বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কোরবানির পশু জবাইয়ের পর রক্ত, নাড়িভুঁড়িসহ বর্জ্যরে সঠিক ব্যবস্থাপনা ও জনসচেতনার অভাবে পরিবেশ বিপর্যয়সহ জনস্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। পরিবেশসম্মতভাবে কোরবানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা হলে পরিবেশ বিপর্যয় রোধ ও পশুর উচ্ছিষ্ট সম্পদে পরিণত করা সম্ভব। এজন্য মক্কা-মদিনার আদলে কোরবানি ব্যবস্থাপনা চালু করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
পবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,
গতকাল শনিবার সকালে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এ প্রস্তাব করেন। পবা কার্যালয়ে ‘মক্কা-মদিনার আদলে কোরবানি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক এ বৈঠক হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুস সোবহান।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী, মডার্ন ক্লাবের সভাপতি আবুল হাসানাত, পবার সহ-সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, জাহাঙ্গীর যুবরাজ, নিশাত মাহমুদ, মোহাম্মদ সেলিম, সুবন্ধন সমাজ কল্যাণ সংগঠনের সভাপতি হাবিবুর রহমান, পবার সদস্য সৈয়দ সাগিরুজ্জামান শাকীক, আবুল হাসানাত চুন্না, অমূল্য কুমার বৈদ্য, মোহাম্মদ মাসুম, ইয়ুথ সানের সভাপতি মাকিবুল হাসান বাপ্পি, দেবীদাস ঘাট সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ মুসা প্রমুখ।
বৈঠকে আবু নাসের খান বলেন, পবিত্র মক্কা নগরীর আদলে কোরবানির কতগুলো বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন কোরবানির জন্য নির্ধারিত স্থান থাকা ও জায়গাটি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া। কোরবানির পশুটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং এটি রোগমুক্ত ও কোরবানির উপযুক্ত কিনা পরীক্ষা করা। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ জনশক্তি দিয়ে পরিপূর্ণ ধর্মীয় নির্দেশনা অনুযায়ী কোরবানি করা। তিনি আরও বলেন, এ ব্যবস্থাপনার ফলে দুর্গন্ধ ছড়ানো, রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটা, পশুর চামড়া বিনষ্ট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়। কোরবানির পশুর চামড়া মানসম্মত হওয়ায় দক্ষ হাতে চামড়া ছাড়ানো হলে অযথা আর্থিক ক্ষতিও এড়ানো যায়। স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে কোরবানি হলে পশুর গোশত ময়লা ও জীবাণুমুক্ত হবে এবং পশুর রক্ত, গোবর, নাড়িভুঁড়ি, হাড় ও অন্যান্য উচ্ছিষ্টাংশ সার, বোতাম, চিরুনি, মৎস্য খাদ্য, পশু খাদ্যসহ বেশ কিছু শিল্পে ব্যবহার করা যাবে।
প্রকৌশলী আবদুস সোবহান বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসেব অনুযায়ী সারা বছর দেশে প্রায় দুই কোটি ৩২ লাখ গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া জবাই করা হয়। এর প্রায় ৫০ ভাগই জবাই করা হয় কোরবানির ঈদের সময়। সে হিসেবে কোরবানির ঈদের সময় প্রায় এক কোটি ১৫ লাখ পশু জবাই হয়। প্রাণিসম্পদ অধিদফতর ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, এবছর দেশে কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা এক কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার। যা গত বছর ছিল এক কোটি ১৪ লাখ।
এছাড়া, ঢাকায় পশুর হাট সৃষ্ট যানজট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করারও তাগিদ দিয়েছেন বক্তারা। একইসঙ্গে, রাজধানীর অস্থায়ী ২২টি পশুর হাটের আবর্জনা পরিষ্কার ও গর্ত ভরাটসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে ঈদের এক সপ্তাহের মধ্যে আগের অবস্থায় ফিরিযে আনা।
বৈঠকে বেশ কিছু সুপারিশও তোলা হয়। এর মধ্যে রয়েছে– যত্রতত্র পশু কোরবানি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ টিমের মাধ্যমে ঈদ ও ঈদের পরদিন জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করা, পরপর তিন বছর এই প্রক্রিয়া চলার পর চতুর্থ বছর থেকে শাস্তির বিধানসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা। প্রতিটি সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে জনসংখ্যা অনুপাতে ইসলাম সম্মতভাবে পশু জবাইয়ের জন্য প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করা। পশুর হাড়, শিং, অন্ডকোষ, নাড়িভুঁড়ি, মূত্রথলি, চবি ইত্যাদি সংগ্রহে ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা এবং আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া। পশুর হাটের গোবর, উচ্ছিষ্ট গো-খাদ্য সার্বক্ষণিক সংগ্রহ এবং কোরবানির পশুর গোবর ও পাকস্থলীর অহজমকৃত বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে রাখা এবং সংগৃহীত বর্জ্য জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করা। পশু জবাইয়ের প্রতিটি নির্ধারিত স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কসাই ও যানবাহনের ব্যবস্থা রাখা। ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে মোটাতাজা করা বা রোগাক্রান্ত, আমদানি করা কোরবানির পশু শনাক্তকরণে প্রতিটি হাটে মেডিক্যাল টিম রাখা ইত্যাদি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।