারি আবদুর রহিম পুলিশকে জানিয়েছিলেন, ঢাকার বাবুবাজার থেকে তিনি টিস্যু কাগজ সংগ্রহ করেন। টাকার ভেতরের নিরাপত্তা সূতার ফয়েল চকবাজার থেকে, স্ক্রিন, বোর্ড ও রেডোসার কেমিক্যাল মালিটোলা ও আইপিআই প্রিন্টার কালি পল্টন থেকে সংগ্রহ করতেন।
রাজধানীর নয়া বাজারের টিসু পেপার ব্যবসায়ী আবদুর রহিম ও কামরাঙ্গীরচরের আবদুল মালেক ওরফে মালেক মাস্টার দেশের বড় জাল টাকার কারিগর। এদের রয়েছে বিশাল নেটওয়ার্ক ও জাল টাকা বাজারজাত করার শক্তিশালি সিন্ডিকেট । জাল টাকার কারবারি জনৈক মামুনের কাছ থেকে ৯০ দশকে জাল নোট তৈরি করা শেখেন মালেক মাস্টার। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে প্রায় দেড় কোটি জাল টাকার নোট, জাল টাকা তৈরির মেশিন ও সরঞ্জাম এবং কয়েকজন কারিগরসহ কয়েক বছর আগে গ্রেফতার হন মালেক।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, এ চক্রের মুল হোতাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। জাল টাকার নোটের কারিগর মালেক মাস্টার কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করেছে। সে মুখে দাড়ি রেখে এবং এলাকা পরিবর্তন করে পুনরায় ব্যবসা শুরু করেছে।
গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলছে, জাল টাকা ব্যবসায়ী একজন যখন পুলিশের হাতে ধরা পড়ে কারাগারে যায়, তখন ওই পরিবারের অন্য সদস্যরা এ ব্যবসায় যুক্ত হয়ে পড়ে। যদি কারো স্বামী পুলিশের হাতে ধরা পড়ে তাহলে তার স্ত্রী বা ভাই অথবা বোন যুক্ত হয়ে যাচ্ছে জাল টাকা ব্যবসায়। আবার পিতা ধরা পড়লে তার সন্তনরা ক্রমান্বয়ে জড়িয়ে পড়ছে এ কাজে। এতে জাল টাকার ব্যবসা বন্ধ হচ্ছে না।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বলছে, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহাকে সামনে রেখেই প্রতি বছরের মতো এবারো সক্রিয় হয়ে ওঠেছে জাল টাকা তৈরির চক্রগুলো। এদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহায় পশুর হাটকে কেন্দ্র করে সক্রিয় ওই চক্রের তৎপরতা বেড়েছে। তারা পশুর হাটগুলোতেই জাল টাকা ছড়ানোর টার্গেট নিয়ে স্বক্রিয় রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রচার জাল টাকাসহ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে ডিবি পুলিশ। এছাড়া র্যাব, বিজিবি, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যপারে তৎপর রয়েছেন।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পশুর হাটগুলোতে জাল টাকা ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে চক্রের সদস্যরা। এমন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ধরতে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও। এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযানে গত ২১ আগস্ট রাত থেকে ২২ আগস্ট সকাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্নস্থান থেকে ৭ জনকে েেগ্রফতার করা হয়েছে।
এর আগে, ১৯ জুন রাতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার পৌর এলাকার রায়পাড়া সদরদী এলাকার একটি বাসা থেকে জাল টাকা তৈরির সময় হাতনাতে গ্রেফতার করা হয় এক দম্পতিসহ চারজনকে। তারা হলেন- সালাউদ্দিন রাসেল (৩০), তার স্ত্রী ফাতেমা (২৫), সাইদুল সরদার আকাশ (১৯) ও জুয়েল হাওলাদার (২৯)। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৩ লাখ ৫৫ হাজার জাল টাকাসহ জাল টাকা তৈরির বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করে।
নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা থেকে গত ১৪ মে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ৪২ হাজার জাল টাকার নোটসহ চার ব্যবসায়ীকে েেগ্রফতার করে। ঈদকে সামনে রেখে তারা জাল টাকা তৈরি করছিল বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে তারা।
গত বছরের ২৮ জুন রাজধানীর রামপুরা বনশ্রী এলাকার কে বøকের ১৬ নম্বর রোডের একটি বাড়িতে র্যাব অভিযান চালিয়ে ১ কোটি চার লাখ টাকার জাল নোট ও দুই নারীসহ পাঁচজনকে আটক করে।
পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে বলেছেন,পশুরহাটে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, পশুর হাটে জাল নোট শনাক্তকরণ মেশিন স্থাপন এবং যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা, কোরবানির পশু পরিবহনে ব্যবহৃত নৌকা ও ট্রাকে চাঁদাবাজি রোধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, জাল টাকার ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্তক রয়েছে। জাল টাকার প্রতিরোধে গোয়েন্দা পুলিশের একটি পৃথক টিম রয়েছে। ওই টিম জাল টাকা প্রস্ততকারী ও সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম চালাচ্ছে ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।